শান্তিনিকতনের পৌষ মেলার দিনক্ষণ নিয়ে অবশেষে যাবতীয় জট কাটল। আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বসতে চলেছে পৌষ মেলা। আগের মতো শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লির মাঠেই হবে এই মেলা। এই নিয়ে গতকাল একটি বৈঠক করেছিলেন জেলাশাসক। উল্লেখ্য, গত তিনবছর ধরে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষ মেলার আয়োজন করেনি। এবারও তারা জানিয়েছিল, পৌষ মেলা আয়োজন করা সম্ভব হবে না তাদের পক্ষে। এরপরই মেলার আয়োজনে তৎপর হয় জেলা প্রশাসন। এই আবহে মঙ্গলবার সবপক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন জেলাশাসক। সেখানে ছিলেন জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট, আশ্রমিক, স্থানীয় ব্যবসায়ী, বিধায়ক, মন্ত্রী সকলেই। আর সেখানেই মেলা নিয়ে চূড়ান্ত সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর সেই মেলাতেই দেখা গেল তৃণমূলের 'মনোমালিন্য'। পৌষ মেলার বৈঠকে যোগ দিতে এসেও সেকেন্ডের মধ্যে জেলাশাসকের দফতর থেকে বেরিয়ে যান বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ।এদিকে গতকালকের বৈঠকে জেলাশাসক জানিয়েছেন, মেলার আয়োজনে বিশ্বভারতী, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট, বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠন সহযোগিতা করবে। অবশ্য মেলার মূল আয়োজক হবে জেলা প্রশাসন। উল্লেখ্য, গত তিন বছর ধরে পৌষ মেলা আয়োজনের দায়িত্ব এড়িয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই আবহে ২০২০ সাল থেকে বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে এবং জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় পৌষ মেলার আয়োজন করা হচ্ছিল। তবে এবার সরাসরি জেলা প্রশাসনই মেলার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিল।এদিকে গতকালকের বৈঠক ঘিরে অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল কংগ্রেস। গতকালকের বৈঠকে বীরভূমের জেলাশাসকের পাশে বসেছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। তাঁর পাশে বসেছিলেন জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। বিকাশবাবুর পাশের আসনটি ফাঁকা রাখা হয়েছিল। সেখানেই হয়ত বসার কথা ছিল কাজল শেখের। এর আগে সময় মতোই সভাকক্ষে ঢুকেছিলেন কাজল শেখ। সেই সময় বেশ হাসিখুশিই দেখিয়েছিল তাঁকে। তবে সভাকক্ষে প্রবেশের কয়েক মিনিট পরই গম্ভীর মুখে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। উল্লেখ্য, প্রোটোকল অনুযায়ী, জেলাশাসকের আসনের পাশে থাকার কথা জেলা সভাধিপতির। তবে কাজলের জন্য আসন রাখা হয়েছিল প্রাক্তন জেলা সভাধিপতির পাশে। এই আবহে বৈঠক স্থল থেকে বেরিয়ে আস নিয়ে কাজল শেখকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সংক্ষিপ্ত জবাবে বলেন, 'জেলাশাসককে জিজ্ঞাসা করুন।' এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, কাজল শেখ এদিন বৈঠকে ঢুকে বিকাশ রায়চৌধুরীর পাশের চেয়ারের কাছে যান। এরপর বিকাশ রায়চৌধুরীর দিকে হাত দেখিয়ে কিছু একটা বলেন। কিন্তু বিধায়ক কাজলের দিকে তাকিয়েও দেখেননি। এরপরই সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা গিয়েছিল কাজলকে।