কলকাতায় একটি পার্কের রেলিংয়ে বিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল একটি ঘোড়ার। কার্যত চিকিৎসার অভাবেই ঘোড়াটির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে পশুপ্রেমী সংস্থা। প্রাথমিক অনুমান, ঘোড়াটি খাবারের জন্য রেলিং টপকে পার্কে ঢুকেছিল এবং সেটি টপকে বেরোনোর সময় রেলিংয়ের সূচালো অংশ ঘোড়াটি🌄র পেটে বিদ্ধ হয়ে যায়। শনিবার ঘটনাটি ঘটে ময়দানের বিড়লা প্ল্যানেটরিয়ামের উল্টোদিকের একটি পার্কের রেলিংয়ে। খবর পেয়ে ট্রাফিক পুলিশ, শেকসপিয়র সরণি থানা ও ময়দান থানার পুলিশ পৌঁছে ঘোড়াটিকে রেলিং থেকে বের করে। কিন্তু, তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শহরে প্রায়ই এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে বলেই অভিযোগ তুলেছেন পশুপ্রেমীরা।
আরও পড়ুন: হুমড়ি খেয়ে পড়ল দুটি ঘোড়া, হাড় ভেঙে যন্ত্রণায় কাতরা♊চ্ছে! অভিযোগ দায়ের PETA-র
জানা গিয়েছে, ঘোড়াটির দুটি পা ছিল পার্কের ভিতর এবং অন্য দুটি পা পার্কের বাইরে। আর রেলিংয়ের সূচালো অংশ পুরোপুরি ঘোড়াটির পেটের ভিতরে গেঁথে গিয়েছিল। এই অবস্থায় নাড়াচড়া প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ঘোড়াটির। সেখানে পুলিশ গিয়ে নানাভাবে টানাটানি করে ঘোড়াটিকে বার করার চেষ্টা করে। কিন্তু, তাতে কাজ হয়নি। অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। অবশেষে ঘোড়াটিকে সেখান থেকে বের করা সম্ভব হলেও পেট থেকে সবকিছু বাইরে বেরিয়ে আসে। কার্যত রক🔴্তে ভেসে যায় ওই জায়গাটি। কিন্তু, সেখানে কোনও পশু চিকিৎসক আসেনি বলেই অভিযোগ তুলেছেন পশুপ্রেমীরা। পশু অধিকার আন্দোলনের কর্মী রাধিকা বসুর অভিযোগ, কারও সাহায্য পাওয়া যায়নি। ঘোড়পুলিশে খবর দেওয়া হলেও তাদের কোনও পশু চিকিৎসক আসেননি। অবশেষে একজন এসে ব্যথা কমানোর ওষুধ দেন। কিন্তু, তাতে কোনও লাভ হয়নি। শেষে ঘোড়াটিকে বেলগাছিয়া পশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ঘোড়াটিকে। কিন্তু, সেখানে গিয়েও কারও সাহায্য পাওয়া যায়নি বলেই অভিযোগ তুলেছেন পশুপ্রেমীরা। এই অবস্থায় ওই পশুপ্রেমী সংস্থার তরফে একজন চিকিৎসক এসে অবশেষে ঘোড়াটিকে ইউথ্যানেশিয়ার ইনজেকশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
পশুপ্রেমী সংস্থার অভিযোগ, ওই ঘোড়ার মালিকের নাম সন্তোষ মল্লিক। তিনি ময়দান চত্বরে ঘোড়াটিকে রেখে চলে গিয়েছিলেন। তখন খাবারের খোঁজে ঘোড়াটি পার্কে ঢুকেছিল। বেরোনোর সময় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। তাদের 💙অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই শহর কলকাতায় এরকম ঘটনা ঘটে থাকে। এ প্রসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের একটি রায়ের কথা উল্লেখ করে পশুপ্রেমী সংস্থার তরফে বলা হয়, ২০২১ সালে ময়দান চত্বরে ঘোড়ার গাড়ি বন্ধ করার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় উল্লেখ করা হয়েছিল গাড়ি বহনকারী ঘোড়াদের অবস্থা খারাপ। তাছাড়া খাবার খুঁজতে গিয়ে প্রায় তারা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
ইতিমধ্যেই বম্বেতে এই ধরনের ঘোড়ার গাড়ি নিষিদ্ধ রয়েছে। তা নিয়ে বোম্বে হাইকোর্টের একটি রায়ের কথা উল্লেখ করা হয় মামলায়। মামলাকারীদের দাবি ছিল, যে আইনে কলকাতায় ঘোড়ার গাড়ি চালানো হয় সেই আইন এখন বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। সেই মামলায় ২০২২ সালে একটি কমিটি গঠন করে কলকাতা হাইকোর্ট। কমিটির রিপোর্টে জানানো হয়, অনেক ঘোড়ার স্বাস্থ্য ভালো নয়। শেষে ঘোড়ার চিকিৎসার জন্য সরকারি পক্ষ দায়িত্ব নিতে রাজি না হওয়ায় কেপ ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থা এগিয়ে আসে। কিন্তু, মালি🃏করা ঘোড়া দিতে আপত্তি জানায়। শেষে ৯ টি ঘোড়া দায়িত্ব নেয় বই সংস্থা। কিন্তু তারপ♛রেও ঘোড়ার দুর্দশা কাটেনি বলে অভিযোগ তুলেছেন পশুপ্রেমীরা।