বেঁচে থাকলে আজ তাঁর বয়স হত ৮৫। বাংলা ছবির স্বর্ণযুগের অভিনেতা শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের জন্মবার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতিচারণ করলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী শকুন্তলা বড়ুয়া। আনন্দবাজারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন টলিপাড়ায় পা রাখার বহু আগে থেকেই শুভেন্দু চট্টপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর দাদা-বোনের সম্পর্ক। 𝔍শুভেন্দুবাবু যখন মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তখন থেকেই। সেই সময় শকুন্তলা দেবী একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। ওঁর বাবা মেডিকেল কলেজের সুপারিন্টেন্ডেন্ট। সেই সূত্রেই অভিনেত্রীর বাড়িতে আকছার যাতায়াত করতেন শুভেন্দু। যদিও কথাবার্তা প্রায় কিছুই হত না। সঙ্গে এটাও মনে আছে, কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানের আগে বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর বাড়িতে নাটকের মহড়া দিতেন শুভেন্দুবাবু ও মেডিকেল কলেজের বাকি ছাত্ররা। জানালেন, তখন থেকেই সুপুরুষ শুভেন্দুর ভক্তের সংখ্যা বাড়ছিল ছাত্রীমহলে।
পরবর্তী সময়ে শকুন্তলা বড়ুয়ার প্রথম ছবি ‘সুনয়নী’র নায়ক তিনিই। উত্তমকুমারকে যে দেবতারূপে জ্ঞান করতেন সত্যজিতের 'অরণ্যের দিনরাত্রি' ছবির অভিনেতা, সেকথাও উল্লেখ করতে ভোলেননি শকুন্তলা বড়ুয়া। আরও জানালেন, কী🎀ভাবে উত্তমকুমার তাঁদের দু'জনকে তারকা সত্তা কীভাবে ধরে রাখতে হয় সে ব্যাপারে অনেক টিপস দিতেন। আর শুভেন্দুবাবুও ছিলেন বেজায় রসিক মানুষ। একবার তো সেটের মধ্যেই হাসতে হাসতে চিৎকার করে বলে উঠেছিলেন যে তাঁর স্যারের মেয়ে শকুন্তলা। শুধু তাইই নয়, ছদ্ম আফসোসের ভঙ্গিতে সুর চড়িয়ে বলে উঠেছিলেন,' ইসস! তখন যদি তোমায় ভাল করে দেখতাম, আমিই তো নায়িকা শকুন্তলাকে বিয়ে করতে পারতাম। তা হলে কি আর তুমি অভিনয় দুনিয়ায় আসতে পারতে?’' কথা শেষ হতেই হা হা করে হাসি।
শকুন্তলা দেবীর জবানিতেই জানা গেল আরও এক মজার ঘটনা। সেই সময়ে অমর সঙ্গী -র শ্যুটিং চলছে। ছবিতে প্রসেনজিতের বিপরীতে বলিউড অভিনেত্রী বিজয়েতা পন্ডিত। একদিন স্রেফ ওঁর সুবিধের জন্য শুভেন্দুবাবু ও শকুন্তলা দেবীকে সকাল সকাল গাড়িতে চাপানো হয়েছে আউটডোর শ্যুটিংয়ের জন্য। ভারি বিরক্ত হয়েছিলেন 'চিড়িয়াখানা' ছবির অভিনেতা। একটা সময় রেগে গাড়ি থেকে নেমে সিগারেট কিনতে গিয়ে এক দাবি বিক্রেতার⛄ কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে সে বিজয়েতা পন্ডিতের নাম শুনেছে কি না। জবাব আসে না, চিনি না। ব্যাস! চিৎকার করে গাড়িতে উঠেই বললেন, ‘দ্যাখো শকুন্তলা, ও পর্যন্ত বিজয়েতাকে চেনে না! আর আমাদের এ কী হয়রানি!’