আমার বিয়ে হয়েছে বছর পাঁচেক হল। আমার বর বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। পরিবারের সূত্রে যোগাযোগ করে বিয়ে দেওয়া হꦰয়েছিল আমাদের। বিয়ের আগে আমার সঙ্গে এক জনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সেই সম্পর্কটা খুব একটা ভালো দিকে এগোয়নি। সম্পর্কটা ভেঙে যাওয়ার পরে দীর্ঘ দিন অবসাদে ভুগেছি। তার পরে বাড়ি থেকে এক প্রকার জোর করেই বিয়ের যোগাযোগ করা শুরু হয়। আত্মীয়দের সূত্রে যোগাযোগ হয় আমার বর্তমান শ্বশুর♚ বাড়ির সঙ্গে। সেখান থেকে বিয়ে।
আবার বরের সঙ্গে আমার যে মানসিক যোগাযোগ খুব বেশি— এমনটা বলা যাবে না। বিয়ের পর পর একটা আকর্ষণ ছিল। পরস্পরকে জানার আগ্রহ ছিল। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সেটা কেটে যায়। তার মধ্যেই 🐬আমাদের মেয়েও হয়।
ওর সব সময়েই কাজ আর ✨কাজ। যদিও কখনও কখনও মনে হয়েছে, কাজের জায়গায় ওর সঙ্গে হয়তো কারও কোন𒁏ও প্রেমের সম্পর্ক বা ঘনিষ্ঠতা আছে। তার কোনও প্রমাণ কখনও পাইনি। কিন্তু কোনও কোনও সময়ে সঙ্গের মানুষটির আচরণ দেখে কিছু কিছু জিনিস মনে হয়, এক্ষেত্রেও তাই।
আমার সঙ্গে আমার বরের শারীরিক সম্পর্ক এখন আর প্রায় নেই বললেই চলে। এখানে আমার নিজের কথাও একটু ꧙বলা দরকার। বিয়ের দেড় বছরের মধ্যেই আমাদের মেয়ে হয়ে যায়। মেয়ের যখন তিন বছর বয়স, তখন থেকে আমিও কাজ শুরু করি। কাজ বলতে, নিজের একটা ব্যবসা। ছোট বুটিক করেছি। নিজে কিছু কিছু জিনিস বিক্রি করে। অন্যদের জিনিসও থাকে। এভাবেই দিন কেটে যাচ্ছিল।
মেয়ে এখন স্কুলে পড়ছে। আমার পক্ষে সব সময় ওকে সঙ্গ দেওয়া সম্ভব নয়। নতুন ব্যবসা বলে ওখানেও অনেকটা সময় দিতে হয়। তাছাড়া ছোটদের পড়াশোনারও চাপ থাকে। এই সব সাত-পাঁচ ভেবেই ম♏াস খানেক আগে 𒐪আমার মেয়ের জন্য একজন গৃহশিক্ষক রাখা হয়েছিল।
সপ্তাহান্তের দু’দিন ছাড়া বাকি পাঁচ দিনই মেয়ের শিক্ষক সন্ধ্যায় মেয়েকে পড়াতে আসে। বাড়িতে ওই সময়ে এক দিদি থাকেন মেয়েকে দেখাশোনার জন্য। তার পরে আমি বাড়ি ফিরলে ওই দিদি বেরি𒉰য়ে যান।
এভাবেই কয়💜েক দিন চলছিল। একদিন বাড়ি ফিরে দেখি আমার মেয়ে তার গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ছে। দেখা হতে ওর সঙ্গে কিছু কথা ♈হল। এর আগে বার দুয়েক দেখা হয়েছিল। কিন্তু এই সন্ধ্যায় কেন জানি না, ছেলেটিকে খুবই ভালো লেগে গেল। ওর চোখে মুখেও একটা ভালোলাগার ভাব ছিল।
পরের দিন আমার নিজের মনে হল, একটু আঘে বাড়ি ফিরে যাই। ফিরেও এলাম। আবার দেখা হল ছেলেটিরꦅ সঙ্গে। এর পর থেকেই যেন একটু বেশি ভালো লাগতে শুরু করল। এর পর থেকে রোজই একটু একটু আগে বাড়ি ফিরে আসতে লাগলাম। ওর সঙ্গে মেসেজে কথাও শুরু হল।
যে প্রসঙ্গে এই চিঠি লেখা, সেটা ঘটে গেল কয়েক দিন আগে। মেয়ের জ্বর ছিল। ওকে স্কুলে পাঠানো হয়নি। যে দিদি ওকে দেখাশুনো করেন, তাঁরও শরীরꩵ খারাপ। তিনিও আসেননি সেদিন। সব মিলিয়ে আমার আর কাজে বেরোনো হয়নি। বাড়িতেই ছিলাম।
হঠাৎ আমার মেয়ের শিক্ষকের ফোন এল। ওকে বললাম, পরিস্থিতিটার কথা। দুপুরে হঠাৎ দেখি ডোরবেল বেজে উঠল। দেখি, সে এসে এসেছে। বলল, মেয়ের শরীর খারাপ শুনে দেখা করতে 🌜এসেছে।
মেয়ে তখন ঘুমোচ্ছিল। ওকে ডাকি🉐নি। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যেই বিষয়টা অন্য রকম চেহারা নিল। মনের মধ্যে যে আগুনটা হালকা আঁচে জ্বলছিল, সেটা দাউ দাউ করে ♔জ্বলে উঠল। আমরা দু’জনেই তাতে জ্বলতে শুরু করলাম।
আমাদের শোওয়ার ঘরেই ওর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়লা𒁃ম। এভাবে কত ক্ষণ কেটেছে জানি না, হঠাৎ সম্বিত ফিরল। তাকিয়ে দেখলাম, বেডরুমের দরজাটা অল্প খোলা। আর আমার মেয়ে স্তম্ভিত হয়ে দাไঁড়িয়ে আছে।
আমার মেয়ের বয়স সাড়ে তিন বছর। ও চোখের সামনে যা দেখেছে, তার কত𝓡টা ও বুঝতে পেরেছে, সেটা আমি জানি না। ওর মনের মধ্যে কী চলেছে, সেটাও জানি না। এর ꦦপরেই ও ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। কোনও রকমে ওর কাছে পৌঁছোই। কিন্তু ও আর কিছু বলেনি আমায়।
মেয়ের🎐 জ্বর তার পরে আরও দু’দিন ছিল। ওর বাবার সঙ্গে ওর ঘনিষ্ঠতা কম। আমার সঙ্গে বেশি। জানি না, এই ঘটনার রেশ কেমন পড়বে আমাদের পরিবারের উপর। আমি কি গোটা ঘটনাটা গোপন রেখে দেব? নাকি ওকে বোঝানোর চেষ্টা করব? ও কি ওর বাবাকে বলে দিতে পারে? আমার মাথা কাজ করছে না।
বিশেষজ্ঞের জবাব:
🌜সম্পর্কবিদ মৌমিতা গুপ্ত এই বিষয়ে পরামর🅷্শ দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য:
বিষয়টি ইতিমধ্যেই বড়সড় আকার নিয়েছে। ফলে এটি গো♔পন করার অর্থ বোকামিই হবে। এক্ষেত্রে তিনটি মানুষের অবস্থান আলাদা আলাদা করে বোঝাটা খুব দরকারি।
প্রথম, আপনার স্বামী। তাঁর সঙ্গে আপনার স্বাভাবিক দাম্পত্যের অভাব আছে। আপনার কথা থেকেই ধরে নেওয়া যায়। দাম্পত্যের বাইরে তাঁ কারও সঙ্গে সম্পর্ক আছে নাকি নেই, সেটি 🧔আলাদা বিষয়। যদি থাকে, সেই সম্পর্কের কথা তিনি আপনাকে কীভাবে জানাবেন বা জানলে আপনি কী করবেন, সেটাও আলাদা বিষয়। কিন্তু এটিও সত্যি, এই বৈবাহিক সম্পর্কে থাকার সময়ে তাঁরও অধিকার আছে স্ত্রীর সম্পর্কের বিষয়ে জানার। তার পরে এই সম্পর্কে তিনি আর থাকবেন কি না, বা থাকলে কীভাবে থাকবেন— সেটা তাঁর সিদ্ধা𝄹ন্ত।
এবার আসা যাক, দ্বিতীয় জনের কথায়। আপনাদের মেয়ে। তার বয়স এখন মোটে সাড়ে তিন। এই বয়সে তার মনের উপর এই ঘটনা অদ্ভুতভাবে প্রভাব ফেলবেই𝄹। বহু শিশুই এই ধরনের দৃশ্য দেখে ফেলে। তখন তার অর্থ না বুঝলেও পরে বড় হওয়ার সময়ে তারা ঠিক এর মানে বুঝে যায়। আগে দেখা এই দৃশ্য তখন মনের উপর নতুন করে প্রভাব ফেলে। ফলত, বিষয়টি এড়িয়ে না গিয়ে, কোনও মেয়ের জন্য কোনও মনোবিদের পরামর্শ নিন।
এবার আসা যাক, তৃতীয় মানুষটির প্রসঙ্গে। তিনি আপনি নিজে। ম🥀নে রাখবেন, প্রত্যেকের একটিই জীবন। সেই জীবন ভালোভাবে কাটানোর অধিকার সকলের আছে। তাছাড়া ভালোভাবে বাঁচা এবং দাম্পত্যের একটি শর্তই হল শারীরিক সম্পর্ক। যাঁদের সেটির চাহিদা থাকে, তাঁদের স্বামী বা স্ত্রীরও সেই বিষয়ে দায়িত্ব থাকে। আপনাদের সম্পর্কে সেই ব্যবধানটি থাকলে, আপনারও পূর্ণ অধিকার আছে এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যাওয়ার। সেটি আপনার স্বামীকে জানান।
শেষে বলা দরকার, সব কথা চিঠিত🌸ে লিখে বা এভাবে সংযোগ স্থান করে বোঝানো যায় না। তাই কোনও সম্পর্কবিদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তাঁর পারমর্শ নিন।