দুয়ারে ভোট। সেই ভোট নিজেদের পক্ষে আনতে চা শ্রমিকদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। লক্ষ্য একটাই উত্তরবঙ্গে বিপুল সংখ্যক চা শ্রমিকদের ভোটকে নিজেদের অনুকূলে আনা। আসলে উত্তরবঙ্গ মানেই বিস্তীর্ণ চা বলয়।দুটি পাতা একটি কুঁড়ির সেই চিরাচরিত কাহিনী।এই কাহিনীর পাতায় শুধু মন ভোলানো চা বাগান নয়, আছে অনেক বঞ্চনা, অনেক যন্ত্রনার কথাও। একটা সময় এই চা বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে বামেদের আধিপত্য ছিল যথেষ্ট।এরপর রাজ্যে পালা বদলের পরে ধাপে ধারে চা বলয়ে সংগঠন বৃদ্ধির চেষ্টা করে তৃণমূল। কিন্ত গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল কার্যত সব হিসাব ওলটপালট করে দেয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরের চা শ্রমিকদের একটা বড় অংশ বিজেপির পক্ষেই রায় দিয়েছিলেন। এবার বিধানসভা নির্বাচনে অগ্নিপরীক্ষার মুখোমুখি তৃণমূল ও বিজেপি যুযুধান দুই শিবির।এবার চা শ্রমিকদের একটা বড় অংশ কাদের পাশে থাকবেন? সেটা নিশ্চিত করতেই চা শ্রমিকদের মন জয়ে কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়েছে সব পক্ষই।উত্তরবঙ্গের প্রায় ৩৭০টি চা বাগান। বাগানের প্রায় ৫০ শতাংশ শ্রমিকই মহিলা।সেই ভোটকে এককাট্টা করা রাজনৈতিক দলগুলির কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এবারের রাজ্য বাজেটে রাজ্য সরকার সেই চা শ্রমিকদের জন্য একাধিক প্রকল্পে📖র কথা ঘোষণা করে।ঘোষণা করা হয় চা সুন্দরী প্রকল্প। গৃহহীন চা শ্রমিকদের জন্য বিশেষ প্রকল্প। প্রায় তিন লক্ষাধিক চা শ্রমিককে এই প্রকল্পের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চা শ্রমিকদের জন্য। কিন্ত এতে কি মন ভিজবে চা শ্রমিকদের?
অন্যদিকে চা শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য প্রায় হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকারও।মঙ্গলবার কোচবিহারের সভাতে এসে সেকথা আরও একবার মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে শুধু এখানেই থেমে থাকেনি গেরুয়া শিবির। ‘এবার সোনার বাংলা এবার বিজেপি’ শীর্ষক একটি লিফলেটও উত্তরবঙ্গ জুড়ে নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে বিলি করছে বিজেপি। সেখানে ‘চা চাষিদের লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতি’র একটি পর্ব রাখা হয়েছে। সেখানে চা শ্রমিকদের জন্য একেবারে নির্দিষ্ট একাধিক প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দীর্ঘদি⛄নের দাবিকেও অত্যন্ত মান্যতা দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে এই লিফলেটে।পাশাপাশি উত্তরের চা বলয়ে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে সঙ্ঘও তাদের মতো করে চা শ্রমিকদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করেছে।তবে বিনয় কুজুর, পরেশ ওঁরাওদের মতো চা শ্রমিকদের দাবি, আসলে ভোটের মুখে প্রতিবারের মতো স্বপ্ন দেখাচ্ছে সকলেই। কিন্ত বাস্তবে কি মজুরি বাড়বে?বাস্তবে কি চা সুন্দরী প্রকল্পের সুবিধা পাবেন বঞ্চিত চা শ্রমিকরা? বাস্তবে কি বন্ধ বাগান খুলবে আবার?