শুধু সাংসদ মিমি চক্রবর্তী নয়, ভুয়ো করোনাভাইরাস টিকাকাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জন দেব চেষ্টা করেছিলেন তৃণমূলের আরও এক সাংসদকে। তিনি হলেন রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন। দেবাঞ্জনের সঙ্গে তাঁর ক্যাম্প করা নিয়ে কথা হয়েছিল। যদিও সেই ক্যাম্প অবশ্য শেষপর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। দেবাঞ্জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই কথাই জানতে পেরেছিলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, রাজপুর–সোনারপুর এলাকার তৃণমূল নেতা তাপস চট্টোপাধ্যায়ের মারফত সাংসদ দোলা সেনের সঙ্গে কথা হয়েছিল দেবাঞ্জনের। তখনও দেবাঞ্জন তাঁকে আইএএস ও কলকাতা পুরসভার কর্তা হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন। দোলা সেন জানতে পেরেছিলেন, দেবাঞ্জন বিনামূল্যে বিভিন্ন জায়গায় ভ্যাকসিন ক্যাম্প করছেন। সেটা জানতে পেরে দোলা সেন দেবাঞ্জনকে বলেছিলেন, সে যাতে দমদমের দিকে বিনামূল্যে এই ভ্যাকসিন ক্যাম্প করেন। তখন দেবাঞ্জন তাঁকে জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে যা সেট-আপ আছে, তা দিয়ে দমদমে গিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। যদি দোলা সেন কসবায় লোক পাঠান, তাহলে তিনি ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন। কিন্তু সাংসদের পক্ষে লোক পাঠানো সম্ভব হয়নি বলে শেষপর্যন্ত তখন আর কসবায় ক্যাম্প করা সম্ভব হয়নি।এদিকে কসবার যে ক্যাম্প চালানোর জন্য দেবাঞ্জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, সেই অফিস থেকে পুরসভার বহু কাগজপত্র উদ্ধার হয়েছিল। অর্থ দফতরের নথিও উদ্ধার হয়েছে। কম্পিউটার থেকে উদ্ধার হয়েছে আই টি বিভাগের বিভিন্ন নথি। তদন্ত থেকে উঠে এসেছে, কলকাতা পুরনিগমের একাধিক দফতরের সঙ্গে রীতিমতো যাতায়াত ছিল দেবাঞ্জনের। কলকাতা পুরনিগমের এক–দুজন কমিশনারের ঘরে নিয়মিত যাতায়াত ছিল তাঁর। করোনার কারণে পুরনিগমে কর্মীদের উপস্থিতির হারও কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর এই সুযোগই নিয়েছিলেন প্রতারক দেবাঞ্জন। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, কসবার ঘটনার দায় এড়াতে পারে না কলকাতা পুরনিগম। দেবাঞ্জনের সঙ্গে কলকাতা পুরনিগমের সক্ষ্যতা ঠিক কীভাবে গড়ে উঠেছিল, সেই বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে কলকাতা পুরনিগম।