মগরাহাট বিষমদ কাণ্ডে খোঁড়া বাদশাকে আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিল আলিপুর আদালত। যদিও সেই রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন খোঁড়া বাদশার আইনজীবী। যে মামলায় ২০১৮ সালে খোঁড়া বাদশার স্ত্রী শাকিলা বিবি, আয়ুব আলি লস্কর, মইনুদ্দিন গাজি-সহ কয়েকজনকে খালাস করে দেওয়া হয়েছিল। তবে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।২০১১ সালের ১৪ ডিসেম্বর মগরাহাটের সংগ্রামপুর, উস্তি এবং মন্দিরবাজার এলাকায় বিষমদ খেয়ে ১৭০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন কমপক্ষে ১০ জন। প্রাথমিকভাবে সংগ্রামপুরে একটি মামলা রুজু করা হয়েছিল। উস্তি থানায় দায়ের করা হয়েছিল দ্বিতীয় এফআইআর। যেখানে প্রায় ৫০ জন মারা গিয়েছিলেন। তৃতীয় এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল মন্দিরবাজার থানায়। তারইমধ্যে তদন্তভার হাতে নেয় সিআইডি। ৬০ দিনের মধ্যে দাখিল করা হয় চার্জশিট। তদন্তে উঠে আসে, আরও বেশি নেশার জন্য চোলাই মদে মিথাইল অ্যালকোহল-সহ বিভিন্ন বিষাক্ত রাসানয়িক মেশানো হয়েছিল। তারইমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছিল নুর ইসলাম ফকির ওরফে খোঁড়া বাদশার একাধিক সহযোগীকে। আত্মসমপর্ণ করে খোঁড়া বাদশাও। ২০১২ সাল থেকেই বিচারবিভাগীয় হেফাজতে আছে সে। শনিবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সোমবার আদালতে রায়দানের আগে মুক্তির আর্জি জানায় খোঁড়া বাদশা। দাবি করে, সে বিশেষভাবে সক্ষম এবং তিন সন্তান আছে। বিচারক পালটা প্রশ্ন করেন, সেক্ষেত্রে কাকে এতজনের মৃত্যুর জন্য দোষী হিসেবে বিবেচনা করা হবে? তা শুনে কেঁদে ফেলে খোঁড়া বাদশা।আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ের পর সরকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘এই রায়ে সমাজের কাছে কড়া বার্তা যাবে।’ যিনি বিষমদ কাণ্ডকে বিরল থেকে বিরলতম ঘটনা বলে উল্লেখ করে ফাঁসির সাজা চেয়েছিলেন। যদিও খোঁড়া বাদশার আইনজীবী রামপদ জানা বলেছেন, ‘আমার মক্কেল আদালতে জানিয়েছে যে সেই কারবার চালাত অন্যরা। সে নিজে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল না। আমরা কলকাতা হাইকোর্টে যান।’