বিশ্ব উষ্ণায়নের জের। প্রতি বছরই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। আর তার জেরেই একের পর এক হিমবাহ গলে যা🌜চ্ছে। হিমাচল প্রদেশের উত্তর দিকে অবস্থিত হিমালয়ের ছোট শিগরি হিমবাহকে প্রতি বছরই গবেষকদল গিয়ে পরীক্ষা করে দেখে আসছে। তাঁরা সেখানে গিয়ে বরফ ঢাকা জায়গা মাপছেন, সঙ্গে মাটির তাপমাত্রা এবং বাতাসের তাপমাত্রাও মেপে আসছেন। একই সঙ্গে সেই অঞ্চলে অবস্থিত নদীগুলোর জলের নাব্যতা মাপছেন।
এই বছর পরীক্ষা করতে গিয়ে তাঁরা দেখেছেন যে এই হিমবাহ ꧙ভয়াবহ হারে গলে গিয়েছে, এমনকি সেখানে ♛অবস্থিত যে মেজারিং স্টেশন ছিল সেটা অবধি জলে ধুয়ে বয়ে গিয়েছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন যে তাঁরা জুন মাসে এই স্টেশনটি স্থাপন করে আসেন সেখানকার খুঁটিনাটি বিষয় রেকর্ড করার জন্য। কিন্তু অগস্টে গিয়ে সেই স্টেশনের সামান্যতম অংশ পাওয়া যায়নি। মোহাম্মদ ফারুক আজম, আইআইটি ইন্দোরের গবেষক জানান, গত ১০০ বছরের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে ফেলেছিল এই বছরের গরম। এপ্রিল মে মাসে দেশে যে প্রচণ্ড গরম পড়েছিল এবং তাপপ্রবাহ চলেছিল সেটার কারণেই এই হিমবাহ গলে গিয়েছে বলে মনে করছেন ꧒তাঁরা। তবে শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্ব জুড়েই ভয়াবহ তাপপ্রবাহ চলেছে এই বছর, তার কারণে হিমালয়ের একাধিক হিমবাহের সঙ্গে ইউরোপের আল্পসের বহু হিমবাহ গলে গিয়েছে। বাদ যায়নি উত্তর এবং দক্ষিণ মেরু।
এর আগে যেমনটা মনে করা হয়েছিল তার থেকে অনেক বেশি দ্রুত গতিতে হিমালয়ের সমস্ত হিমবাহ গলে য𝓰াচ্ছে বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে। এর ফলে গোটা সিস্টেমটাই নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে, সেটা বায়ুমণ্ডল হোক বা জল চক্র সব কিছুই প্রভাবিত হচ্ছে🌌 এর কারণে।
আর হিমালয়ের হিমবাহ গলার কারণে সব থেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ছে পাকিস্তান। জুন মাস থেকে এখনও অ🧔বধি হাজার জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছে। ৩০ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বহু শহর, গ্রাম, চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেক বেড়ে গিয়েছে আগের থেকে। সবটা মিলিয়ে একটা জলবায়ু বিপর্যয়ে🧔র শিকার হয়েছে ভারতের এই পড়শি দেশ। তবে বলে রাখা ভাল এটা সবে শুরু!
অতিরিক্ত বন্যাও অনেক সময় খরা ডেকে আনে। সিন্ধু নদী, 🌞যার উৎস তিব্বতে সেটাই পাকিস্তানের বন্যার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু হলে কী হবে, বন্যা হলে সেটার অধিকাংশ জল মাটির নিচে প্রবেশ করার বদলে, মাটির নিচের জলের স্তর বাড়ার বদলে সেটা পানীয় জলের উৎস দূষিত করে সোজা সমুদ্রে গিয়ে মিশেছে।
বিশ্ব ব্যাংকের হিসেব অনুযা🧸য়ী ২০৫০ এর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার ১.৫ থেকে ১.৭ বিলিয়ন মানুষ জলসংকটের মুখোমুখি হবেন। এদিকে যেমন বন্যা বাড়ছে অন্যদিকে তেমনই খরা দেখা দিচ্ছে। ফলে সবটা মিলিয়েই জলবায়ু পরিবর্তনের ছবিটা দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে।
হিমালয়, কারাকোরাম এবং হিন্দুকুশ পর্বতের ৫৫,০০০ হিমবাহ এবং তার থেকে উৎপত্তি হওয়া নদীগুলোর উপর নির্ভর করে ১.৩ বিলিয়ন মানুষ। যে সিস্টেম বিশ্বের জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করে তাকে বাঁচানো প্রয়োজন কারণ মনে রাখতে হবে বিজ্ঞানের প্রতিটা জিনিস একে 𝔉অন্যের সঙ্গে জড়িত, উদাহরণস্বরূপ বলা যায় সমুদ্রের জলস্তর এবং জল চক্রের কথা। আর এই দুটোই আমাদের জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করে।
পাকিস্তান কিন্তু গোটা বিশ্বের গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমনের মাত্র ১ শতাংশ উৎপাদন করে, কিন্তু জলবায়ুর কারণে এই দেশের অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। পাকিস্তানকে এখনই সচেতন হতে হবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিভ♛িন্ন প্রভা🌌বের সঙ্গে কী করে মোকাবিলা করা যায় সেটা ভেবে বের করে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। নইলে আগামীতে আরও ভয়াবহ বিপদ হতে পারে।