‘এটি ট্র্যাজেডির গল্প। আমার বাবা-মা দুজনেই আমাকে একজন আইএএস অফিসার হিসাবে দেখার স্বপ্ন বুনেছিলেন, কিন্তু তাঁরা এই সাফল্য ভাগ করে নিতে এখানে আসতে পারেননি। আমি আমার বাবাকে হারিয়েছিলাম যখন আমি ক্লাস ১১-এ পড়ি। তিনিই আমার মধ্যে সিভিল সার্ভিসের বীজ বপন করেছিলেন। আর আমার মা, তিনি আমার পরীক্ষার প্রস্তুতির সময়ই স্তন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন এবং পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার এক মাস আগেই মারা গিয়েছিলেন। তিনি আমাকে যা দিয়ে গিয়েছেন, তার তুল♓নায় আমার প্রস্তুতির প্রচেষ্টা তুচ্ছ বলে মনে হয়েছিল। তিনি সবসময় আমার জয়ের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে দিয়েছেন। আজ তাঁর বিজয়ের দিন, এবং আমি এই দিনটিকে উদযাপন করছি।’
এটি ২৪ বছর বয়সী অনিমেষ প্রধানের গল্প, যিনি ২০২৩ সালের ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিসেসে দ্🅷বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন, যিনি কোনও কোচিং ছাড়াই মাত্র এক বছরের কঠোর পরিশ্রমে প্রথম প্রচেষ্টায় আজ আকাশচুম্বী সাফল্য পেয়েছেন। অনিমেষ এ নিয়ে যতটা খুশি, তার চেয়ে বেশি আফসোস হল সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর মা ছেলের জীবনের এই গর্বের মুহূর্তটি দেখতে পারেননি। যার জন্য তিনি এই সাফল্য অর্জন করতে চেয়েছিলেন। অনিমেষ নিজের সাফল্যের রাস্তায় লালন-পালন, স্কুল, কলেজ, সহকর্মী, পরিবারের মানুষকেও কৃতিত্ব দিয়েছেন।
নিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে অনিমেষ বলেছেন, 'আমি বরাবরই খুব বাধ্য এবং অধ্যয়নশীল ছেলে। স্কুল-কলেজে বেশ জনপ্রিয় ছিলাম। আমি পড়াশোনার বাইরেও অন্যান্য কাজে জড়িত ছিলাম। আমি কলেজে সংসদীয় বিতর্ক এবং ছাত্র সাংবাদিকতায় অংশ নিয়েছি।' তিনি আরও বলেছেন, 𓃲'আমি প্রবন্ধ লিখতে এবং ছবি আঁকা পছন্দ করি। নাচ এবং রান্না আমার অন্যান্য শখের ম♏ধ্যে কয়েকটি। বিরক্ত হলে, আমি টিভি সিরিজ দেখি বা ভারতীয় সংসদের বিতর্ক দেখি। আমি বই পড়ার অভ্যাস করার চেষ্টা করছি। এখনও পর্যন্ত, আমি নন-ফিকশন বেশি পছন্দ করি, কিন্তু আমি সেলফ-হেলপ বইগুলির প্রতি আগ্রহী নই, এগুলি একটু বেশি প্রচারমূলক বলে মনে হয়।'
ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন গত মাসে সিভিল সার্ভিস ২০২৩ সালের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করার পর থেকে ওড়িশার ছেলে অনিমেশ প্রধানের জীবন আমূল বদলে গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে অনিম🦹েষ হিন্দুস্তান টাইমস ডিজিটালকে বলেছেন, 'এটা প্রতিদিন অবাস্তব বলে মনে হয়। জীবন ১৮০ ডিগ্রি বদলে গিয়েছে। আমি যে ভালবাসা এবং প্রশংসা পাচ্ছি তাতে আমি কৃতজ্ঞতায় পূর্ণ। মানুষ আমার🥀 দিকে তাকাতে শুরু করেছেন, যা খুব ভালো লাগছে, কিন্তু আমি এটাও স্বীকার করি যে আমার কাঁধে আরও অনেক বেশি দায়িত্ব রয়েছে।'
- কোন দায়িত্বের কথা বলেছেন অনিমেষ
এর আগে ২০২১ সালে, তিনি এনআইটি রাউরকেলা থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে বিটেক সম্পন্ন করেছিলেন এবং এরপরেই ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনে চাকরি পেয়ে গিয়েছিলেন। তিনি সেকেন্ড টপার হওয়ার পরেও ইন্ডিয়ান অয়েল থেকে পদত্যাগ করেননি। এখনও নিয়মিত অফিসে যাচ্ছেন, তাই তাঁর সারা দিনের খুব ব্যস্ততায় কাটে। এরই ফাঁকে তিনি যতটা পারেন, ইউপিএসসির প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এমন মানুষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন এবং নিজের সাফল্যের সোর্সগুলিও ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন, যাতে অন্যদেরও সুবিধা হয়। কেরিয়ারে তিনি এখানেই থেমে থাকতে চান না। অনিমেষেরཧ দাবি, 'আমি লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ন্যাশনাল একাডেমি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এলবিএসএনএএ), মুসৌরিতে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য পরিকল্পনা করছি।
সিভিল সার্ভিস পাস করার জন্য ঠিক কীভাবে এগোতে হবে
অনিমেষ বলেছেন, 'সিভিল সার্ভিসে সুযোগ পাওয়ার রাস্তাটি কঠিন এবং আপনি এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও কঠিন হয়ে যায়, তবে যদি আপনার কারণ এবং উদ্দেশ্য দৃঢ় এবং সৎ হয়, তবে আপনার সাফল্যের সম্ভাবনা অনেক বেশি। ভবিষ্যত প্রার্থীদের প্রতি পরামর্শ দিয়ে অনিমেষ প্রধান আরও বলেছেন যে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা অত্যন্ত বিষয়ভিত্তিক এবং এতে অনেক ভাগ্য জড়িত। অতএব, 🤪শক্তি, সম্পদ এবং সময়কে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখায় ফোকাস করা উচিত, যা সম্পূর্ণরূপে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই সম্ভব। অনিমেষের 𓆉স্পষ্ট বার্তা, 'আপনি এই যাত্রায় সাফল্যের চেয়ে বেশি ব্যর্থতা দেখতে পাবেন এবং এক্ষেত্রে কঠোর পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই।