লাদাখের ভারত-চিন সীমান্তে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর টহলদারি চালিয়ে যাওয়া নিয়ে নয়া দিল্লি ও বেজিংয়ের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে, তা নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলল কংগ্রেস। তাদের প্রশ্ন, লাল ফৌজ এগিয়ে আসার ফলে যে টুকরো-টুকরো এলাকাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল, সেই 'পকেট'গুলিতেও টহল চালাতে পারবে তো ভারতীয় সেনাবাহিনী?
বুধবার এই বিষয়টি উত্থাপন করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক (যোগাযোগ) জয়রাম রমেশ। তাতে, এ নিয়ে মোট ছ'টি প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর আবেদন, এই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে দেশকে অবগত করা হোক এবং প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়া হোক।
জয়রামের প্রশ্নগুলির মধ্যে অন্যতম - ভারতীয় বাহিনী কি আগের মতো দেপসাংয়ের পাঁচটি পেট্রলিং পয়েন্ট পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে? যেমনটা তারা আগে পারত? এবং যেমনটা ভারত সরকার দাবি করছে?
ভারতীয় সেনা কি দেমচকের তিনটি পেট্রলিং পয়েন্টে পর্যন্ত টহল দিতে পারবে? কারণ, গত প্রায় চার বছর ধরে ওই এলাকা নাগালের বাইরেই থেকে গিয়েছে।
এছাড়াও, আগে প্যাংগং সো-এর ফিঙ্গার-৮ পর্যন্ত এগিয়ে যেতে পারত ভারতীয় সেনা। কিন্তু, পরবর্তীতে তাদের ফিঙ্গার-৩ পয়েন্টেই আটকে দেওয়া হয়। সেটা কি আগামী দিনেও চলবে?
উল্লেখ্য, গত ২১ অক্টোবর ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শংকর এবং বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্ত্রী ঘোষণা করেন, দেপসাং এবং দেমচকে এত দিন ধরে যে বিরোধ চলছিল, তা মেটানোর পথে বড় সাফল্য এসেছে। এবং তাতে ভারত ও চিন, দুই পক্ষই সহমত হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে, কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের প্রশ্ন হল, গোগরা উষ্ণ প্রস্রবণ এলাকায় আগে যে তিনটি পয়েন্ট পর্যন্ত ভারতীয় সেনাবাহিনী টহল দিতে যেত, তারা কি আবার সেই পর্যন্ত যেতে পারবে?
জয়রাম আরও জানতে চান, ভারতের বাহিনীর সদস্যরা কি হেলমেট টপ, মুকপা রে, রেজাং লা, রিচেন লা, টেবল টপ এবং চুশুলের গুরুং হিলের ঐতিহ্যবাহী চারণভূমিতে প্রবেশ করতে পারবে? তাহলে কি সেই 'বাফার জোনগুলি', যেগুলি সরকার কার্যত 'চিনাদের হাতে তুলে দিয়েছিল', সেসব এখন অতীত?
কংগ্রেসের বক্তব্য হল, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের আগে পর্যন্ত ওই অঞ্চলে পরিস্থিতি ঠিক যেমনটা ছিল, সেই অবস্থা কি পুরোপুরি ফিরে এসেছে? যদিও মঙ্গলবারই ভারতের সেনাপ্রধান দাবি করেছিলেন, ভারত ওই অঞ্চলে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের আগেকার পরিস্থিতিই পুনরায় স্থাপিত করতে চায়।
এমনকী, তিনি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতীয় সেনা ও চিনা ফৌজের মধ্য়ে পারস্পরিক বিশ্বাসযোগ্যতা গড়ে তোলার পক্ষেও সওয়াল করেছিলেন।