অসুস্থতার কারণে অতীতের অধিকাংশ স্মৃতিই মন থেকে পুরোপুরি মুছে গিয়েছে মহম্মদ হাবিবের, তবে তি🍨নি এখনও ভুলতে পারেননি পেলের বিরুদ্ধে খেলার মুহূ্র্ত। অন্যদিকে ফুটবল সম্রাট আর নেই এই খবরটা শোনার পর থেকেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা তারকা সুব্রত ভট্টাচার্য। ফুটবল সম্রাটের বিরুদ্ধে খেলার স্মরণীয় মুহূর্ত গুলো আজও তাদের কাছে টাটকা রয়ে🌌ছে। এটা যেন তাদের ফুটবলজীবনের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি ছিল। তারা কাছ থেকে মুগ্ধ হয়ে দেখেছিলেন পেলের পায়ের জাদু।
আরও পড়ুন… হাল ছেড়ো না বন্ধু- কীভাবে꧑ নিজ🐟েকে মোটিভেট করতেন, প্রত্যাবর্তনের পর জানালেন পেসার শিখা পান্ডে
আসলে সালটা ছিল ১৯৭৭। মোহনবাগানের অধিনায়ক ছিলেন সুব্রত ভট্টাচার্য। সেই সময়ে সবুজ মেরুন দলে ছিলেন শ্যাম থাপা, সুধীর কর্মকার, মহম্মদ হাবিব, মহম্মদ আকবর, গৌতম সরকারের মতো তারকারা। দুর্দান্ত দলের 🅠কোচিং দায়িত্বে ছিলেন প্রদীপ কুমার (পিকে) বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ব্যাক্তিত্ব। কিন্তু মরশুমের শুরুতেই বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল মোহনবাগান, কোচিতে ফেডারেশন কাপে আইটিআই-এর কাছে হারতে হয়েছিল তাদের, তার পরে কলকাতা লিগের ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গল হারিয়েছিল। মানসিক ভাবে আমরা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিল বাগানের ফুটবলাররা। কারণ তা🧸রপরেই তাদের খেলতে হত ডুরান্ড, রোভার্স-সহ একাধিক প্রতিযোগিতা। তার মধ্যেই খবর এসেছিল যে মোহনবাগানকে খেলতে হবে ফুটবল সম্রাট পেলের বিরুদ্ধে, নিউ ইয়র্ক কসমসের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন… Peleജ has died: প্রয়াত হলেনꩲ ‘সম্রাট’ পেলে - আর দেখা যাবে না বিশ্ব ফুটবলের সেরা হাসি
এরপরেই শুরু হয়েছিল লড়াই-এর প্রস্তুতি। সেই সময়ে বাগান ফুটবলাℱররা কী ভাবে নিজেদের তৈরি করেছিলেন। কেমন ভাবে পেলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছিলে෴ন সেই সব কথা আজও মনে রয়েছে মহম্মদ হাবিব ও সুব্রত ভট্টাচার্যের। পেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে তারা দুজনেই বেশ হতাশ হয়েছেন। আজকের দিনে ১৯৭৭ সালের কথা মনে পড়ে গেল তাদের।
পেলের সঙ্গে ম্যাচ খেলার খবর পেয়ে সুব্রত ভট্টাচার্যরা কী করেছিলেন সেটাই বলেন বাগানের সেই সময়কার অধিনায়ক। সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ‘শুরু হল আমাদের পেলেকে আটকানোর বিশেষ প্রস্তুতি। অনুশীলন শেষ করে বাকি ফুটবলাররা ড্রেসিংরুমে ফℱিরে গেলেও আমি হাবিবদা ও আকবর পড়ে থাকতাম মাঠে। জল ঢেলে দিয়ে ওদের বলতাম বল নিয়ে বক্সে ঢোকার চেষ্টা করো, আমি আটকাব। দিনের পর দিন আমরা এই অনুশীলন করার উপকার পেয়েছিলাম ম্যাচের দিন। ইডেনে সে দিন পেলেকে বল নিয়ে একবারও ঘুরতে দিইনি আমি। অবিশ্বাস্য খেলেছিল হাবিবদাও। সারাক্ষণ পেলের সঙ্গে ছায়ার মতো ঘুরছিল। বল ধরলেই ঝাঁপিয়ে পড়ছিল কেড়ে নেওয়ার জন্য। ২-২ গোলে ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে অদ্ভুত তৃপ্তি হচ্ছিল। চিৎকার করে ধীরেনদাকে বলেছিলাম, ফুটবল সম্রাটের দলকে আমরা আটকাতে পেরেছি। মোহনবাগানের সম্মান নষ্ট হতে দিইনি।’
পেলের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে নিজের লড়াকু মানসিকতার কথা বলেন মহম্মদ হাবিব। তিনি বলেন, ‘ফুটবলজীবনে আমি কখনওই প্রতিপক্ষকে সমীহ করিনি। ফুটবল মাঠকে আমি মনে করতাম রণাঙ্গন। বিপক্ষ দল আমাদের শত্রু। পেলের নিউ ইয়র্ক কসমসের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগেও আমার এই দর্শন বদলায়নি। মোহনবাগানে আমার সতীর্থদের যখন দেখলাম ফুটবল সম্রাটের সঙ্গে খেলার সুযোগ পেয়ে নিজেদের ধন্য মনে করছে, রাগে শরীরে জ্বালা ধরে গিয়েছিল। ফুটবলার পেলে আমার কাছেও প🙈ূজিত ছিলেন। মুগ্ধ হয়ে ফুটবল সম্রাটের খেলার অসংখ্য ভিডিয়ো দেখেছি। কিন্তু ধীরেনদা (মোহনবাগানের তৎকালীন সর্বময় কর্তা প্রয়াত ধীরেন দে) যখন বললেন, নিউ ইয়র্ক কসমসের হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে খেলতে কলকাতায় আসছেন পেলে, তখন থেকেই মনের মধ্যে আগুন জ্বলতে শুরু করেছিল। পেলে ফুটবল সম্রাট। বিশ্বের সর্বকালের শ্রেষ্ট ফুটবলার। কিন্তু ম্যাচে তিনি আমাদের প্রতিপক্ষই। মাঠে ওঁকে কোনও অবস্থাতেই ছাড়ব না।’
ম্যাচ শেষ হয়েছিল ২-২ ফলে। ম্যাচের পরে গ্র্যান্ড হোটেলে নৈশভোজে পেলেকে হাবিবের মানসিকতার কথা কেউ জানিয়েছিলেন। ফুটবল সম্রাট যা শুনে খুবই খুশি হয়েছিলেন। অনুবাদকের মাধ্যমে মহম্মদ হাবিবের মানসিকতার প্রশংসা করেছিলেন তিনি। হাবিবকে পেলে বলেছিলেন, ‘প্রতিপক্ষ যত শক্তিশালীই হোক না কেন, কখনও লড়াই বন্ধ করতে নেই। নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশও করা উচিত নয়। চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে হবে।’ এতদিন মারণ ব্যধির সঙ্গে চোখে চোখ রেখেই লড়াই করছিলেন পেলে। তবে শেষটায় বয়সের জন্য আর এই লড়াই🔴-এ সফল হতে পারেননি তিনি। তবে তাঁর ১৯৭৭ সালে আসা সেই স্মৃতি আজও টাটকা হয়ে রয়েছে মোহনবাগানের, কলকাতার তথা ভারতের।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।