নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়ে গেছে সপ্তাহ দুয়েক হতে চলল। কিন্তু, রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি বা সরকার পোষিত বিদ্যালয়গুলিতে এখনও পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে পাঠ্যবই এসে পৌঁছয়নি বলে সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে ফেব্রুয়ারির গোড়া থেকেই মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে, এর ফলে ঠিক কবে ছাত্রছাত্রীরা নতুন বইয়ের মুখ দেখবে, তা এখনই বলা কঠিন। এবছর লোকসভা নির্বাচনের জন্য মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা প্রায় তিন সপ্তাহ এগিয়ে এসেছে। ফেব্রুয়ারির গোড়া থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে, আর উচ্চমাধ্যমিক চলবে ১৬ থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীরা যদি এখনও নতুন বই না পায়, তাহলে সত্যিই সমস্যায় পড়বে ছাত্রছাত্রী থেকে শিক্ষকশিক্ষিকা সকলেই।অনেক স্কুলেই এই বোর্ড এক্সামগুলির সেন্টার হওয়ায় স্কুল ছুটি থাকে সেই সময়। তাই বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা টিচার ইনচার্জ এবং সাধারণ শিক্ষকশিক্ষিকারা যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যেকটি স্কুলে বই পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন। নদীয়ার ঘাটলা বিদ্যাপীঠের ইনচার্জ তথা সহকারী প্রধান শিক্ষক সুব্রত বাবু জানান, ‘আমাদের স্কুলে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির ন্যূনতম ৩০ শতাংশ পড়ুয়া এখনও নতুন পাঠ্যবই পাইনি, ফলে পঠন-পাঠন ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষা মিশনের নিষেধ সত্ত্বেও একান্ত বাধ্য হয়ে উঁচু ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের থেকে পুরনো বই নিয়ে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের দিতে হচ্ছে।’শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটি সংগঠনের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস জানাচ্ছেন, ‘জেলায় জেলায় চিত্রটা একই রকম। স্টুডেন্টস উইক পালনের পরও কেন বই পাওয়া গেল না, তা অজানা।’ পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণাংশ মিশ্রও জানাচ্ছেন, ‘আমাদের স্কুলে বেশ কিছু বাড়তি বই এসেছিল। একই সার্কেলের কয়েকটি স্কুলে বইয়ের অভাব রয়েছে বলে খবর। তার মধ্যে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফোন করে বই লোক পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় বই নিয়ে গিয়েছে।’তবে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের এই করুণ দশা মানতে নারাজ বিকাশ ভবন। বিকাশ ভবনের এক শীর্ষকর্তার যুক্তি, এমনটা হওয়ার কথা না। স্কুলগুলি বাংলা শিক্ষা পোর্টালে ক্লাস ভিত্তিক যত পড়ুয়ার নাম আপলোড করেছে, সেই মতোই পাঠ্যবই সরবরাহ করা হয়েছে। কোনও অসুবিধা থাকার কথাই নয়। তিনি জানান, ডিসেম্বর মাস জুড়ে ভার্চুয়াল বৈঠকে বারংবার এই বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে তাদের মধ্যে। তাহলে ঠিক কী কারণে সকল ছাত্রছাত্রীর কাছে তাদের প্রয়োজনীয় পাঠ্য বই পৌঁছল না, সেই উত্তর অধরা। কিন্তু সরকারি শিক্ষা পরিকাঠামো এবং ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন উঠল আরও একবার।