পারমাণবিক শক্তিতে জোর দিতে চাইছে NTPC। ভারতের বৃহত্তম বিদ্যুত্ উত্পাদকদের লক্ষ্য কয়লা নির্ভর শক্তি থেকে ধীরে ধীরে সরে আসা। দীর্ঘ মেয়াদেই এই কাজ সম্ভব। আর তার পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে এখন থেকেই। সে♏ই বিষয়টি মাথায় রেখেই ২০৭০ সালের লম্বা লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞরা। আগামী ৫০ বছরের মধ্যে কার্বন নির্গমনের মাত্রা সম্পূর্ণ শূন্য করতে চাইছে ভার💖ত। আর সেই লক্ষ্য অর্জনের অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে পারমাণবিক বিদ্যুত্ উত্পাদনে জোর দেওয়া।
রাষ্ট্রয়াত্ত্ব সংস্থার লক্ষ্য, ২০৪০ সালের মধ্যেই ২০-৩০ গিগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুত্ উত্পাদন ক্ষমতা স্থাপন করা। এই বিষয়ে ওয়াকিবহাল সূত্রে মিলেছে এই খবর। তবে তিনি এটিও জানিয়েছেন যে এই লক্ষ্যমাত্রায় বদলও হতে পারে। তবে পারমাণবিক বিদ্যুতের পরিকাঠামো স্থাপনই যে NTPC-র আগামীর লক্ষ্য, তা ধরে নেওয়া যেতেই পারে। ভারতে বর্তমানে প্রায় ৬.৮ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ২২টি অপারেশনাল রিঅ্যাক্টর রয়েছে। আরও পড়ুন: ভারতের সবুজ ♚প্রকল༒্পে ১০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা জার্মানির
এনটিপিসি এই পরিকল্পনার অংশ হিসাবে SMR নামক ছোট স্কেলের মডুলার রিঅ্যাক্টর স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা করছে। NTPC-র এই পরিকল্পনা সম্পর্কে জ্ঞাত একাধিক আধিকারিক এমনট🌱া জানিয়েছেন। বর্তমানে NTPC-র মোট উত্পাদন ক্ষমতা ৭০ গিগাওয়াটের। এর মধ্যে ৮০%-এরও বেশি কয়লা চালিত। আর সেখানেই মূল সমস্যা। আগামিদিনে দেশ ও বিশ্বজুড়ে কয়লার ভাণ্ডার হ্রাস পাবে। কয়লার দাম বাড়তে থাকবে। তাছাড়া এর থেকে হওয়া বিপুল পরিমাণ দূষণের কথা 🐷কারও অজানা নয়।
এছাড়াও আগামিদিনে বৈদ্যুতিক গাড়িকেই ভবিষ্যত মনে কর🐼া হচ্ছে। 🃏সেক্ষেত্রে যানবাহন থেকে কার্বন নিঃসরণ অনেকটাই হ্রাস পাবে।কিন্তু বিদ্যুত্ উত্পাদনের প্রক্রিয়াতেই যদি সেই বিপুল পরিমাণে কার্বন নির্গমন চলতে থাকে, তাহলে আখেরে লাভ অনেক কম হবে।
এনটিপিসি ২০৩২ সালের মধ্ꦫযেই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার অনেকটা কমিয়ে আনতে চাইছে। মোট উত্পাদন ক্ষমতার প্রায় ৫০% স্তরে তা নামিয়ে আনার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৯০%-ই জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত। তবে শুধু পারমাণবিক শক্তি নয়। এর পাশাপাশি সৌর, বায়ু এবং জলবিদ্যুৎ প্রকল্পেও জোর দেওয়া হবে।
এর পাশাপাশি NTPC পূর্ব পরিকল্পনামাফিক নিউক্লি♒য়ার পাওয়ার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বড় প্রকল্পগুলিও জারি রাখবে। এই নিউক্লিয়ার পাওয়ার কর্পোরেশনই বর্তমানে ভারতের 𝓀সমস্ত পারমাণবিক উত্পাদন কেন্দ্রগুলির পরিচালনা করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিকের মতে, এনটিপিসি পারমাণবিক ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য মুম্বইতে ১৫ সদস্যের একটি দলও গঠন করেছে।
NTPC এবং নিউক্লিয়ার পাওয়ার কর্পোরেশনের কাছে এই বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধ করা হ🔥লেও আপাতত প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
এমনিতেই বিশ্বজুড়ে দেশগুলি কয়লাচালিত তাপবিদ্যুত্ উত্পাদনের প্রক্রিয়া থেকে সরে আসার চেষ্টা করছে। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে এশীয় এবং ইউরোপীয় দেশগুলি আরও বেশি করে এর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছে। দেশগুলির উপলব্ধি হয়েছে যে, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং অন্যান্য জ্বালানীর জোগানের উপর ন🌊ির্ভর করে বসে থাকা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ফলে দেশগুলি নিজেদের 'শক্তির স্বাধীনতা'কে আরও বেশি করে গুরুত্ব দিচ্ছে। আর সেই লক্ষ্যেই পারমাণবিক শক্তি নিয়ে বিভিন্ন দেশ নতুন করে উদ্যোগী হয়েছে। চিন, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলির প্রত্যেকেই আরও বেশি করে෴ পারমাণবিক চুল্লি তৈরি করতে চাইছে।
এনটিপিসি প্রাথমিক পর্যায়ে ১০০-৩০০ মেগাওয়াটের SMR তৈরি করꦑার কথা বিবেচনা করছে বলে জানা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের ছোট চুল্লি তুলনামূলকভাবে দ্রুত তৈরি করা যায়। তাছাড়া গ্রিডের প্রয়োজনীয়তা🔜র সঙ্গে খাপ খাওয়ানোও আরও সহজ হবে। একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে, যেখানে এখনও বিদ্যুত্ সরবরাহ, উত্পাদনে সমস্যা হয়, সেখানেও এগুলি স্থাপন করা যাবে।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কার্বন নির্গমনকারী দেশ ভার𝐆ত। তবে তার লক্ষ্য মোট কার্বন নির্গমন শূ্ন্য করার। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং আদানি গোষ্ঠী-সহ দেশের শীর্ষ সংস্থাগুলিও বর্তমানে সৌর, বায়ু এবং গ্রিন হাইড্রোজেনের মতো প্রকল্পগুলিত♏ে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে।
NTPC ২০২৩ সালের মার্চের মধ্যেই তার সবুজ শক্তির প্রচেষ্টায় বড় বিনিয়োগ আনার পরিকল্পনা করছে। এরপরে একটি IPO হতে পারে বলে সূত্রের খবর। আপাতত প্রাথমিক দরদাতাদের তালিকায় রয়েছে ব্রুকফিল্ড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট, কানাডা পেনশন প্ল্যান ইনভেস্টমেন্ট বোর্ড এবং আবুধাবি ন্যাশনাল এনার্জি কোম্পানির মতো বড় সংস্থা। আরও পড়ুন: ইলেকট্রিকের জন্য🃏 আর এক টাকাও খরচ হবে না, বাড়িতেই দরকারি বিদ্য⛄ুৎ উৎপাদন ব্যক্তির
SMR স্থাপনের বিষয়টি যদিও খুব বেশি 'কমন' বলা চলে না। বিশ্বব্যাপী এমন প্রকল্প খুবই কম। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার মতে, রাশিয়ার একটি পারমাণবিক প্রকল্পে দু'টি ৩৫ মেগাওয়াট চুল্লি রয়েছে। এ🐲মন আরও চুল্লি স্থাপনের কাজ চলছে পুতিনের দেশে। এছা🍬ড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, চিন এবং আর্জেন্টিনা-র মতো দেশগুলিতেও SMR প্রকল্প লাইসেন্সিং-এর পর্যায়ে রয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে ভারতেরও নাম উঠতে পারে সেই তালিকায়।