ব্যবসায়ী হিরানন্দানিকে যে তিনি নিজের সাংসদ পোর্টালের লগইন আইডি দিয়েছিলেন, তা নিজেই স্বীকার করেছেন মহুয়া মৈত্র। এই আবহে আজকে সংসদের এথিক্স কমিটির সামনে হাজির হবেন মহুয়া। তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়া এবং জাতীয় সুরক্ষাকে লঘু কার অভিযোগ। এরই মাঝে সংবাদসংস্থা পিটিআই-এর রিপোর্টে দাবি করা হল, দুবাই থেকে নাকি মহুয়ার সংসদীয় অ্যাকাউন্টে ৪৭ বার লগইন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, হিরানন্দানি দুবাইতেই থাকেন। (আরও পড়ুন: ভোটে 'কালো টাকা' রুখত𒀰েই আনা হয়েছে নির্বাচনী বন্ড, সুপ্রিম কোর্টে বলল কেন্দ্র)
এর আগে একাধিক সাক্ষাৎকারে মহুয়া মৈত্র স্বীকার করেন, হিরনন্দানির কাছে তাঁর সাংসদ লগইন রয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তিনি উড়িয়ে দেন। মহুয়া বলেন, 'হিরানন্দানির কাছে আমার সাংসদ লগইন আইডি আছে। তবে এনআইসি লগইনের এমন কোনও নিময় নেই যে অন্য কাউকে তা দেওয়া যাবে না। সংসদের কাছে সেই সব প্রশ্ন আসে। কোনও সাংসদই নিজে সব প্রশ্ন করে না। তাঁর বৃহত্তর দলের কাছে এই আইডি থাকে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমি বিদেশিকে দিয়েছিল লগইন 🐈আইডি। হিরানন্দানি আমার বন্ধু ছিলেন। এবং তিনি ভারতীয়। তাঁর পাস𒁃পোর্ট ভারতীয়। আমি নিজে সুইৎজারল্যান্ডে থাকাকালীন লগইন করেছি। আমার দিদির সন্তান কেমব্রিজ থেকে লগইন করেছে। সেখানে আমার হয়ে সে প্রশ্ন টাইপ করে দিয়েছে। এনআইসি-র পোর্টাল যদি এতই সুরক্ষিত ছিল, তাহলে অন্য আইপি অ্যাডরেস থেকে লগইন করার ক্ষেত্রে তা ব্লক করে দেওয়া উচিত।'
উল্লেখ্য, এর আগে সিবিআই-এর কাছে মহুয়ার বিরুদ্ধে 'টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন' করার মামলায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন মহুয়ার প্রাক্তন বন্ধু জয় অনন্ত দেহদরাই এবং বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। এদিকে এই বিতর্ক নিয়𓄧ে হলফনামা দিয়েছেন শিল্পগোষ্ঠী হিরানন্দানির সিইও দর্শন হিরানন্দানি। তাতে আরও চাপে পড়েছেন মহুয়া মৈত্র। হলফনামায় হিরানন্দানি দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বদনাম করতে আদানি গ্রুপকে নিশানা করেছিলেন মহুয়া। আদানি গোষ্ঠীকে চাপে ফেলার মতো প্রশ্ন তৈরি করে দেওয়ার জন্য নাকি হিরানন্দানিকে সংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন মহুয়া। হলফনামা অনুযায়ী, দর্শন হিরানন্দানির দাবি, আদানি গোষ্ঠীকে চাপে ফেলার মতো প্রশ্ন তৈরি করে দেওয়ার জন্য তাঁকে সংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন। পরিবর্তে তাঁর থেকে মহুয়া বিলাসবহুল জিনিসপত্র নিতেন। হিরানন্দানি দাবি করেছেন, খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আক্রমণ করার পথ বেছে নেন মহুয়া। কিন্তু স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কারণে নীতি সংক্রান্ত বিষয়, প্রশাসনিক বিষয়ে মোদীকে আক্রমণের সুযোগ পাননি মহুয়া। সেজন্য আদানি গোষ্ঠীর মাধ্যমে মহুয়া প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আক্রমণের পন্থা বেছে নে♉ন।
হিরানন্দানি দাবি করেছেন, ২০১৭ সালে বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মহুয়ার সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল তাঁর। সেইসময় বিধায়ক ছিলেন মহুয়া। ২০১৯ সালে সাংসদ হন মহুয়া। সেই সময় ব্যবসায়িক 'দ্বন্দ্ব' চলছিল আদানি এবং হিরানন্দনিদের মধ্যে। দর্শনের সংস্থার সঙ্গে চুক্তি না করে আদানি গোষ্ঠীর ধর্মা এলএনজির সঙ্গে চুক্তি করেছিল ইন্ডিয়ান অয়েল। এই আবহে আদানির বিরুদ্ধে প্রশ্নমালা তৈরি কে দেওয়ার জন্য দর্শনকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন মহুয়া। এর জন্য তাঁকে সংসদের লগইন আইডি এবং পাসও🍷য়ার্ড দিয়েছিলেন মহুয়া। হলফনামায় দাবি কর হয়, ক্রমেই মহুয়ার সঙ্গে হিরানন্দনির সম্পর্ক ভালো হতে থাকে। পরে তাঁর থেকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া করতে থাকেন মহুয়া। তাঁর ওপর নাকি মহুয়া চাপও সৃষ্টি করেছিলেন। এই আবহে মহুয়ার কথা মতো চলতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু এখন বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হওয়ায় তিনি নিজে থেকেই মুখ খুলেছেন বলে দাবি করেছেন হিরানন্দানি।