🔯 জয়বাবা ফেলুনাথ সিনেমাটি নিশ্চয়ই অনেকের মনে আছে। সেখানে ‘মছলি বাবা’র চরিত্র দেখা গিয়েছিল। যিনি ধরা পড়েছিলেন বারাণসীতে। ওটা ছিল সিনেমা। কিন্তু এবার বাস্তবে নাকি তেমন ঘটনা ঘটেছে। বাংলার ঘটনা কিন্তু সেই যোগ মিলছে বারাণসীর। আর অভিযুক্ত নাকি বৈষ্ণব সাধুর ছদ্মবেশে বারাণসীতে গা–ঢাকা দিয়ে রয়েছে। কিন্তু সে কে? নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বাঙ্কার কাণ্ডে অন্যতম সন্দেহভাজন সুশান্ত ঘোষ ওরফে ‘লাল’ বা ‘লাল্টু মহারাজ’ বারাণসীতে সাধুর ছদ্মবেশে রয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। আর তা থেকেই আবার মনে পড়ে যাচ্ছে, মছলি বাবার ছদ্মবেশে পাচারকারীর চরিত্র এবং জয়বাবা ফেলুনাথ সিনেমা।
🌳এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, বারাণসী থেকেই বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ নিয়ে আসত সুশান্ত ঘোষ ওরফে লাল্টু মহারাজ। আর তা বাংলাদেশে পাচার করতে কৃষ্ণগঞ্জ সীমান্তে পাঠানো হতো। বারাণসীতে সুশান্ত ঘোষের প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার স্থাবর সম্পত্তি আছে। সুশান্তের মা মায়া ঘোষ পুলিশকে জানান, তাঁর ছেলে বারাণসী অথবা বৃন্দাবনে সাধনায় মগ্ন। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ কে বলেন, ‘সুশান্ত ঘোষ এখন বারাণসীতেই আছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তার সম্পত্তির বিশদ বিবরণ হাতে এসেছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’ কদিন আগে বিএসএফ বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে কিছু দূরে, সিরাপ বোঝাই তিনটি এবং নির্মীয়মাণ একটি ‘বাঙ্কার’ খুঁজে পায়। এখন সুশান্ত ঘোষ বেপাত্তা।
আরও পড়ুন: দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ হাতির পিঠে ভ্রমণ, বেঙ্গল সাফারি পার্কে পর্যটকরা হতাশ
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, কৃষ্ণগঞ্জ থেকে শুরু করে উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে সুশান্ত ঘোষের স্থাবর সম্পত্তি ছড়িয়ে রয়েছে। নামে–বেনামে তা রয়েছে। এমনকী নিজের মা এবং ভাইয়ের নামেও সুশান্ত সম্পত্তি রেখেছে সুশান্ত ওরফে লাল্টু মহারাজ। এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি পাচারের টাকায় তৈরি হয়েছে। আগে সুশান্ত ঘোষের পরিবার থাকত লক্ষ্মীডাঙা এলাকায়। ১০ বছর আগে এই পরিবার কলেজপাড়ায় থাকা শুরু করে।🏅 ওই বাড়িতে ছোট মুদির দোকান ছিল। এরপর বেআইনি পথ ধরে সুশান্ত ঘোষ ফেঁপে–ফুলে ওঠে। তখন থেকেই নিজের নামে–বেনামে সম্পত্তি গড়ে তুলতে শুরু করে সুশান্ত।
পুলিশ হাতে তথ্য এসেছে, টুঙি এলাকায় নিজের নামে ১২ শতক, মায়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে ১২ শতক এবং ভাইয়ের সঙ্গে যৌথভাবে ১৩ শতক জমি কিনে রেখেছে সুশান্ত ঘোষ ওরফে লাল। একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান মিলছে। তবে তাতে বিশেষ টাকা নেই। কিন্তু ওই অ্যাকাউন্ট থেকে সুশান্ত তার শাগরেদ রাজীব মণ্ডলের অ্যাকাউন্টে ৮০ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছিল।✱ সেই টাকা দিয়েই বারাণসীতে জমি কেনা হয়। বারাণসীর এক আইনজীবী সুশান্তের নামে একটি জমির ‘গিফট ডিড’ পাঠান। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ২০ হাজার বোতল কাফ সিরাপ উদ্ধার হয় তিনটি গাড়ি থেকে। উত্তরপ্রদেশের ওই তিন গ্রেফতার হওয়া গাড়ির চালক পুলিশকে বলেছিল, কেমন করে নিষিদ্ধ কাফ সিরাপ বারাণসী থেকে নদিয়ায় আসে। এই ‘নেটওয়ার্ক’ পরিচালনা করত ভীমপুরের বাপন হালদার এবং কৃষ্ণগঞ্জ থানার ধরমপুরের রাজীব মণ্ডল।