গুরুর বিধান মেনে সারা রাত বন্ধ ঘরে ফেলে রাখা হয় মৃত শিশুকে। প্রাণ ফিরে আসবে এই আশাতেই টানা ১৮ ঘণ্টা ফেলে রাখা হয় শিশুটিকে। স্বাভাবিকভাবে শিশুটির প্রাণ ফিরে তো আসেইনি। উল্টে শিশুটির দেহ খুবলে খেয়েছে পিঁপড়েতে। সেইসঙ্গে বেরিয়েছে দুর্গন্ধ। আধুনিক যুগেও কুসংস্ক🔯ারচ্ছন্নতাকে আঁকড়ে ধরায় শিশুটির পরিবারের 𒀰সদস্যদের বিরুদ্ধে নিন্দায় মুখর হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২�𒅌�৪ পরগনার সুন্দপবন পুলিশ জেলার পাথরপ্রতিমায় ছোট রাক্ষসখালি গ্রামে। গত বুধবার পুকুরে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় গৌরব মাইতি নামে বছর দুয়েকের শিশুর। শিশুটিকে মাধবনগর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকে মৃত শিশুটিকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার পর পরিবারের লোকেরা শিশুটিকে বাঁচিয়ে তোলার জন্য কুসংস্কারের আশ্রয় নেয়। গ্রামেরই এক দম্পতিকে মণ্ডলী বলে চেনে সেখানকার বাসিন্দারা। সেই মণ্ডলীর গুরু বিধান দেন, মৃত শিশুটিকে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব। কিন্তু এর জন্য বিশেষ উপায় অবলম্বন করতে হবে। বিধান অনুযায়ী, মৃত শিশুটিকে অন্ধকারে ঘরের দরজা বন✃্ধ করে রেখে ধুপধুনো জ্বালিয়ে ফুল দিয়ে যীশুর কাছে প্রার্থনা করে। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে পুজো পর্ব চলার পর ঘরের দরজা বন꧟্ধ করে চলে যায় মণ্ডলী ও তার লোকজনরা। বলা হয়, সারা রাত যেন ঘরের দরজা না খোলা হয়। সকালে হলে মৃত শিশু নিজে থেকেই নাকি মা বলে ডাকবে।
কিন্তু সকাল হওয়ার পর শিশুটির কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। এরমধ্যে ১৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। বেলা গড়িয়ে যাওয়ার পরও শিশুটির কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরের দরজা খুলে ঢোকা হয়। দেখা যায়, শিশুটিকে পিঁপড়ের দল খুবলে খুবলে খেয়েছে। দেহꦫে পচন ধরতে শুরু করেছে। এরপরই মণ্ডলীর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। এই ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই মণ্ডলীর এক সাগরেদ জানান, মরা মানুষ তাঁরা বাঁচান না। অসুস্থ মা🍨নুষকে সুস্থ করে তোলা হয়। সেরকম নজির রয়েছে। শিশুটি যে মারা গিয়েছে, সেকথা তাঁরা জানতেন না। যদিও এলাকার গ্রামবাসীরা ক্ষোভের সুরেই জানান, ‘ধর্মের নামে এই ধরনের কুসংস্কার বন্ধ হোক। মণ্ডলীর বিধান মেনে এর আগে অসুস্থ অবস্থায় ওষুধ না খেয়ে অনেককেই ভুগতে হয়েছে। এই ঘটনায় যারা দোষী, তাঁদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’