ভালোমতোই বৃষ্টি হচ্ছিল। দৃশ্যমানতা ছিল ২,০০০ মিটারের মতো। আর সেই সময় ঘটে দুর্ঘটনা। কোঝিকোড় বিমানবন্দরে নামতে গিয়ে পিছলে যায় এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের বোয়িং ৭৩৭ বিমান। ৩৫ ফুট গভীর খাদে পড়ে গিয়ে দু'টুকরো হয়ে যায় সেটি। দুর্ঘটনায় মৃত্যু💞 হয়েছে কমপক্ষে ২০ জনের।
ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশনের (ডিজিসিএ) প্রধান অরুণ কুমার বলেন, ‘এটা এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের দুবাই থেকে কোঝিকোড়ের বিমান ছিল। বেশি গতিতে সেটি অবতরণের চেষ্টা করে, রানওয়ে থেকে ছিটকে যায় এবং একটি উপত্যকায় পড়ে 🌟যায়।’
বিমানের গতিবিধিতে নজরদারি চালানো ওয়েবসাইট FlightRadar24-এর তথ্য অনু꧋যায়ী, দু'জন পাইলট, চারজন বিমানকর্মী-সহ ১৯০ জনকে নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় বিমানটি দু'বার কোঝিকোড় বিমানবন্দর🦋ের উপর চক্কর কাটে। দ্বিতীয়বার মাত্র ২,০০০ ফুট দূর থেকে বিমানের মুখ ঘুরিয়ে চলে যান পাইলটরা। অবশেষে তৃতীয়বারের চেষ্টায় নামতে গিয়ে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে বোয়িং ৭৩৭।
বিমানের পরিভাষায় কোঝিকোড়𝄹 বিমানবন্দর 'টেবলটপ' হিসেবে পরিচিত। অর্থাৎ এই বিমানবন্দরগুলির ক্ষেত্রে পাহাড় বা মালভূমি কেটে রানওয়ে তৈরি করা হয়। রানওয়ের দৈর্ঘ্যও ছোটো হয়। আর স্বল্পদৈর্ঘ্যের রানওয়ের শেষেই থাকে খাদ। স্বভাবতই সেখানে বিমান অবতরণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তার মধ্যে বৃষ্টি হলে ঝুঁকির মাত্রা আরও বেড়ে যায়। কোঝিকোড় বিমানবন্দরের ১০ নম্বর রানওয়ের (যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে) দৈর্ঘ্য ২,৮৫০ মিটার। দেশের সবথেকে বড় রানওয়ে তথা দিল্লি বিমানবন্দরের ২৯/১১ রানও🤪য়েের দৈর্ঘ্য ৪,৪৩০ মিটার।
বিমান সুরক্ষা পরামর্শদাতা মোহন রঙ্গননাথন জানিয়েছেন, সেফ ল্যান্ডিংয়ের (সুরক্ষিত অবতরণ) জন্য কোঝিকোড় বিমানবন্দরের রানওয়ের দু'পাশে প্রয়োজনীয় জায়গা নেই। বোয়িং 💯৭৩৭ বিমানের প্রাক্তন উপদেষ্টা বলেন, ‘কালিকট (কোঝিকোড় বিমানবন্দর এই 𓃲নামেও পরিচিত) রানওয়ের কোনও দিকেই বাধ্যতামূলক ১৫৫ মিটারের সাইড ট্রিপ এবং ৭০ মিটারের ড্রপ নেই। আমরা, সিভিল অ্যাভিয়েশন সেফটি অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল ১০ বছর আগেই কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছিলাম যে বৃষ্টির সময় অবতরণের ক্ষেত্রে রানওয়ে অত্যন্ত বিপজ্জনক।’ ওই বিমান সুরক্ষা পরামর্শদাতা ভিজে রানওয়েতে বিমান অবতরণের প্রশিক্ষণের বিশেষজ্ঞ।
নাম গোপন রাখার শর্তে মুম্বইয়ের এক উচ্চপদস্থ এয়ার ট্꧑র্যাফিক কন্ট্রোলার জানিয়েছেন, প্রবল বৃষ্টির মধ্যে অবতরণের সময় দৃশ্যমানতা ছিল ২,০০০ মিটার। যা খারাপ বলে বিবেচিত হয় না। তিনি বলেন, ‘(রানওয়ের) শেষে খাদ খুব বেশি গভীর নয় এবং সেটা দিয়ে একটা রাস্তা যায়। বিমান অবতরণ হচ্ছে উড়ানের শক্তির নিয়ন্ত্রণ করা। সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বায়ুমণ্ডলের ঝঞ্জাট (বিদ্যুৎ চমকানো বা অন্যান্য কারণে বায়ুমণ্ডলের ঝঞ্জাট হয়)।' তিনি আরও জানান, বিমানের শক্তি নিয়ন্ত্রণে পাইলটকে সহায়তা করে বিমানের সামনের দিক থেকে আসা বায়ু এবং রানওয়ের অব♚স্থা, যাতে ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে অবতরণের গতি থেকে উড়ানটি থেমে যেতে পারে। কিন্তু বায়ুমণ্ডলের ঝঞ্জাট হলে দুর্ঘটনা হতে পারে। তিনি বলেন, ‘এটার অর্থ হল যে অবতরণের মাত্র মিনিটখানেক আগে রানওয়ে দেখতে পেয়েছেন পাইলট, যা বেশ চ্যালেঞ্জিং।’