সকাল থেকেই চাঁদি ফাটানো গরম। রাস্তায় বেরলে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। আর বাড়িতে থাকলে চরম অস্বস্তি। পাখার হাওয়া যেন গায়েই লাগছে না। সকলের বাড়িতে এসি নেই। তাই গরমকে সহ্য করেই দিন কাটাতে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছে ৪০ ডিগ্রির কাছে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস শুধু শহরবাসী করছে এমন নয়। গ্রীষ্মের দাবদাহ সহ্য করছে আলিপুর চিড়িয়াখানার বাঘ–সিংহ সহ অন্যান্য প্রাণীরাও। তাই বাড়তি যত্ন নেওয়া হচ্ছে তাদের। দহনের এই জ্বালা থেকে বাঁচাতে ভাল্লুক, ক্যাঙারুদের ঘরে চলছে কুলার। ফ্যানের হাওয়ায় মিটিমিটি চোখে তাকিয়ে আছে বাঘ–সিংহ। টকদই, লস্যি শিম্পাঞ্জির খাদ্যতালিকায় যোগ হয়েছে। পাখি এবং সাপের ঘরে ছেটানো হচ্ছে জল।
গরমে এখন যা অবস্থা তাতে সকালের পর রাস্তায় আর তেমন লোকজন দেখা যাচ্ছে না। যাঁরা বের হচ্ছেন তাঁদের নাক–মুখ ঢাকা। মাথায় ছাতা অথবা টুপি। হাতে জলের বোতল। এই অবস্থাতেই মানুষজনকে দেখা যাচ্ছে পথে। আর আলিপুর চিড়িয়াখানায় বাঘ–সিংহের পাতে মাংসের পরিমাণ কমানো হয়েছে। গরমকাল বলেই এই সিদ্ধান্ত। বরং ওআরএস এবং অ্যান্টি স্ট্রেস ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। পাখিদের খাঁচায় খসখস লাগানো হয়েছে। সাপেদের জায়গায় জল ছেটানো হচ্ছে। শিম্পাঞ্জিরা এখন শসা, তরমুজ খাচ্ছে। ফলের জুস, লস্যি ও টকদই রয়েছে খাদ্যতালিকায়। ভাল্লুকরা টকদই দিয়ে ভাত খাচ্ছে বলে খবর।
আরও পড়ুন: লালবাগে হোটেলে গোপনে চলছিল মধুচক্র, ৬ জন যুবতীকে উদ্ধার, চারজন গ্রেফতার
আলিপুর চিড়িয়াখানা সূত্রে খবর, এখানে সাধারণ ভাল্লুকের পাশাপাশি হিমালয়ান ভাল্লুকও আছে। এই হিমালয়ান ভাল্লুকদের ঘরে কুলার চলছে। ঘর ঠান্ডা রাখতে বরফ রাখা হয়েছে। রোজ স্নান করানো হচ্ছে বাঘ, চিতা, সিংহ, হাতি, শিম্পাঞ্জিকে। গরম দাপট দেখাতে শুরু করার জেরে এখন চিড়িয়াখানায় দর্শক সংখ্যা অত্যন্ত কম। এই তীব্র গরমে ঘর ছেড়ে বের হচ্ছে না জন্তুরা। খাঁচার সামনে গিয়ে দর্শকরা নানা আওয়াজ করলেও সাড়া মিলছে না। পাখার হাওয়ায় সারাদিন কাটাচ্ছে। আবার কখনও বিকেলের দিকে ঘর থেকে খাঁচায় এসে মুখ দেখাচ্ছে তারা।
যেটুকু মুখ দেখাচ্ছে বাঘ–সিংহ–ভাল্লুক–শিম্পাঞ্জিরা তাতে মন ভরছে না। আসলে ওরা গরম সহ্য করতে পারছে না। তাই পাখার তলায় আশ্রয় নিচ্ছে। আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা অরুণ মুখোপাধ্যায় এই বিষয়ে বলেন, ‘গরম এখন বেশ তেড়ে পড়েছে। তাই পশুপাখিদের খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন এসেছে। বাঘ–সিংহদের মাংসের পরিমাণ কম হয়েছে। শিম্পাঞ্জিদের শসা, তরমজু ফ্রুট জুস, লস্যি, টকদই দেওয়া হচ্ছে। পশুপাখির খাঁচায় ওআরএস জল খেতে দেওয়া হচ্ছে। পশুপাখিদেরও হিট স্ট্রোক যাতে না হয় তাই রোজ স্নান করানো হচ্ছে। পাখিদের ঘরে দু’বেলা জল ছেটানো হচ্ছে।’