সোশ্যাল মিডিয়ায় ভীষণ অ্যাক্টিভ অভিনেত্রী শ্রুতি দাস, মানে 'দেশের মাটি'র নোয়া। টেলিপাড়ার অন্যতম নবাগতা অভিনেত্রী শ্রুতি। ত্রিনয়নীর পর দেশের মাটি ধারাবাহিকে কাজ করছে সে, কিন্তু নিজের সম্পর্কের ব্যাপারে বরাবরই খোলামেলা শ্রুতি। পরিচালক-প্রযোজক স্বর্নেন্দু সমাদ্দারের সঙ্গে নিজের প্রেম সম্পর্ক নিয়ে কোনওদিনই রাখঢাক রাখেননি শ্রুতি। সোমবার ফেসবুকের দেওয়ালে স্বর্নেন্দুর সঙ্গে নিজের সম্পর্কের বহু অজানা গল্প শেয়ার করলেন শ্রুতি। অভিনেত্রী জানালেন কেমনভাবে শুরুর দ🐈িকে স্বর্নেন্দুর সঙ্গে মেয়ের প্রেম সম্পর্ক একেবারেই মেনে নেননি শ্রুতির ꦐমা, বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেয়ের সঙ্গে কথাবার্তা। কলকাতা ছেড়ে কাটোয়ায় ফিরে গিয়েছিলেন।
শ্রুতি লেখেন পরিচালককে দেখে প্রথমেই মা (স্বরূপা দাস) সচেতন করেছিলেন, 'প্রেমে পড়ে যেও না যেন'। মায়ের কথা শুরুতে হেলায় উড়িয়ে দিলেও মায়ের সেই ভবিষ্যতবাণী মাস কয়েকের মধ্যেই সত্যি হয়েছিল। শ্রুতি দীর্ঘ পোস্টে লিখেছেন, 'সালটা দু'হাজার উনিশ শুরুর দিকটায়, ত্রিনয়নীর সেটে মায়ের প্রথম পা রাখা। ডিরেক্টর প্যাক-আপ বলার পর ওঁর সাথে আলাপ করিয়ে বলেছিলাম, ‘স্বর্ণদা,আমার মা’ লাজুক হাসি হেসে ঘাড় নেড়ে ‘ভালꩵো আছেন কাকিমা?’ বলে উনি গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে যাওয়ার পর মা বলেছিল, ‘তোর ড🐭িরেক্টর কিন্তু বেশ লম্বা,হ্যান্ডসাম,পারসোনালিটি-টাও বেশ। দেখিস প্রেমে পড়ে যাস না’। কথাটা তুচ্ছ করে ‘ধুর!’ বলে এড়িয়ে গেছিলাম। দু'হাজার উনিশের জুলাই বা অগস্ট বোধ করি, বাবার মারফত মা জানতে পারে সেই লম্বা ডিরেক্টর সাহেবের প্রেমে তার মেয়ে আদতেই পরে গেছে এবং উঠতে পারছে না। (বাবাকেই প্রথম জানিয়েছিলাম আমাদের সম্পর্কের কথা কারন মা প্রিয় হলেও মাকেই আমি বেশি ভয় পেতাম)। সেপ্টেম্বরে আমার জন্মদিনের পর ওই যে মা ফিরে গেল কাটোয়া,তিন মাস মুখ দেখেনি আমার'।
শ্রুতির অসুস্থতার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয় মা-মেয়ের সম্পর্ক। অভিনেত্রী জানান, ‘ত্রিনয়নী শ্যুটিং চলছে আমার,ও করছিল বাঘবন্দি খেলা,সুন্দরবন আউটডোরে। এখানে আমি শ্যুটিংফ্লোরে অসুস্থ হওয়ꦛায় কাছের কয়েকজন আমায় নিকটবর্তী হসপিটালে অ্যাডমিট করেন এবং এই খবর ওর কাছে যায়। সেদিন আমায় না জিজ্ঞাসা করেই ও শ্রুতির মা কে ফোন করে বলেছিল,সমস্যা তো আমায় নিয়ে,মেয়েকে কেন কষ্ট দিচ্ছেন? ও আপনাকে ছাড়া ভাল🌠ো নেই, ফিরে আসুন। পরে জেনেছিলাম, ‘হমম.... পরে কথা বলছি’ বলে মা সেই যে ফোন কেটেছিল আর ফোন করেনি। যদিও মা বাবা ফিরে এসেছিল'।
এরপরেও কিন্তু স্বাভাবিক হয়নি সম্পর্ক। তখনও স্বর্ণেন্দু-শ্রুতির সম্পর্কে শিলমোহর ছিল না মায়ের। নোয়ার কথায়, ‘মায়ের এই কাটোয়া-কলকাতা আসা যাওয়া,রোজ অশান্তি,ইন্ডাস্ট্রি ওতে প্রথমে এসেই অচেনা একজনের সাথে সম্পর্ক এই সেই নিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছিলাম। এমতাবস্থায় বাবা ওকে পরখ করে দেখে দায়িত্ব নিয়েই একপ্রকার বলে বসল ‘আমার উপর ভরসা রাখ,এই মা-ই একদি𒅌ন স্বর্ণ স্বর্ণ করবে’। ওদিকে ও (স্বর্নেন্দু) বলত ‘কাউকে কিচ্ছু করতে হবে না,কাকিমার কাছে আমি খুব তাড়াতাড়ি খুব আপন হয়ে যাব,ভরসা রাখো’।
শ্রুতি আরও লিখেছেন, 'সালটা দু'হাজার কুড়ি, সেপ্টেম্বর মাস। মায়ের ফোনে ওর নাম থাকত ‘এস’ নামে, ওর ফোনে মায়ের নাম থাকত ‘শ্রুতির মা’ নামে। লুকিয়ে লুকিয়ে চলত একে অপরের হোয়াটস্যাপের স্টেটাস দেখা। হঠাত দেখলাম মা স্বর্ণ নামজপ করছে দিনরাত, ও কি খেতে বেশি ভালোবাসে, কি জামা পছন্দ, কোন বেড়াতে যাওয়ার জায়গা প্রিয় এই সেই…আসতে আসতে বাড়তে থাকল একে অপরের ইন্ডিরেক্টলি খোঁজ নেওয়া, দেখা সাক্ষাত হওয়া, ওর ডিরেকশনের শো দেখে মেসেজ করা। কখন যেন সেই খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেওয়া অভিমানী মা আমার হয়ে উঠল পরম প্রিয় শাশুড়ি।…….. আজ এত কথা বলার একটাই কারন, আমরা শিল্পী….সাজানো গোছানো ফ্যামিলি ফটোতে সবাইকে হাসিমুখে দেখিয়ে বোঝাতে চাই,আমরা ভালো আছি আপনিও ভালো থাকুন। কিন্তু এই ভালো থাকার পিছনের দুর্গম পথের সাক্ষী কেউ ছিল না (বাড়ির কয়েকজন আর কাছের দু একজন বন্ধু ছাড়া)। আজ দুজন'কে বন্ধুর মতো মিশতে দেখে অজান্তেই চোখে আমার জল আসে কারন এই লড়াই একান্ত আমার একার লড়াই। আর এই সাফল্য একান্ত আমার ব🔯্যক্তিগত। তবে আমার বাবꦍা আর কাছের কয়েকজন বন্ধুর অবদান অনস্বীকার্য। আজ শুধু শাশুড়ি-জামাই এর দিন। শুধু একটাই আফসোস ,দুজনেই একে অপর কে এত লজ্জা পায় মাঝে মাঝে, মনে হয় ১৮০০ শতাব্দীর শাশুড়ি-জামাই'।
এরপর শ্রুতির সচেতনবাণী, আসন্ন জামাইষষ্ঠীতে ফোনের কন্ট্যাক্ট লিস্টে যদি নাম পরিবর্তন না হয় তবে আর মিশতে দেবেন না শাশুড়ি-জামাইকে। এইভাবেই যেন শাশুড়ি-জামাইয়ের বন্ধুত্বের সম্প๊র্ক অটুট থাকে প্রার্থনা করেছেন শ্রুতি।