টলিপাড়ায় কাজ দেওয়ার নামে ফের জালিয়াতির ভয়ানক অভিযোগ। টলিউডের নামী প্রযোজক শ্💛রীকান্ত মোহতার নামে ভুয়ো ফেসবুক প্রোফাইল খুলে হোটেলে অডিশনে ডাকা হয় বলে অভিযোগ করেছেন অভিনেত্রী মৌমিতা পণ্ডিত। চ𒈔াঞ্চল্যকর অভিযোগ এনেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই ঘটনার বিষয়ে সোনারপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মৌমিতা।
ঠিক কী ঘটেছে মৌমিতা পণ্ডিতের সঙ্গে?
এবিষয়ে বিস্তারিত জানতে Hindustan Times Bangla-র তরফে যোগাযোগ করা হয় অভিনেত্রীর সঙ্গে। মৌমিতা আমাদের জানান, ‘সৌভাগ্যক্রমে আমি পুরো জালিয়াতির বিষয়টা বুঝে গিয়েছি। তবে এই জালিয়াতির ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে চলছে বলেই আমার অনুমান। কতজন এই জালিয়াতির শিকার হয়েছেন সেটাও ভাবনার বিষয়। কারণ শ্রীকান্ত মোহতার নাম করে যে ফেসবুক প্রোফাইল থেকে এই জালিয়াতি হয়েছে, তার ফ্রেন্ডলিস্টে আমারই ২৯২ জন কমন ফ্রেন্ড রয়েছে। আমি বহুদিন ধরে কাজ করছি। কোনওরকম হোমওয়ার্ক ছাড়াই আমাকে এই প্রস্তাব দিয়ে ফেলেছে হয়ত। এই প্রোফাইলটির ফ্রেন্ডলিস্টে বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী রয়েছেন। দিনে ১ হাজার করে লাইক-কমেন্ট পড়ছে ওই প্রোফাইলে। এমনকি বহু পোস্টে অভ্রজিৎ সেন, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়েরও লাইক, লাভ রিঅ্যাক্ট রয়েছে। বহু অভি♈নেতা অভিনেত্রী ওই প্রোফাইলকে ট্যাগ করে পোস্টও করেছেন দেখছি। আমি তো আর Scrutiny করতে বসব না, ওই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটা যে আসল নাকি ফেক! তাই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করি। ওই প্রোফাইল থেকেই মেসেঞ্জারে ফোন করা হয়। যে গলাটি শ্রীকান্ত মোহতার মতোই, সেটা AI দিয়ে করা, নাকি অন্য কেউ নকল করে করেছেন জানি না। সেই ফোনেই আমার ফোন নম্বর চাওয়া হয়, আমি দিই। জানানো হয় কাস্টিং ডিরেক্টর ফোন করবেন।
এর আগে আমার বলিউড থেকেও মেসেঞ্জারে যোগযোগ করা হয়েছে, আজকাল কাজের জন্য এভাবে যোগাযোগ করা হয়, তাই সন্দেহ হয়নি। শিবুদা প্রোডাকশন হাউস থেকেও কণ্ঠ করার জন্য মেসেঞ্জারেই প্রথমে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তাই কীভাবে বুঝব যে এটা ভুয়ো! এরপর 'সিড' নামে একজন ফোন করেন, তার কোনও ডিপি নেই, SVF-এর লোগো। তিনিই কিছু ফর্ম হোয়াটসআপে পাঠান। সেই ফর্ম দেখেও কিছু বোঝা যায়নি। কারণ, SVF-এর মতোই সবকিছু। এরপর আমাকে অডিশনের জন্য লোকেশন পাঠানো হয়, সেটা অ্যাক্রোপলিস-এর ছিল। পরে ফোনে বলা হয় ইউকে ব্যাঙ্কের সামনে ক্যাফেতে আসতে। সেখানে নামার আগে ওই সিড (যিনি কথায় কথায় আমায় বলেন ওঁর নাম সিদ্ধার্থ) বলেন আমি আসছি, গাড়িতেই চিত্রনা🌱ট্য শোনাব, কারণ ক্যাফেতে খুব ভিড়। গাড়িতে আমার ড্রাইভার ছিলেন, তাই অসুবিধা হয়নি। আমাকে উনি (সিড) জিগ্গেস করেন, অডিশনের জন্য শাড়ি আনতে বলা হয়নি না? তাহলে তো এখন তো আর SVF-এর অফღিসে যাওয়া হচ্ছে না, এখানেই অডিশন করে নেব। ওখানে কস্টিউম থাকলেও থাকতে হবে, তবে হোটেলে গিয়ে আমি বুঝতে পেরেছি, ওখানে কোনও টিম নেই ফাঁকা। তখন বলি, আমি অফিসে গিয়ে পরে অডিশন দেব। তখনও আমি ভয় পাইনি অতটা,কারণ আমার সঙ্গে ড্রাইভার ছিলেন। এরপর আমি চিত্রনাট্য শুনে বুঝি, এটা হইচই-এর চিত্রনাট্য হতেই পারে না। কোনও ঠিকঠাক গল্পই নয় ওটা। ওই ছেলেটা যদিও ইন্ডাস্ট্রির অনেকের সঙ্গে কাজ করেছে বলে দাবি করে, আমাকে নানান কথা বলে। যেগুলো শুনলে যেকোনও নতুন কেউ ধরতেও পারবেন না যে এটা ভুয়ো!
আরও পড়ুন-হিন্দিতে দাদাဣগিরি ২ বিজয়ী অভিনেতার মৃত্যু,🌳 ৩৫-এই চলে গেলেন নীতিন, ঠিক কী ঘটেছিল?
এরপর আমি বলি পরিচালকের কাছ থেকেই চিত্রনাট্য শুনে নেব। আবিরদা-র সঙ্গে বসে চিত্রনাট্য পড়ব (আমাকে প্রস্তাব দেওয়া ছবিটিতে আবিরদাও রয়েছཧে বলে বলা হয়)। এভাবে ঠিক বুঝতে পারছি না। তখন আমার আর্টিস্ট ফোরামের কার্ড আছে কিনা জানতে চাওয়া হয়। তবে আমি নেই বললে, ছেলেটি বলে কার্ড করিয়ে দেবে ৩-৪দিনের মধ্যে। এরপর কার্ডের জন্য টাকা চেয়ে ফোন করা হয়। আমার UPI আইডি চাওয়া হয়। আমি রাজি হইনি সেটা দিতে। আমার থেকে সাড়ে ৭হাজার টাকা চাওয়া হয়। আমি SVF-এর ব্য়াঙ্ক ডিটেলস চাই, বলি সেখানেই টাকা পাঠাব। ত꧙বে ও কিছুতেই ব্যাঙ্ক ডিটেলস দেয়নি। কিউআর কোড পাঠিয়ে সাড়ে ৭ হাজার টাকা চায়। এটা খুব হাস্যকর নয় কি যে শ্রীকান্ড মোহতা আমার কাছ থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা চাইছেন! এটা যেকোনও বোকা মানুষও বুঝে যাবেন যে বিষয়টা ভুয়ো, জালিয়াতি হচ্ছে কোনও একটা। আমি বলি, তাহলে আমি অফিসে এসে সাড়ে ৭ হাজার টাকা দিয়ে যাচ্ছি। তখন থেকেই হুমকি দিয়ে ফোন করা শুরু হয়। আপনার আবেদন বাতিল হয়ে যাবে। এইরকম নানান হুমকি দেওয়া হয়।
আমি ভাবছি, আমার সঙ্গে যদি এটা করার সাহস দেখায়, তাহলে নতুনদের সঙ্গে কী হবে! এরপর খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি, আরও অনেকজনের সঙ্গেই এটা ঘটেছে। এসভিএফ-এ ফোন করে বলি। ওরা বলেন, এই রকম বিষয় একটা চলছে বলে ওরাও শুনেছে। তবে এতকিছু ঘটছে তাদেরও জানা ছিলনা। তারপর এই বিষয়টাতে আমায় বেণীদি আর তানিকা অনেক হেল্প করেন। আমি সোনারপুর থানায় FIR করি। যদিও ওখানেও প্রথমে FIR নেওয়া হচ্ছিল না। ওরা বলে, আপনি তো এখনও ভিকটিম হননি, তাহলে কেন? আমি একথা শুনে অবাক! বলি, যদি কিছু ঘটত, তাহলে অভিযোগ নিতেন! এটা তো সাইবার ক্রাইমের মধ্যেও পড়ে। পরে অনেক কথাবার্তার পর শেষপর্যন্ত FIR নেওয়া হয়। আমার কাছে সব প্রমাণ ছিল। এই সাইবಞার ক্রাইমের বিষয়টাতে রাজর্ষি দা অনেক হেল্প করেছেন আমায়।
ইতিমধ্যেই ওই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। কারণ, ওটা আর খোলা য꧟াচ্ছে না। কাল রাত পর্যন্ত ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি খোলা যাচ্ছিল। SVF-এর তরফেও শুনলাম পদক্ষেপ করা হয়ছে। এতদিন ওরা এই বিষয়টা বিস্তারিত জানত না। এটা একটা বড় সাইবার ক্রাইম।'