বিগত প্রায় তিন মাস ধরে জাতিগত হিংসায় উত্তপ্ত মণিপুর। দুই জাতির সংঘর্ষে একাধিক ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি তারই এক নিদর্শন সামনে এসেছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল একটি ভিডিয়ো। যাতে দেখা গিয়েছিল, দুই মহিলাকে নগ্ন করিয়ে ঘোরানো হচ্ছে রাস্তায়। পরে তাঁদের মাঠে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অভিযোগ, তাঁদের গণধর্ষণ করা হয়েছিল। সেই ঘটনা ঘটেছিল গত ৪ মে। ঘটনার ৭৭ দিন পর পরশু এই মামলায় প্রথম গ্রেফতারཧি হয়। আর সেই একই দিনে, অর্থাৎ, ৪ মে মণিপꦅুরের রাজধানীতে দুই যুবতীকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। আর সেই মামলায় আজও কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
উল্লেখ্য, মণিপুরে মহিলাদের বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘোরানোর ঘটনায় নির্যাতিতারা ছিল কুকি সম্প্রদায়ের। আর ইম্ফলে খুন হওয়া দুই যুবতীও কুকি সম্প্রদায়েরই। এই ক্ষেত্রেও অভিযোগ উঠেছে মৈতৈদের বিরুদ্ধে। মৃত দুই তরুণীর বাবার দায়ের করা এফআইআর অনুযায়ী, তাদের বয়স ২১ এবং ২৪ বছর। ইম্ফলে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন দুই বোন। ৪ 💜মে তাঁদের ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতীরা। এরপর চলে তাণ্ডবলীলা। শেষে খুন করা হয় দু'জনকেই। এদিকে অভিযোগকারী বাবা হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন, তাঁর মৃত মেয়েদের এক মৈতৈ বন্ধুই তাঁকে ঘটনার বিবরণ দেন। এরপরই তিনি বিস্তারিত জানিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তবে পুলিশ এই মামলায় নিষ্ক্রিয়ই থেকেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে দুই মেয়ের দেহ এখনও সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিযোগকারী বাবা।
উল্লেখ্য, গত ৩ মে থেকে জাতিগত হিংসার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পর♕িস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। অভিযোগ উঠেছে কুকি ‘জঙ্গিরা’ অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই আবহে কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে সেই রাজ্যে।
প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হল মৈতৈ জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছে যে তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধ জানিয়েছে স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসীরা। এই আবহে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়। এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই আবহে গত এপ্রিল মাসে এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। এদিকে এই জেলা থেকে আদিবাসী বনাম মৈতৈদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও। আর এখনও পর্যন্ত সেই হিংস💫া প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক মানুষ।