🌞 সালটা ২০২১। মরশুম শীতকাল। বাংলার মাটিতে জন্ম নেয় আদৃত পাল নামের ছোট্ট শিশু। তারপর যখন বয়স তিন মাস হয় তখন থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই একরত্তি শিশু। এই বিশ্বের সৌন্দর্য বোঝার আগেই জীবন সংগ্রাম শুরু হয়ে যায় ওই শিশুটির। এই দিগন্ত বিস্তৃত নীল আকাশ অথবা পাখিদের কলতান ওই শিশুটি খাপ খাইয়ে উঠতে পারেনি। এমন সময়ে আদৃত পালের বাবা–মায়ের কাছে আসে এক হৃদয়বিদারক খবর। যা সব ওলটপালট করে দেয়। তাঁদের একমাত্র সন্তান মাত্র ৩ মাস বয়সে জটিল রোগে আক্রান্ত। শিশুটির হার্টে ধরা পড়েছে ছিদ্র। এই খবর ঘুম উড়িয়ে দিয়েছিল আদৃত পালের বাবা–মায়ের।
🙈তাঁদের জীবনে তখন একটা প্রশ্ন জেগে ওঠে, শিশুটি বাঁচবে তো? আদৃতের বাবা–মা, তাপস পাল এবং রুমা কর্মকার পাল এই খবর পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন। এই অবস্থায় চিকিৎসকরা হার্ট সার্জারির পরামর্শ দেন। কিন্তু রুমা কর্মকার পাল এবং তাপস পালের জন্য সেই সার্জারির ব্যয় সম্পূর্ণ ক্ষমতার বাইরে ছিল। অথচ চোখের সামনে দেখতে হচ্ছে আদৃতের অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে শুরু করেছে। তাঁরা অসহায় বোধ করতে থাকেন। আর তাঁদের জীবনে তখন আশঙ্কার কালো মেঘ এসে দাঁড়ায়। চোখের জল বের করা ছাড়া কিছুই করার ছিল না। কিন্তু মিরাকেল তো সবার জীবনে ঘটে না। যদিও সেটা ঘটে গেল আদৃত পালের জীবনে। আর তাতেই আদৃতের বাবা–মায়ের ভাগ্য বদলে যায় মুহূর্তে।
আরও পড়ুন: উপনির্বাচনেও বামের ভোট রামে যাওয়ার আশঙ্কা, তালড্যাংরা নিয়ে সতর্ক করলেন মলয়
এমন ঘটনা যে ঘটবে তা তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি। তাই তো উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির বাসিন্দা আদৃতের মা বলেনꦺ, ‘চিকিৎসকরা আমাদের বলেছিলেন যে, আদৃতের হার্টের ছিদ্র বড় হচ্ছে। কিন্তু আমাদের কাছে অস্ত্রোপচার করার মতো সামর্থ্য ছিল না। তখনই আমরা সনৎ দার কাছে গিয়ে সব কথা খুলে বলি। আর সনৎ দা শিশুসাথী কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। চলতি বছরের মে মাসে শেষ অস্ত্রোপচার হয়। এখন আমার সন্তান সম্পূর্ণ সুস্থ।’ কে এই সনৎ দা? সনৎ দে হলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। এবার নৈহাটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন। উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এই শিশুসাথী প্রকল্প বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরর একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। যাতে দরিদ্র শিশুদের জন্য বিনামূল্যে হার্টের অস্ত্রোপচারের সুযোগ রয়েছে। এই প্রকল্পের ফলে জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য পরিবারগুলিকে যেন আর্থিক দুশ্চিন্তার সম্মুখীন না হতে হয়। এই ঘটনার পর শিশুর বাবা তাপস পাল বলেছেন🗹, ‘অস্ত্রোপচারের পর সনৎ দা আমাদের বাড়ি ফেরার জন্য একটা গাড়ির ব্যবস্থাও করে দেন। আমাদের প্রয়োজনে পাশে থাকার জন্য আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ তাঁর প্রতি।’ এখন ৩ বছর বয়সী আদৃত পাল সুস্থ ও স্বাভাবিক হয়ে পাড়ার অন্যান্য শিশুদের মতো খেলছে। তাই শিশুর মায়ের কথায়, ‘আমাদের জন্য এত তৎপরতা ও সাহায্য করার জন্য সনৎ দাকে শুধু ধন্যবাদ জানানো যথেষ্ট হবে না। আমাদের আন্তরিক শ্রদ্ধা ও প্রণাম জানাই তাঁকে।’