‘অ্যাডমিশনের জন্য আঞ্চলিক ভাষায় পড়াশোনা করা পড়ুয়াদের বিবেচনা করা হয়নি’- লরেটো কলেজের এমনই একটি বিজ্ঞপ্তি ঘিরে বিতর্ক তৈরি হল। নেটপাড়ায় তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছে লরেটো কলেজ। যদিও কী কারণে সেই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, তা কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, লরেটো কলেজে শুধুমাত্র ইংরেজি ভাষায় শিক্ষকরা পড়িয়ে থাকেন। পরীক্ষায় ইংরেজ♔ি মাধ্যমে লিখতে হবে। তাই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাতে পালটা নেটিজেনদের একাংশের বক্তব্য, দ্বাদশ শ্রেণিতে বাংলা বা অন্য কোনও ‘আঞ্চ꧂লিক ভাষা’ নিয়ে পড়া কোনও পড়ুয়া ইংরেজিতে ক্লাস করতে পারবেন না অথবা পরীক্ষায় খাতায় ইংরেজিতে উত্তরপত্র লিখতে পারবেন, এমন কি কোনও প্রমাণিত বিষয় আছে?
লরেটো কলেজের বিতর্কিত বিজ্ঞপ্তিতে কী বলা হয়েছে?
স্নাত๊ক স্তরে ভরতির জন্য যে সাতটি বিষয়ের মেধাতালিকা প্রকাশিত হয়েছে, সেটার প্রতিটিতেই লেখা আছে, ‘লরেটো কলেজের পড়াশোনার মাধ্যম হল শুধুমা💎ত্র ইংরেজি। পরীক্ষায় শুধুমাত্র ইংরেজিতে উত্তর দিতে হবে। আঞ্চলিক বাংলা এবং হিন্দি ছাড়া অন্য সব বিষয়ের জন্য আমাদের স্বনামধন্য ওপেন শেলফ লাইব্রেরিতে শুধুমাত্র ইংরেজি ভাষায় সহায়িকা বই, পাঠ্যবই এবং জার্নাল আছে। আমাদের পরামর্শ, যে পড়ুয়ারা আঞ্চলিক ভাষার স্কুলে পড়াশোনা করেছে, তাঁরা যেন এমন প্রতিষ্ঠানে আবেদন করেন, যেখানে পড়াশোনার মাধ্যম হল ইংরেজি। সেইসব পড়ুয়াদের অ্যাডমিশনের জন্য বিবেচনা করা হয়নি, দ্বাদশ শ্রেণিতে যাদের পড়াশোনার মাধ্যম আঞ্চলিক ভাষায় ছিল।’
সেই বিজ্ঞপ্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নেটিজেনদের একাংশ। তেমনই একজন বলেন, ‘এমনও হয়! ভাবতে লজ্জা হয়।’ একইসুরে অপর একজন বলেন, ‘আঞ্চলিক ভাষায় পড়াশোনায় পড়ুয়ারা কী দোষ করল যে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে হল! তাদের পাঠ্যক্রমে তো দ্বিতীয় ভাষা হ🦂িসেবে ইংরেজি ছিল। যা যথেষ্ট গুরুত্ব পায়। যে ছাত্রছাত্রী নিজেদের মাতৃভাষাকে প্রথম ভাষা হিসেবে রেখেছে, সে কলেজের ইংরেজি লেকচার অনুসরণ করতে পারবে না, এমন ভাবার ধৃষ্টতা কলেজগুলির হয় কীভাবে?’
নেটিজেনদের একাংশ আবার দাবি করেছেন, লরেটো কলেজ কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা বাস্তবসম্মত। যে পড়ুয়ারা বাংলা মাধ্যমে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে এসেছেন, তাঁদের ইংরেজি মাধ্যমে কলেজে সমস্যা হতে পারে। যদিও অপর অংশের বক্তব্য, সেই তত্ত্ব নিয়ে🐼 অনেক বিতর্কের অবকাশ আছে। কিন্তু যদি সেই বিষয়টি মনে করে থাকে কলেজ কর্তৃপক্ষ, তাহলে অ্যাডমিশন প্রক্রিয়া শুরুর সময়ই স্পষ্টভাবে সেই বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।
যদিও লরেটো কলেজের ওয়েবসাইটে দেখা গিয়েছে, যে ‘এলজিবিটি’ বিভাগ আছে, তাতে সেই বিষয়টির উল্লেখ করা হয়েছে। সেই বিভাগের শুরুতেই বলা হয়েছে যে 'সেইসব পড়ুয়াদের অ্যাডমিশনের জন্য বিবেচনা করা হয়নি, দ্বাদশ শ﷽্রেণিতে যাদের পড়াশোনার মাধ্যম আঞ্চলিক ভাষায় ছিল।’
তারইমধ্যে বিষয়টি নিয়ে ময়দানে নেমেছে বাংলা মঞ্চ। সংগঠনের শীর্ষ পরিষদ সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘ধিক্কার! ধিক্কার! ধিক্কার! ক্ষোভে ফেটে পড় বাঙালি। কলকাতার লরেটো কলেজ বলছে, স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে যারা পড়েনি অর্থাৎ প্রকারান্তরে বাস্তবে দিল্লি বোর্ডে যারা পড়েনি, বাংলা মাধ্যমে যারা পড়েছে অর্থাৎ প্রকারান্তরে বাস্তবে যারা পশ্চিমবঙ্গ বোর্ডে পড়েছে, তাদের 🍌এখানে 𓆏ভরতি হওয়া নিষিদ্ধ। বাংলা ও বাঙালির শত্রু লরেটো একটি জাতি-বিদ্বেষী সংস্থা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা দফতরকে এই বিদেশী সংস্থার অনুমোদন প্রত্যাহার করতে হবে। বাংলা পক্ষ ও বাংলা ছাত্র পক্ষ আসরে নামছে। জয় বাংলা।’