ডিসেম্বরে অকাল বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আলু চাষে। চিন্তায় মাথায় হাত আলুচাষিদের। তারইমধ্যে নিম্নচাপ কাটতেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আলুর দাম। কৃষি দফতরের আধিকারিকদের দাবি, পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে রাজ্যের গুদামগুলোতে। তাহলে তার পরেও আলুর দাম কেন বাড়ছে? সেটাই এখন প্রশ্ন ব্যবসায়ীদের। যদিও ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, 'আলুর এই ক্রাইসিস ম্যান মেড। ' এরকম চলতে থাকলে আগামী কয়েকদিন আলুর দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। আর তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে কৃষি দফতরের। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, দিনকয়েক আগেই ৫০ কেজি বস্তার আলুর দাম ছিল ৭২০ টাকা। আর নিম্নচাপ কাটতেই ৫০ কেজি আলুর দাম ১০০ টাকা বেড়ে ৮২০ টাকা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, সাধারণত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আলু চাষ হয়। ফলে তার পর থেকেই আলুর দাম কমতে থাকে। কিন্তু বৃষ্টিতে আলু গাছ নষ্ট হয়েছে। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। পর্যাপ্ত আলো মজুত নেই দাবি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে আলুর।কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নিম্নচাপে জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং পূর্ব বর্ধমানে। পূর্ব বর্ধমানে এবছর ৪১ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। তবে বৃষ্টির ফলে ৩৬ হাজার ৭৫হেক্টর জমিতে আলু চাষ মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে।কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর পূর্ব বর্ধমান জেলার হিমঘরে এখনও পর্যন্ত ২০ লক্ষ কুইন্টাল আলু মজুত রয়েছে। ৭৭ টি হিমঘরে এই আলু মজুত রয়েছে। যা দিয়ে আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত আলুর চাহিদা মেটানো সম্ভব। ফলে জোগানে টান পড়ার কথা নয়। সাধারণত নভেম্বর পর্যন্ত আলু হিমঘরে রাখার সময় থাকলেও এ বছর তা বাড়িয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। ফলে এই পরিস্থিতি কীভাবে আলুর টান দেখা দিতে পারে? সেটাই এখন প্রশ্ন ব্যবসায়ীদের একাংশের। তাঁদের অনেকেই একে 'ম্যানমেড ক্রাইসিস ' বলে দাবি করছেন। প্রসঙ্গত, পূর্ব বর্ধমানের বাজারে এখন জ্যোতি আলুর দাম ১৪ টাকা থেকে বেড়ে প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ২৩ টাকা হয়েছে। অন্যদিকে চন্দ্রমুখী আলুর দাম ২০ টাকা থেকে প্রতি কেজিতে হয়েছে ২৫ থেকে ২৭ টাকা। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই আলু কিনতে গিয়ে টান পড়ছে মধ্যবিত্তের পকেটে।