Happy Father's Day: ♑বিনোদন হোক অথবা রাজনীতি, নারীবাদ-পিতৃতন্ত্র শব্দটা সম্প্রতিকালে মুখে মুখে ঘুরছে। জীবনের প্রতিটা বিষয় এই দুটো শব্দ যেন বারে বারে উঠে আসছে। যখনই কেউ বলিউডের কথা মাথায় রেখে এই শব্দগুলো নিয়ে আলোচনা করে, ভুরি ভুরি উদাহরণ উঠে আসে এই শব্দ থেকে।
𝓡বলিউড আগাগোরাই বাবা হিসেবে কোনো ব্যক্তিত্বকে সংস্কারী এবং রক্ষণশীল হিসেবে দেখিয়ে এসেছে। যে নিজের মেয়েকে আদর দিয়ে মানুষ তো করে, কিন্তু সব সময়ই তাঁকে ‘অন্য়ের সম্পত্তি’ হিসেবে দেখে। ভেবে দেখুন তো, ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’ ছবিতে অভিনেতা অমরেশ পুরীর চরিত্র। ছবিতে মেয়ে কাজলের প্রতি তাঁর কঠোর আচরণ। অন্যদিকে, মোহাব্বাতে ছবিতে অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনকে মেয়ে ঐশ্বর্য় রায়ের প্রতি নিখুঁত ভালবাসা প্রদর্শন করতে দেখা গেছে।
💞প্রসঙ্গত, যে ছবিতে অভিনেতা অমরেশ পুরী বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন, চরিত্রে হামেশাই তাঁকে 'গোঁড়া, কঠোর ভারতীয় বাবা, যে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত হাল ছেড়ে দেয় না' এমন হিসেবে দেখা গেছে।


💟তবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনস্ক্রিনের বাবারা বাস্তবের বাবাদের মতো অনেকটা এগিয়ে গেছে। ফিকশন ছবি হোক কিংবা নন ফিকশন ছবি, তাঁরা এখন অনেকটাই মেয়েদের কথা বুঝতে সক্ষম। মেয়েদের উৎসাহ দিতে দেখা যায় তাঁদের। মেয়েদের ঘরে লক করে রাখায় বিশ্বাসী নয় তাঁরা। বরং তাঁদের মন বুঝতে বেশি আগ্রহী।
ꦡউদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ইরফান খানের ‘আংরেজি মিডিয়াম’। যে নিজের মেয়ের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে গেছে। কুস্তিগীর মহাবীর ফোগাতের চরিত্রে অভিনেতা আমির খান। যে নিজের মেয়ে গীতা-ববিতার বিশ্বের সেরা কুস্তিগীর হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে সব কিছু উৎসর্গ করেছে। বলিউডে বাবাদের চরিত্রকে তুলে ধরার বিষয়টি মারাত্মকভাবে বদলেছে।

জুন মাসের তৃতীয় রবিবার ভারতে ‘ফাদার্স ডে’ 🐼অর্থাৎ বাবাদের দিন হিসেবে পালন করা হয়। চলছি বছর ২০ জুন এই দিনটি পালিত হবে। এই দিনটি পিতৃত্বের বন্ধন, পিতৃত্ব এবং সমাজে পিতৃগণের প্রভাবকে সম্মান জানাতে উদযাপিত হয়। নিম্নলিখিত অন-স্ক্রিন বলিউড পিতা নারীবাদী পিতাদের নতুন প্রজন্মের নিখুঁত উদাহরণ। ‘দঙ্গল’এর মহাবীর ফোগাত থেকে শুরু করে 'বরেলি কি বরফি'র নরোত্তম মিশ্র, অনস্ক্রিনে বাবা-মেয়ে সম্পর্কের কয়েকটি উদাহরণ।
'আংরেজি মিডিয়াম'এর চম্পক বনশালি:
꧋বলিউডে নিজের বেশ কিছু সেরা পারফরম্যান্সের মধ্যে ইরফানের এই ছবি অন্যতম উদাহরণ। মৃত্যুর আগেই এটাই তাঁর শেষ ছবি। যা তাঁর বেশিরভাগ কাজের মতো, তার সমস্ত অনুরাগীর স্মৃতিতে আবদ্ধ। আংরেজি মিডিয়াম ছবি চম্পক বানশালির চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইরফান খান। এক ছোট শহরের ব্যবসায়ী। যে তাঁর মেয়ের স্বপ্নকে কোনো মতেই নষ্ট হতে দিতে চায়না। ছবিতে তাঁর মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাধিকা মদন।

🍒মায়ের অনুপস্থিতে, ছবিতে বাবা-মায়ের দৃঢ় সম্পর্কের গল্প উঠে এসেছে। মেয়ে দুধ খাইয়ে বড় করার থেকে তাঁর প্রত্যেকটা স্বপ্ন পূরণে সঙ্গ দেওয়া চম্পক বনশালি চূড়ান্ত নারীবাদী, যিনি নিজেকে বা তাঁর মেয়েকে লিঙ্গবৈষম্য়ের গোড়ামি থেকে দূরে রেখেছেন। ছবিতে আরো অভিনয় করেছেন কারিনা কাপুর খান, দীপক ডব্রিয়াল এবং কিকু শারদা।
‘দঙ্গল’এর মহাবীর সিং ফোগাত:
ꦯবাস্তবকে পর্দায় তুলে ধরেছেন পরিচালক এই ছবিতে। মুখ্য চরিত্র মহাবীর সিং ফোগাতের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আমির খান। যিনি তার সফল কুস্তির কেরিয়ার তাঁর পরিবারের জন্য শেষ পর্যন্ত ছাড়তে হয়। কিন্তু মনের অগোচরে কোথায় একটা ফিরে যাওয়ার কথা মাথায় ঘুরছিল তাঁর। তাই নিজের দুই মেয়েকে ছোটবেলা থেকে কুস্তির ট্রেনিং দিতে শুরু করেন তিনি। ছেলে নেই তাই দুই মেয়ে গীতা এবং ববিতাকে কঠোর ট্রেনিং দিয়ে নিজের হাতে কুস্তিগীর তৈরি করেন তিনি। সাহস জোগান, একদিন তাঁরা বিশ্বের সেরা কুস্তিগীর হবে সেই বিষয়।

🥀ছবির কিছুটা অংশে মেয়েদের কোণঠাসা পরিস্থিতি গল্প উঠে এসেছিল। কিন্তু সেথানে থেমে থাকেননি মহাবীর। দুই মেয়েকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান। তিনি বিশ্বাসী ছিলেন, তাঁর মেয়েরা রক্ষণশীল হরিয়ানভী সম্প্রদায় থেকে এসেও তারা যে লক্ষ্য অর্জন করতে চায় তা করতে পারবে। সম্পূর্ন অনুপ্রেরণা মূলক এই ছবিতে, চরিত্রের অভিনয় দর্সকদের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং ব্লকবাস্টার হিট হয় এই ছবি। ছবিতে সানিয়া মালহোত্রা এবং ফাতিমা সানা শেখ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
‘গুঞ্জন সাক্সেনা: দ্য় কার্গিল গার্ল’ ছবিতে অনুপ সাক্সেনা:

❀বাস্তবের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এই ছবি। ‘গুঞ্জন সাক্সেনা: দ্য় কার্গিল গার্ল’ বায়োপিকে মুখ্য় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহ্নবী কাপুর। অভিনেতা পঙ্কজ ত্রিপাঠী ছবিতে বাবা অনুপ সাক্সেনার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। মেয়ের স্বপ্ন পূরণে যে বড় ভূমিকা পালন করে। অভিনেতারা উজ্জ্বলভাবে বাবা-মেয়ের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্কের বন্ধনকে তুলে ধরেছে। যেখানে অনুপকে দেখা গেছে, মেয়ে গুঞ্জনের স্বপ্ন পূরণ করতে সকলের বিপক্ষে পর্যন্ত দাঁড়াতে হয়েছে তাঁকে।
‘বরেলি কি বরফি’ ছবিতে নরোত্তম মিশ্রা:
💃ছবিতে কৃতী শ্যাননের বাবার চরিত্রে দেখা গেছিল পঙ্কজ ত্রিপাঠীকে। তাঁর চরিত্রের নাম নরোত্তম মিশ্রা। বিট্টির ভূমিকায় কৃতীর সুপার কুল বাবার চরিত্রে ছিলেন পঙ্কজ। উত্তরপ্রদেশের বরেলির মতো ছোট শহরের এক গল্প। রক্ষণশীল গ্রাম। কিন্তু বাবা মেয়ের সম্পর্কে গল্পে দেখানো হয়েছে বন্ধুত্বপূর্ণ। যে কোনো অনুষ্ঠানে মেয়ের সঙ্গে মদ্যপান অথবা প্রাশই সিগারেট ভাগ করে খেতে কোনো দ্বিধা বোধ করেনা।

🦋যখন কোনো বাবা তাঁদের প্রথম পছন্দকে মেয়েকে বিয়ে করার জন্য বাধ্য করে বিট্টির বাবাকে সেই লময় মেয়ের পছন্দকে প্রাধান্য দিতে দেখা গেছে। মেয়েকে তাঁর মতো বড় করতে চেয়েছে সে। বাবা-মেয়ের সম্পর্কে মিষ্টি মধুর করে দেখানো হয়েছে। ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আয়ুষ্মান খুরানা, কৃতী শ্যানন এবং রাজকুমার রাও।