অনীক দত্তের পরবর্তী ছবি ‘অপরাজিত’-র মুখ্য অভিনেতা জিতু কামালের ফার্স্ট লুক সামনে আসতেই হইচই সোশ্যাল মিডিয়ায়। নড়েচড়ে বসেছে টলিপাড়াও। সত্যজিত রায়ের কালজয়ী ছবি ‘পথের পাঁচালী’ তৈরির নানান অজানা কাহিনি উঠে আসবে এই ছবিতে। বলাই বাহুল্য, সত্যজিতের ভূমিকায় দেখা যাবে অভিনেতা জিতু কমলকে এবং বিজয়া রায়ের ছায়ায় তৈরি বিমলার ভূমিকায় থাকবেন সায়নী ঘোষ। যদিও এই ছবিতে জিতু কামাল অভিনীত চরিত্রের নাম অপরাজিত রায়। সত্যজিতের তৈরি 'অ🃏পু ট্রিলজি'-র দ্বিতীয় ছবি 'অপরাজিত'-র সঙ্গে ফিরদৌসুল হাসান-এর প্রযোজনায় এই ছবির নাম সমনামী হলেও বিষয় যে সম্পূর্ণ আলাদা সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আর এই ছবিতে অপরাজিত জীবনের সেই 'প্রথম ছবি'-র নাম হতে চলেছে 'পথের পদাবলী'।
সাদা কালো ওই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই হু হু করে ভাইরাল হওয়া শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রথম ঝলকেই মনে হতে বাধ্য এ যেন খোদ যুবক সত্যজিত। সেই অতিপরিচিত ব্যাকব্রাশ কায়দায় আঁচড়ানো চুল, ভাঙা লম্বাটে চোয়াল, চিন্তামিশ্রিত দৃষ্টির পাশাপাশি নজর এড়ায়নি থুতনির একপাশে উঁকি মারা আঁচিলও। বলাই বাহুল্য সিনেমাপ্রেমী মানুষ থেকে শুরু করে চুলচেরা বিশ্লেষণী সত্যজিৎ-ভক্তরা পর্যন্ত জিতুর এই লুক দেখে বেশ খুশি। অবাকও যে হয়েছেন তা বলাই বাহুল্য। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং জিতু কমল জানিয়েছেন কাছের বন্ধুকে নিজের এই ছবি প্রথম দেখাতে কিছুতেই সে বিশ্বাস করেননি ছবির মানুষটি আমি। 'সে ধরেই নিয়েছিল এ ছবি সত্যজিতের। শেষমেশ হাত থেক♈ে ফোন কেড়ে নিয়ে ভালো করে দেখে তবে বিশ্বাস করেছিল!' হাসতে হাসতে জানিয়েছেন জিতু। তবে এই লুকের সমস্ত কৃতিত্ব পরিচালক অনীক দত্ত এবং মেক আপ আর্টিস্ট সোমনাথ কুণ্ডুকে দিয়েছেন জিতু। তবে পর্দায় এই চরিত্র ফুটিয়ে তোলার জন্য নিজেকে যে সম্পূর্ণ ঢেলে দিয়েছেন তিনি সেকথা স্বীকার করলেন জিতু নিজেও। নিয়মিত সত্যজিতের ইন্টারভিউ দেখছেন, তাঁর কথা বলার ধরন খেয়াল করছেন, পড়াশোনা করেছেন সত্যজিৎ সম্পর্কে। তা সত্বেও অভিনেতার কথায়, 'আমি এখনও মাঝসমুদ্রে!'
অপরাজিত' প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পরিচালক অনীক দত্ত জানিয়েছেন এ ছবি এককথায় ভীষণ 'ইনস্পিরেশনাল' হতে⛄ চলেছে। কীভাবে শুধুমাত্র প্রতিভা এবং জেদ-কে পুঁজি করে একজন মানুষ নিজের স্বপ্নকে ছুতে পারে তাই নিয়েই এই ছবি। সঙ্গে আরও জানালেন জিতুর মেক আপের ক্ষেত্রে সামান্য প্রস্থেটিক্সের সাহায্য নিয়ে মেকআপ সোমনাথ কুণ্ডু যা কাণ্ড করেছেন তা এককথায় অভূতপূর্ব। শুধুমাত্র গালে ও থুতনিতে প্রস্থেটিক্সের সাহায্য নেওয়া হয়েছে।
তবে সত্যজিতের ম্যানারিজ়ম, ভাবভঙ্গি ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে পুরো কৃতিত্বটাই জিতুকে দিয়েছেন তিনি। সত্যজিৎ যেভাবে সিগারেট ধরতেন, তাতে টান দিতেন সবকিছুই পর্দায় দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছে ও। তাছাড়া নিজেও বিস্তর খোঁজখবর করেছে, পড়াশোনা করেছে এই ব্যাপারে। সেইসবও নিশ্চয়ই খুব সাহায্য কর🐻েছে ওঁকে'। বক্তব্য শেষে এই জনপ্রিয় পরিচালকের সংযোজন, 'ও যেহেতু মূলত সিরিয়ালের, তাই বড়পর্দায় দর্শক ওঁকে নতুনভাবে দেখবে। এটা খানিকটা বাড়তি সুবিধে তো বটেই!'
ছবির একটা অংশের শুট হয়েছে বীরভূমে, বোলপুরের আশপাশে। জানা গেছে, এর পরের শিডিউল শুরু হবে ১৯ নভেম্বর থেকে। নন্দ𒁏ন, শিশির মঞ্চ ও বেশ কিছু সিকোয়েন্সের শ্যুটিং সারা হবে। এছাড়াও সেই আউটডোর-এর তালিকায় রয়েছে কলকাতার বেশ কয়েকটি জায়গা।