কর্মসূত্রে একাধিক দেশে থেকেছেন। কখনও ইরাক, কখনও জাপান অথবা পাকিস্তানে থাকতে হয়েছে কয়েক বছর ধরে। প্রতিটি দেশের বৈচিত্র, জলবায়ু, মানুষজন, সংস্কৃতি আলাদা। কিন্তু, কলকাতার মতো আর কোনও শহরই তাঁকে মুগ্ধ করতে পারেনি। তিলোত্তমার আবহাওয়া, বৈচিত্র, সংস্কৃতির সঙ্গে যেন অদৃশ্য মায়ায় জড়িয়ে পড়েছেন। আর তাতে অজান্তেই ভালোবেসে ফেলছেন শহর কলকাতাকে। বিভিন্ন দিক দিয়ে মহানগরে মুগ্ধ হয়েছেন🌠 ‘বিদেশিনী’। তাই কর্মজীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর কলকাতাতেই থাকতে চান তিনি। এমনটাই জানালেন কলকাতায় বিদায়ী মার্কিন কনসাল জেনারেল মেলিন্ডা পাভেক। তিনি জানিয়েছেন, অবসর নেওয়ার পর আবারও তিনি কলকাতায় ফিরে আসবেন। পাশাপাশি কলকাতায় ফিরে এসে আরও কী করতে চান সেই পরিকল্পনার কথাও জানালেন।
আরও পড়ুন: ভারতীয় পড়ুয়াদের আরও সতর্ক থাকতে হবে, একগুচ্ছ পরাম꧟র্শ দিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মার্কিন কনসাল জেনারেল জানান, তাঁর পরিকল্পনা রয়েছে জার্মান এবং অস্ট্রেলিয়ার কনসাল জেনারেলের সঙ্গে যৌথভাবে কলকাতায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে অথবা কিনে থাকার। মেলিন্ডা বলেন, ‘আমার মতো কলকাতায় জার্মান কনসাল জেনারেল বারবারা ভস এবং অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাই কমিশনার রওয়ান আইনসওর্থ কর্মজীবন শেষে কলকাতায় ফিরে আসতে চান। আমাদে🐻র পরিকল্পনা রয়েছে যৌথভাবে এখানে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়ে এবং কিনে থাকার।’ কলকাতার আবহাওয়া বিশেষ করে শরৎকাল এবং বসন্তকাল তাকে মুগ্ধ করেছে। তাঁর কথায়, ‘কলকাতায় যখন আবহাওয়া মনোরম হয় তখন অনেক কিছুই করার ইচ্ছে থাকে। কিন্তু, কাজের দায়িত্বে থাকার জন্য সেসব করা হয়ে ওঠে না। ফলে অবসর নেওয়ার পর তাতে আর কোনও বাধা থাকবে না।’
বাংলা ভাষা শেখারও ইচ্ছে রয়েছেন মেলিন্ডার। তিনি জানান, শান্তিনিকেতনের লিপি বিশ্বাসের মৃৎশিল্প স্টুডিওতে মাটির কাজ শিখতে চান, বাংলা ভাষা শিখতে চান। যোগ ব্যায়াম শেখারও ইচ্ছে রয়েছে মেলিন্ডার। এছাড়াও, বিশ্বভারতী থেকে এক বছরের কলা বিভাগে ডিপ্লোমা করতে চান তিনি। কলকাতার মধ্যে তার সবচেয়ে ভালো লাগার অংশ হল উত্তর কলকাতা। এছাড়াও, দক্ষিণ কলকাতার কিছু অংশ যেমন ভবানীপুর এবং সল্টলেক তাঁর বেশ ভালো লাগে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য পশ্চিমাঞ্চলের মিনেসোটার বাসিন্দা মেলিন্ডা। ভাষা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, জলবায়ু༺ সবদিক থেকেই কলকাতার থেকে আলাদা মিনেসোটা। কিন্তু, একটি বিষয়ে তিনি কলকাতার সঙ্গে নিজের শহরের সাদৃশ্য খুঁজে পান। আর সেটা হল নদী। কলকাতা শহরের উপকণ্ঠে রয়েছে গঙ্গার উপ নদী হুগলি, তেমনই মিনেসোটা শহরে রয়েছে মিসিসিপির উপনদী মিনেসোটা। যারফলে কলকাতাকে 🐽অনেকটাই নিজের শহরের মতোই মনে হয় তাঁর। সবুজ, শস্য শ্যামলা বাংলাও তাঁর ভালো লেগেছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের অগস্ট মাসে কলকাতায় মার্কিন কনস্যুলেট জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মেলিন্ডা। তাঁর মেয়াদ আর কয়েকদিনের মধ্যেই শেষ হতে চলেছে। তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়েছিল ২০০৪ সালে। কর্ম সূত্রে এর আগে জাপানের টোকিওতে মার্কিন দূতাবাসে বিজ্ঞান, উদ্ভাবন এবং উন্নয়নের পরামর্শদাতা থেকেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাসে সুপারভাইজরি জেনারেল সার্ভিস অফিসার হিসেবেও কাজ করেছেন মেলিন্ডা। এছা🌸ড়াও, লাহোর, ব্রুনেই, নেপালের কাঠমান্ডু, জ্যামাইকা, ইরাকের বাগদাদ শহরেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।