বাঙালির অন্যতম পর্যটনস্থল মন্দারমণিতে রমরমা অবৈধ হোটেলের। পর্যটকদের চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে সমুদ্রের তীরে গড়ে উঠেছে অবৈধ হোটেল, রিসর্ট। এই নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি মন্দারমণি সংলগ্ন পুরুষোত্তমপুরে সমুদ্র উপকূলে অবৈধ ভাবে একটি হোম স্টে তৈরির ঘটনা স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আসে। এরপর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বন্ধ হয় নির্মাণ। আরও নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে শুক্রবার স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রবল বাধার মুখে পড়ল প্রশাসন। পরে নিজেরাই ভেঙে দেবেন প্রশাসনকে আশ্বাস দিয়েছেন বাসিন্দারা।কাঁথি প্রশাসনের নির্দেশ পেয়ে সক্রিয় হয় দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ। পর্ষদের পক্ষ থেকে চারটি বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এই নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধার মুখে পড়ে প্রশাসন। আটকে দেওয়া হয় বুলডোজার। পরে প্রশাসনকে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান তাঁরা নিজেরাই এই অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলবেন। মহকুমা শাসক শৌভিক ভট্টাচার্য বেলন, ‘সরকারি জমিতে হোম স্টে নির্মাণ করা হয়েছিল। কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেন খতিয়ে দেখে নির্মাণগুলি সরিয়ে দিতে। সেই মতো পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা তা ভাঙতে যায়। হোটেল মালিকরা অনুরোধ করেন তারাই এই নির্মাণ সরিয়ে দেবেন। যদি তাঁরা সরিয়ে না নেন সেক্ষেত্রে প্রশাসন ভেঙে দেবে।’চারটি অবৈধ হোম স্টে ভাঙার জন্য তৎপর হয় প্রশাসন। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আধিকারিক ভাঙতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধার মুখে পড়ে। শুরু হয় বচসা। প্রশাসনের বুলডোজারও আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরে বাসিন্দারা আশ্বাস দেন অবৈধ নির্মাণ তাঁরা নিজেরাই ভেঙে দেবেন। সেই আশ্বাস পেয়ে আধিকারিকরা ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আসেন। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের এক আধিকারিক বলেন, ‘মহাকুমা শাসক চারটি অবৈধ নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেইমতো প্রশাসনিক কর্তারা পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। পরে বাসিন্দারা আশ্বাস দেন তাঁরা নিজেরাই ভেঙে দেবেন নির্মাণ। সাতদিন দেখা হবে তারপর প্রশাসন নিজেই হস্তক্ষেপ করবে। ’মন্দারমণি বিচ হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সন্দীপন বিশ্বাস সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘এই ঘটনায় আমাদের সংগঠনের কেউ জড়িত নয়। এটা পুরুষোত্তমপুরের ঘটনা। ওখানে যে হোম স্টে বা হোটেলগুলি হয়েছে সেগুলো নতুন। সেগুলো প্রশাসন ভাঙলে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু পুরনোগুলো ভাঙলেই সমস্যা। আমাদের সমস্ত বৈধ কাগজ রয়েছে।’ তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামী সাতদিন অপেক্ষা করা হবে। তারপর নিজেরা অবৈধ নির্মাণগুলি ভেঙে দেবে।