করোনা সংকটের জেরে বিপদে পড়েছেন দেশের হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক।টাকা নেই🍃,খাবার নেই-মাইলের পর মাইল হাঁটছেন পরিযায়ীরা। এর মাঝেই সামনে এল আর এক পরিযায়ীর খবর। ঘানার ফুটবলার র্যান্ডি জুয়ান মুলারের দুরাবস্থার গল্প হার মানাবে ছবির চিত্রনাট্যকেও। মুম্বই এয়ারপোর্টে একটানা ৭৪ দিন ধরে বন্দি আফ্রিকার এই ফুটবলার।
কেরলের একটি স্থানীয় ক্লাবে ফুটবল খেলতে এসেছিল সে। গত বছর নভেম্বরে ছ মাসের ভিসা নিয়ে ভারতে আসে ২৩ বছর বসয়ী ঘানার এই ফুটবলার। করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হতে শুরু করলে মার্চের মাঝামাঝি দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেয় সে। কেরল থেকে ট্রেনে চেপে মুম্বই বিমানবন্দরে সে হাজির হয় ২১ মার্চ।টিকিট টাকা থাকলেও জানতে পারে করোনার জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে সমস্ত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তাই দেশে ফেরার সব রাস্তা আপতত বন্ধ। কিন্তু সেই সময় তাঁর পকেটে ছিল মাত্র ১০০০ টাকা। ছয় মাসের উপার্জনের অবশিষ্ট এই টাকা নেই কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়ে সে।ঠাঁই হয় মুম্বই এয়ারপোর্টেই। এরপর এইভাবেই একটানা ৭৩ দিন প্রায় আধপেটা বা অভুক্ত থেকেই দিন কেটেছে তাঁর। বাড়ি থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে এই পরিযায়ী ফুটবলারের কাহিনির সঙ্গে স্টিভেন স্পিলবার্গের 'দ্য টার্মিনাল' সিনেমার গল্পের মিল খুঁজে পেয়েছেন অনেকেই।
অবশেষে রবিবার ঘানার ফুটবলারের দুর্দশার কথা কানে পৌঁছায় মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের পুত্র, রাজ্যের মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরের কানে। যুব সেনা নেতা রাহুল কানালের উদ্যোগে র্যান্ডি জুয়ান মুলারকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বান্দ্রার একটি হোটেলে। আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল শুরু না হওয়া পর্যন্ত কিংবা ঘানা সরকারের সঙ্গে কথা বলে তাঁর জন্য কোনও বন্দোবস্ত না হওয়ার পর্যন্ত এখানেই থাকবেন মুলার। তাঁর সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য সরকার♓। যোগাযোগ করা হয়েছে ঘানা দূতাবাসের সঙ্গেও।
আশার আলো দেখতে🃏 পাচ্ছেন মুলার। বান্দ্রার সেই হোটেল থেকেই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি জানান, ‘বাড়ি এবার কাছে চলে এসেছে’। কার্যত অর্থহীন অবস্থায় এতগুলো দিন মুম্বই এয়ারপোর্টে কাটানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরের দিন একজন পুলিশ আমার ঘুম ভাঙাল। বলল এয়ারপোর্ট ছেড়ে চলে যেতে। কিন্তু আমার যাওয়ার ꦆকোনও জায়গা ছিল না। ট্রেন বন্ধ..কেরলে ফিরতে পারতাম না,অন্যদিকে হোটেলে থাকব সেই টাকাও ছিল না। ভেবেছিলাম এখানেই মরে যাব'।
এয়ারপোর্ট আধিকারিকরা তাঁকে অনেক সাহায্য করেছেন মেনে নিলেন মুলার। ‘বিমানবন্দরে যেখানেইꦍ একটু জায়গা পেয়েছি সেখানেই মাথা গুঁজে পড়েছিলাম এতদিন। ওখানকার দুই আধিকারিক জেপি এবং চন্দ্রা আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। আমারা ওঁনারাই খাবারের ব্যবস্থা করে দিতেন। কম্বল আর অনান্য বেশকিছু জিনিস দিয়েও এয়ারপোর্টের অনান্য আধিকারিকরা,কর্মচারীরা সাহায্য করেছে,আমার খেয়াল রেখেছে’। কঠিন সময়েও এই মানুষগুলোর সাহায্যে আপ্লুত ঘানার এই ফুটবলার।
দেশীয় বিমꦑান পরিষেবা এখন শুরু হয়ে যাওয়ায় এয়ারোপোর্টে থাকাটা কার্যত সম্ভব হয়ে পড়েছিল। আধিকারিকদের পরামর্শেই টুইট করে আদিত্য ঠাকরের দারস্থ হন মু꧅লার। তারপরই এই বিদেশি ফুটবলারদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ায় মহারাষ্ট্র সরকার।
ঘানার কুমাসিতে বাড়ি মুলারের। তিনি জানিয়েছেন, ‘একটা ম্যাচ খেললে দুই থেকে তিন হাজার টাকা পাওয়ার কথা ছিল কেরলের ওই ক্লাবে। কিন্তু কোনও ম্যাচ খেলতে পারিনি। এদিকে, এখানে এসে থাকা খাওয়ার জেরে আমার প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছিল। হাত💖ে টাকা ছিল না। আমার কোনও উপায়ই ছিল না বিমানবন্দরে থাকা ছাড়া’। তিনি আরও যোগ করে, এয়ারপোর্টে এক যাত্রী তাকে 'বি ইয়োর ওউন থেরাপিস্ট' বইটি দেন। সেই বই থেকেই অনুপ্রেরণা নেওয়া চেষ্টা করেছে মুলার।হতাশা কাটিয়ে বেঁচে থাক🍸বার লড়াইটা চালিয়ে গিয়েছে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।