একটি ল্যাপটপ ও ইন্টারনেটই যথেষ্ট। বাড়িতে বসেই অফিসের সমান কাজ করা যাচ্ছඣে। অন্যদিকে লিঙ্কডইনের মতো সাইটে নতুন চাকরি খুঁজতেও কোনও সমস্যা নেই। তাহলে অফিস গিয়ে আর কী লাভ? এমনটাই মনে করছেন নতুন প্রজন্মের কর্মীরা। ওয়ার্ক ফ্রম হোম বন্ধ করে অফিস আসতে বলতেই তাই গোঁসা তাঁরা। বাড়ি থেকে কাজ করা চালিয়ে যেতে কোম্পানি সুইচ করে নিচ্ছেন কর্মীরা। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এই বাস্তব ছবিটাই উঠে এসেছে।
HR সলিউশন সংস্থা Aon-এর এক রিপোর্টে এমনই চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে। সমীক্ষা বলছে, অগস্ট মাসে, কর্মীদের অফিসে ফেরার নির্দেশিকা জারি করা কোম্পানিগুলিতে কর্মচারীদের পদত্যাগের পরিমাণ বেড়ে ২৯%-এ পৌঁছে গিয়েছে। এদিকে 'রিমোট ওয়ার্ক' বা হাইব্রিড মডেল(মাঝে মাঝে অফিস আসা) গ্রহণ করা সংস্থাগুলিতে অ্যাট্রিশন রেট ১৯%। ফলে কার্যতই, বাড়ি থেকে কাজ করার অভ্যাস জারি রাখতে চাইছেন কর্মীদের একটি বড় অংশ। আরও পড়ুন : বড় শহর নয়, মফস্বলে থেকে ওয়ার্ক-ফ্রম-হোমেই 🔜খুশি অনেকে, জানুন আসল কারণ
২০২২ সালের অগস্ট পর্যন্ত, ৯০%-এরও বেশি সংস্থা সম্পূর্ণ ওয়ার্ক ফ্রম হোমের মডেল বন্ধ করে দিয়েছে। কোনও কোনও সংস্থা যদিও এর মধ্যেও হাইব্রিড মডেলের নীতি নিয়েছে। অন্যদিকে ৯% সংস্থা এখনও বাড়ি থেকেই কাজ করতে দিচ্ছে কর্মীদের। ইকোনমিক টাইমসের রিপোর্ট অনুসারে, চলতি বছর জানুয়ারি মাসে ৩৮% ভারতীয় সংস্থাই ওয়ার্ক ফ্রম হোম করতে দিয়েছিল কর্ম✅ীদের।
পেপসিকো, আরপিজি গ্রুপ, মার্সিডিজ-বেঞ্জ ইন্ডিয়া, টেক মাহিন্দ্রা এবং মারুতি সুজুকির মতো সংস্থাগুলি অবশ্য এই বিষয়ে বেশ নমনীয়। হাইব্রিড বা ওয়ার্ক ফ্রম হোমের সুযোগ থাকলে, তাতে বাধা দিচ্ছে না তারা। যদিও ভ🐈বিষ্যতে ജকর্মীদের অফিসে কীভাবে ফেরানো সম্ভব, তাই নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছেন সকল উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাই।
বিভিন্ন সংস্থার কর্তাদের মতে, 🌳অফিসে এসে কাজ করার মধ্যে একটি পেশাদারিত্ব থাকে। কর্মীদের মধ্যে বোঝাপড়া ভাল হয়। ভবিষ্যত উন্নতির ক্ষেত্রেও এটি সহায়ক। যদিও এগুলি মানতে নারাজ কর্মীদের সিংহভাগ। তাঁদের মতে, বাড়ি থেকেই কম্পিউটারে সব কাজ করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে অফিস যাতায়াতের ঝক্কি অর্থহীন।
কিন্তু অফিস যাওয়াতে এত অনীহা কেন?
বিভিন্ন বড় সংস্থাগুলির দফতর বেঙ্গালুরু, কলকাতা, মুম্বই, নয়ডার মতো বড় শহরে। এদিকে কর্মীরা সকলে সেই শহরে থাকেন না। তাঁদের বাড়ি শহরতলি, দূরবর্তী গ্রাম বা একেবারে অন্য কোনও রাজ্যে। প্রতিদিন দীর্ঘ সময় যাতায়াত অথবা, বাড়ি-পরিবার থেকে দূরে থেকে, ভাড়ায় থাকেন তাঁরা। ওয়ার্ক ফ্রম হোমের সময়ে বাড়ি থেকে কাজের সুবিধা উপলব্ধি করেছেন এই কর্মীরা। বিশেষত আইটি, ডিজিটাল সাংবাদিকতা, অনলাইন মার্কেটিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে ছবিটি এমনই। আরও পড়ুন : WFH🦋: ওয়ার্ক ফ্রম হোমে ওয়েবক্যাম চালু রাখতে ব✨লতেন বস, বড় জরিমানা করল আদালত
ডেলয়েটে কর্মরত এক অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার(আইটি) জানালেন, আগে দূরে বাড়ি ভাড়া, যাতায়াত, খাওয়া বাবদ মাসে মোটা টাকা খরচ হয়ে যেত। ওয়ার্ক ফ্রম হোমে সেই পুরো টাকাটাই বেঁচে যাচ্ছে🐼। তাছাড়া পরিবার, নিজের হবির পিছনে অনেক বেশি সময়ও দেওয়া হচ্ছে। আইটির মতো ক্ষেত্রে সাধারণত কাজে খুব বেশি সমস্যা হচ্ছে না সাধারণ কর্মীদের। বরং কাজের মান অনেকক্ষেত্রে বেড়েছে। গত ২ বছরে এটাই 'নিউ নরমাল' হয়ে গিয়েছে। ফলে এখন অফিস ফিরতে অনীহা হওয়াটাই স্বাভাবিক।
টিসিএস-এর এক প্রাক্তন কর্মী জানালেন, ওয়ার্ক ফ্রম হোম চলাকালীনই কোম্✃পানি সুইচ করেছি। ২ বার বেতন বেড়েছে। একবার পদোন্নতিও হয়েছে। ফলে অফিস না গেলে যে 'নেটওয়ার্কিং'♚ হবে না, সেই ভাবনা এখন অতীত।
ফলে, ওয়ার্ক ফ্রম হোমকেই স্বাভাবিক বিষয় করে তুলতে চাইছেন সিংহভাগ বেসরকারি কর্মীরা। আর সেখানেই চিন্তিত বড় সংস্থাগুলি। এত অফিস বিল্ডিং, ম্যানেজমেন্ট ব্যবস💎্থা, পরিকাঠামোর তাহলে কী হবে? চিন্তায় বড় কর্তারা।
আপনার এই বিষয়ে কী মত?