আরজি কর-কাণ্ডে প্রথম থেকেই সরব হয়েছেন বং গাই ওরফে কিরণ দত্ত। বৃহস্পতিবারও তিনি নিজের কথা স্পষ্ট করে তুলে ধরেন সকলের সামনꦿে। সকলকে অনুরোধ করলেন, ꦺযাতে তাঁরা আরজি করে হওয়া ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা বন্ধ না করে।
‘সাধারণ মানুষ এতদিন ধরে যে প্রশ্নগুলো তুলছে, যে প্রশ্নগুলো করে সুপ্রিমকোর্ট প্রমাণ করল ব্যর্থতা তো আছেই। প্রশ্ন তোলা বন্ধ করা যাবে না। তাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় পাওয়ারটা কিন্তু আপনার কাছেই। প্রশ্ন করার। প্রতিবাদের সাথে সাথে আমরা নিজেরা নিজেরা কী কী করতে পারি। কোথাও ক্ষমতার ভুল♚ ব্যবহার হলে, এটা তো আমার সমস্যা না, এটা বলে এড়িয়ে যাবেন না। একজোট হয়ে আওয়াজ তুললেই অযোগ্য লোকেরা দিনের পর দিন ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবে না। মনে রাখবেন ওরা আমাদের সুরক্ষার জন্য। ভয় দেখানোর জন্য নয়। আপনি কর দেন তাঁর জন্য।’, বললেন কিরণ। তিনি আরও বলেন, ‘নিজে কোনওরকম দুর্নীতির অংশ হওয়া বন্ধ করুন। শুধু গুটিকয়েক লোক দুর্নিতীর অংশ হলেই সমাজটা পচে যায় না। আপনার মতো সবাই ভাবছে আমি একা সৎ হয়ে কী করব। মনে রাখবেন, আপনি খারাপ হলে সেটা ঘুরে আপনার কাছে আসবেই।’
আশেপাশে কেউ মেয়েদের শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করছে দেখলেও, চুপ করে না থাকার কথাই বললেন কিরণ। নিজের মন্তব্য যোগ করেন, ‘রাস্তা-ঘাটে-বাসে-ট্রেনে ওদের কথা শুনে এ༒কজোট হয়ে প্রতিবাদ করতে হবে। দেখেও না দেখার ভান করলে, মনে রাখবে অন্য একটা সময়ে, অন্য একটা বাসে, এটা তোমার মা হতেও পারত। একজন করে রেহাই পেয়ে গেলে, সেটা দেখে ওরকম করার আরও দশটা লোক সেদিন জন্মে যায়। একজনের উপর অ্যাকশন নিলে আরও এরকম ১০টা ঘটনা ঘটার আগেই থেমে যায়। সব বাবা-মায়ের কাছে অনুরোধ আপনার ছেলেমেয়ে কারও কাছে যেতে না চাইলে, সেটা এড়িয়ে না গিয়ে সেটা শুনুন। বোঝার চেষ্টা করুন।’
‘পিশাচগুলো কিন্তু আমাদের আশেপাশেই ঘোরে। কোনটা মস্করা আর কোনটা মেয়েদের আইডেন্টিফাই করে নোংরা আক্রমণ করা সেটা বুঝে, অবজেক্টিফাই করার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন। আমিও (বং গাই নিজেকে দেখিয়ে) খারাপ কথা বললে, আমার দিকে আঙুল তুলতে দুবার ভাববেন না। কোনও ইউটিউবার সেটা করলে তাঁকেও বোঝান। মেয়েদের বডি পার্টস নিয়ে ইনসেনসিটিভ কৌতুকটা শুধু কৌতুক নয়। আর সবচেয়ে বড় কথা, ধর্ষণের মানসিকতা অন্য কিছু দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করবেন না। ছোট পোশাক, এত রাতে বাইরে কেন, এসব কিছুই আপনাকে ওর সম্পর্কে নোংরা মন্তব্য করার অধিকার দেয়নি। নিজের ক্রিমিনাল মাইন্ড এসব দিয়ে🅘 ঢাকবেন না। খালি গায়ে নিপলস চুলকাতে চুলকাতে এসব কথা মানায় না।’, স্পষ্ট করেন বং গাই।
শিক্ষাক্ষেত্রে সেক্স এডুকেশনের প্রয়োজনও ব্যপ্ত করলেন তিনি। বলেন, ‘স্কুলে এই মুহূর্তে সেক্স এডুকেশন ভীষণ প্রয়োজন। আর সেটা না হলে বাড়িতে প্রয়োজন। পর্ন দেখে কেউ ইন্টিমেসি শিখলে, তাঁর ভাবনায় ভুল থেকে যাবেই। নিজের ছেলেমেয়েদের গুড চাট ব্যাড টাচ শেখানো আপনাদ🌼ের দায়িত্ব। ভালো স্কুলে পড়ালেই শিক্ষিত হয়ে যায় না। মেয়ের লাইফ সায়েন্স মেন সাবজেক্ট, পিরিয়ডস হলে বলেন লুকিয়ে যেতে। প্যাড কিনতে লজ্জা ায়। ছেলেদের থেকে দূরে রাখাটা সমাধান নয়। কোন ছেলেটার ইন্টেনশন কী, সেটা বুঝতে পারায় সক্ষম করে তোলা, আপনাদের দায়িত্ব। সারা জীবন ছেলেদের সঙ্গে মিশতে বারণ করলে, ছেলেরা বন্ধু হতে পারে, এটা তারা কখনো বুঝবে না। আর সবশেষে ভুল ছেলেকেই ভরসা করে ফেলবে। তাই সুস্থভাবে বাঁচতে গেলে, প্রতিবাদ করে যেতেই হবে, প্রতিবাদ থামলে সমাজের উন্নতি থেমে যাবে।’