মুকুল রায়কে নিয়ে বিজেপির মাথাব্যথ্যা কিছুতেই কমছে না। কারণ তিনি প্রকাশ্যে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে গিয়েছেন। আর এখনও নথি অনুযায়ী তিনি বিজেপির বিধায়ক রয়েছেন। এমনকী দল ছাড়ার কথা জানিয়ে বা নিজের আসন বদলের জন্য তিনি কোনও আবেদন জানাননি। এই পরিস্থিতিতে তাঁর জন্য বিরোধীদের বেঞ্চেই আসন বরাদ্দ থাকছে। সুতরাং বিজেপির বিধায়কদের সঙ্গে তিনি বসবেন এবং শাসকদলের হয়ে সওয়াল করবেন। এই ঘটনা ঘটলে গোটা বিধানসভায় হাসির রোল যেমন উঠবে তেমনই নজির হয়ে থাকবে রাজ্য–রাজনীতির ইতিহাসে। দলত্যাগ বিরোধী আইন এড়াতেই কী এই কৌশল? উঠছে প্রশ্ন।বিধানসভার অন্দরে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হতে চলায় চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ অঙ্কটা হল, সরকার পক্ষের দিকে আসন দেওয়া হলে তা মুকুলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের তোলা দলত্যাগের অভিযোগকেই সমর্থন করবে। আর মুকুল বিরোধী বেঞ্চে বসলে সেটা করা যাবে না। এই অঙ্কের কথা জানতে পেরে বিজেপি মহাফাঁপরে পড়েছে। অনেকেই মুকুল রায়ের সঙ্গে আসন ভাগ করে নিতে চায় না। তাছাড়া বিষয়টি দেখতেও দৃষ্টিকটূ লাগবে। আর সেখানে বসে যদি মুকুল রায় শাসকদলের হয়ে সওয়াল করেন তা আরও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।মুকুল রায়ের এই অবস্থানের পেছনে আরও একটি কারণ হল, তিনি পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) সদস্য হয়েছেন। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ওই কমিটির চেয়ারম্যানও হতে পারেন তিনিই। প্রথা মতো এই পদটি বিরোধী দলের সদস্যদের মধ্যেই কেউ পেয়ে থাকেন। তাই বিধানসভার অন্দরে মুকুল রায় ‘বিরোধী’ শিবিরেই থাকছেন। ফলে সাপও মরলো লাঠিও ভাঙল না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। এখন দেখার জল কতদূর গড়ায়।ইতিমধ্যেই মুকুল রায়ের সদস্যপদ খারিজের দাবি জানিয়ে বিধানসভায় লিখিত আবেদন জানিয়েছে বিরোধী দল বিজেপি। ‘সিনিয়র’ নেতা হিসেবে মুকুল রায়ের আসন হতে পারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বা বিরোধী দলের সচেতক মনোজ টিগ্গার কাছেই। ফলে এখানেও খেলা জমে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই ব্যবস্থা চূড়ান্ত করবেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।