মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও টিম ইন্ডিয়ার ক্যাপ্টেন হিসেবে রোহিত শর্মার ব্র্য়ান্ড ভ্যালু এই মুহূর্তে আকাশছোঁয়া। তাঁর উপার্জন ও সম্পত্তির পরিমাণ স্বাভাবিকভাবেই নিতান্ত কম নয়। যদিও হিটম্যান এখনও ভোলেননি পায়ের নীচের মাটিটাকে। কোন আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি থেকে উঠে এসেছেন তিনি, তা আজও মনে আছে ভারত অধিনায়কের।
বিশ্বকাপের আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সামনে খোলামেলাভাবে নিজের অতীতকে তুলে ধরেন রোহিত। তিনি জানান, একদা ছোট্ট একটা ঘুপচি ঘরের মধ্যে কীভাবে ১০-১১ জন মানুষ ঠাসাঠাসি করে ঘুমোতেন।
আসলে রোহিতের পরিবার আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ছিল না মোটেও। রোহিত ছোটবেলা থেকেই দাদু-ঠাকুমার সঙ্গে থাকতেন। সেখানে থাকতেন তাঁর কাকা-কাকিমারাও। উপার্জন কম হওয়ায় দাদুর নির্দেশেই রোহিতকে বোরিভালিতে রেখে গিয়েছিলেন তাঁর বাবা। ছোট ভাইকে নিয়ে রোহিতের বাবা-মা থাকতেন দম্বিভালিতে। তখন রোহিতের বয়স নিতান্তই কম।
পুরনো দিনের কথা তুলে ধরে রোহিত বলেন, ‘এইটুকু একটা ঘর, যেখানে আমাদের ১০-১১ জনকে ঘুমোতে হতো। দাদু বিছানায় ঘুমোতেন। আমি, কাকা-কাকিমারা, ঠাকুমা, সবাই মেঝেতে শুতাম।’
রোহিত জানান যে, তিনি নিজে এখন পিতা হয়েছেন। তাই এখন উপলব্ধি করতে পারেন তাঁকে দাদু-ঠাকুমার কাছে রেখে যাওয়া তাঁর বাবা-মায়ের পক্ষে কতটা কঠিন ছিল। নিতান্ত বাধ্য হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হওয়ায় কত কষ্ঠ সহ্য করতে হয়েছে তাঁর পিতা-মাতাকে, সেটা এখন বুঝতে পারেন হিটম্যান। রোহিত এটাও জানান যে, তাঁর দাদুই পরিবারের কর্তা ছিলেন। তাঁর কথা মতোই পরিবারের সবাই কাজ করতেন। তাঁর দাদুর মনে হয়েছিল যে, দু'টি বাচ্ছাকে নিয়ে সংসার চালানো কঠিন হবে রোহিতের পিতার।
রোহিত নিজের ছোটবেলার একটি মজাদার অভ্যাসের কথাও অকপটে জানিয়েছেন। হিটম্যান বলেন, ‘আমার একটা অভ্যাস ছিল। কারও গায়ে অথবা কোনও কিছুর সঙ্গে আমার পা ঠেকে না থাকলে ঘুম হতো না। তাই আমি দেওয়ালের দিকে শুতাম, যাতে দেওয়ালের সঙ্গে আমার পা ঠেকে থাকে।’
উল্লেখ্য, এর আগে টি-২০ বিশ্বকাপে ক্যাপ্টেন্সি করলেও এই প্রথম ওয়ান ডে বিশ্বকাপে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেবেন রোহিত শর্মা। ২০১১ সালে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ হাতছাড়া হয় রোহিতের। সুতরাং, ঘরের মাঠে এটাই তাঁর প্রথম ওয়ান ডে বিশ্বকাপ। স্বাভাবিকভাবেই ওয়ান ডে বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেতে মরিয়া হিটম্যান। তিনি অবশ্য টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন।