মঙ্গলবার থেকে একটি ভিডিয়ো ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের এক কুকিং শো ‘রাঁধুনী এপার ওপারের রান্না’ নামের একটি শো-তে অতিথি হিসেবে হাজির হয়েছেন টলিউডের চেনা মুখ, ‘রান্নাঘর’-এর সঞ্চালক সুদীপা চট্টোপাধ্যায়। সেখানে সঞ্চালক রান্না করেন, গোরুর ম🍒াংসের কোফতা। আর তারপর থেকেই ক্ষোভ সোশ্যাল মিডিয়াতে। রীতিমত🐲ো তুলোধনা করা হচ্ছে, অভিনেত্রীকে। সুদীপা জানালেন, তাঁর মা-ছেলেকে নিয়েও অশ্লীল মন্তব্য পড়ছে একাধিক পোস্টে।
হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার তরফে সুদীপার সঙ্গে এই নিয়ে যোগাযোগ করা হলে অভিনেত্রী জানান, ‘অনেক মানুষ বিতর্ক জন্ম দিতে ভালোবাসেন। এর আগেও এটা দেখেছি আমি। তবে তাঁরা কেউই সত্যিটাকে জানতে চায় না। কেউই দেখেনি নিজের চোখে। যতজন এই নিয়ে বিদ্বেষমূলক পোস্ট করেছে, তাঁরা জানেই না পুরো ব্যাপারটা। আমি না গোরুর মাংস খেয়েছি। না গোরুর মাংস রান্না করেছি। আমি গিয়েছিলাম কোরবানির ইদ উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে। তাঁদের দেশের জাতীয় খাদ্যের মধ্যে পড়ে গোরুর মাংস। কারও ধর্মীয় রুচিতে বাধা দেওয়া আমার শিক্ষার মধ্যে নেই। আমি যদি নℱিজের ধর্মকে সম্মান করি, তাহলে অন্যের ধর্মাচরণে বাধা দিতে পারি না, এটা আমার মত। আমার সামনে তারিন জাহান একটি রান্না করেন, যিনি বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী, বর্তমানে টলিউডেও কাজ করছেন। উনি প্রথমে বলেন, আজ আমি তোমার জন্য বানাব গোরুর মাংস। পর মুহূর্তেই নিজেকে শুধরে নিয়ে বলেন, দর্শকদের রান্না করে দেখাব গোরুর মাংসের কোফতা। এটা তারিনের ভুল হয়ে থাকতে পারে। আমি কিন্তু চুপ করে ছিলাম, উত্তর দিইনি।’
আরও পড়ুন: ‘বাড়িতে হয় 🥃দুর্গা পুজো’, কুকিং শো-য় গোরুর মাংস রান্না শিখলেন সুদীপা, চেখেও দেখেন🥂?
ক’দিন আগেই মাতৃহারা হয়েছেন সুদীপা। সেই মা-কেও ছাড়েনি ট্রোলাররা বলে দুঃখপ্রকাশ করলেন। জানালেন, গোটা ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন তিনি। বললেন, ‘সবথেকে খারাপ লাগছে যে আমার ছোট্ট অবোধ ৫ বছরের শিশু, পরলোকগতা আমার মা, তাঁদেরকেও লোক অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করছে। কোনও ধর্ম ꦰমনে হয় শেখায় না, একজন মা যিনি সদ্য মারা গিয়েছেন, ছোট শিশু, তাকে গালিগালাজ করা। প্রাণনাশকারী হুমকি দেওয়া হচ্ছে আমাকে। আমাকে বলছে, রাস্তায় বের হলে জ্যান্ত জ্বালিয়ে দেবে। আমার ছেলেকে খুন করার হুমকিཧ দিচ্ছে। ওকে স্কুলে পাঠাতেও ভয় লাগছে আমার।’
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এক𓃲জন হিন্দু অতিথিকে ডেকে কেন গোরুর মাংস রান্না করা হল ওই চ্যানেলে। কেন সাবধান হলেন না নির্মাতারা। তবে সুদীপা মোটেও ব্যাপারটা সেভাবে দেখতে রাজি নন। বললেন, ‘আমি ওই অনুষ্ঠানে ভারতবর্ষকে রিপ্রেজেন্ট করেছি,যেটা আমার কাছে খুব গর্বের। কোনও বিশেষ ধর্মের মানুষ হিসেবে না। ভারত তো হিন্দুদের একার নয়, হিন্দু-মুসলিম সবার। আমরা তো ছোট থেকে এটা শুনেই বড় হয়েছি… মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান। আমারা তো অন্যের ধর্মকে সম্মান করতেই শিখেছি। ক্রিসমাসে চার্চে গিয়ে মোবাতি জ্বালাই, কেক খাই। অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরে গিয়ে মাথায় কাপড় দিয়ে বহু হিন্দু মাথা ঠেকান। তার মানেই তো আমরা সব ধর্মকে সম্মান করি। একটা কুকিং শো-তে গিয়েছি নিজের দেশকে তুলে ধরতে। সেখানে তো হিন্দু মুসলিমের কোনও জায়গ𝔍াই ছিল না। সে তার ধর্মীয় আচরণ অনুযায়ী গোরুর মাংস রান্না করেছে। সে তো আমাকে একবারও বলেনি, খেয়ে দেখুন। সে আমাকে সেই সম্মানটা দিয়েছে।’
সবশেষে দুঃখ করে সুদীপা বললেন, ‘সুইগি বিতর্কেও এরকম হয়েছিল। কেউ পুরো ব্যাপারটা জানার চেষ্টাও করল না। নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলাম। ইচ্ছে ছ꧑িল, দেশে দেশে ঘুরে সেখানকার কুইজিন তুলে ধরব। সত্যি বলতে, মনটা ভে🏅ঙে গিয়েছে।’