🌳 নগরায়ন এবং নির্মাণ কাজের ফলে প্রতিনিয়ত নির্মমভাবে কাটা হচ্ছে গাছ। তারফলে বাড়ছে দূষণ। তারওপর মাত্রতিক্ত প্লাস্টিকের ব্যবহরের ফলেও বাড়ছে দূষণ। তাই দূষণমুক্ত পৃথিবী গড়ার বার্তা দিতে পাহাড় থেকে সাগরের উদ্দেশ্যে হাঁটছেন এক বৃদ্ধ। সাধারণত দূষণমুক্ত পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে এর আগেও অনেক পরিবেশপ্রেমীকে পায়ে হেঁটে বহুদূর যাত্রা করতে দেখা গিয়েছে। তবে বছর ৬৫–এর সঞ্জীব দাসের যাত্রা একেবারে অভিনব। দার্জিলিং ম্যাল থেকে গঙ্গাসাগরের উদ্দেশ্যে তিনি পিছন দিক দিয়ে পায়ে হেঁটে আসছেন। তাঁর লক্ষ্য পূরণ হওয়ার পথে বাকি আর মাত্র কয়েক কিলোমিটার। তাহলেই তিনি গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যাবেন। বৃদ্ধ বয়সেও সবুজ পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে সঞ্জীব বাবুর এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই।
আরও পড়ুন: ꧙শুধু দূষণের জেরেই আড়াই লাখ মৃত্যু ইউরোপে! কীভাবে সতর্ক থাকতে বলছেন বিজ্ঞানীরা
🍷জানা গিয়েছে, সঞ্জীব বাবু এক সময় আইটিসিতে চাকরি করতেন। ৬০ বছর বয়সে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পরেই মানুষের জন্য কিছু কাজ করার চিন্তা ভাবনা আসে তাঁর মাথায়। এরপরে পরিবেশ বাঁচানোর চিন্তাভাবনা শুরু করেন তিনি। আর সেই লক্ষ্যেই তিনি বদ্ধপরিকর হন। ২০২১ সালে গঙ্গা দূষণ নিয়ে মানুষকে বার্তা দিতে উত্তরাখণ্ডের গঙ্গার উৎপত্তিস্থল গোমুখ গঙ্গোত্রী থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত ২০১০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে যাত্রা করেন। তবে সে ছিল সম্মুখ দিকে স্বাভাবিক হাঁটা। সেই যাত্রায় তাঁর সময় লেগেছিল ৯৮ দিন। কিন্তু, মানুষকে সচেতন করা লক্ষ্য হলেও সেই সময় তিনি খুব বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারেননি অনুভব করার পরেই ঠিক করেছিলেন যে দার্জিলিং থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত আবার পায়ে হেঁটে যাত্রা করবেন। তবে এবার সোজাভাবে নয় পিছন দিক দিয়ে হেঁটেই ৯৩০ কিলোমিটার পথ যাত্রা। সেই মতো তিনি যাত্রা শুরু করেন। অবাস্তব মনে হলেও সত্যি। আজ তাঁর সেই যাত্রা এখন শেষের পথে। আজ সকাল ১০টা নাগাদ তিনি নিশ্চিন্তপুরে পৌঁছে যান। লক্ষ্য মাত্রায় পৌছাতে আর মাত্র ৩৭ কিলোমিটার বাকি। এরপরে কাকদ্বীপ আট নম্বর ভেসেল ঘাট মাত্র ১২ কিলোমিটার। তারপর ভেসেল পেরিয়ে কচুবেড়িয়া থেকে কপিলমুনি মন্দির মাত্র ২৫ কিলোমিটার পথ।
🃏পিছন দিকে হাঁটার সময় যাতে সবকিছু দেখতে পারেন তার জন্য সঙ্গে রেখেছেন একটি আয়না। সেই আয়নার সাহায্যে পিছনের দৃশ্য দেখছেন তিনি। আর আয়নার মাধ্যমে পিছনের রাস্তা দেখে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে চলেছেন এই ব্যক্তি। তাঁর মূল বক্তব্য, তিনি সবুজ পৃথিবী দেখতে চান। সেই উদ্দেশ্যে সকল দেশবাসীকে প্লাস্টিক মুক্ত সবুজ পরিবেশ দেখার বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাইছেন। সঞ্জীব দাস বলেন, ‘আমি সবুজ পৃথিবী চাই। সেই লক্ষ্যে সমস্ত মানুষকে বার্তা দিতে দার্জিলিং ম্যাল থেকে পিছন দিক থেকে হেঁটে আসছি।’ তিনি কেন পিছন দিক থেকে হেঁটে আসছেন সে প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি চাই আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে। যাতে সবুজ পৃথিবী গড়ার বার্তা আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছয়। তার জন্য এই উদ্যোগ।’ সমস্ত মানুষের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, ‘কেউ জল অপচয় করবেন না, গাছ লাগান, কেউ প্লাস্টিক ব্যবহার করবেন না।’