মঙ্গলবার দিল্লি ক্যাপিটালসের কাছে ২০ রানে হেরে গিয়েছে রাজস্থান রয়্যালস। এর ফলে তারা লিগ টেবলের এক নম্বর জায়গার দখলও নিতে পারেনি, প্লে-অফও নিশ্চিত হয়নি। উল্টে কলকাতা নাইট রাইডার্স সুবিধে পেয়ে গিয়েছে। পয়েন্ট টেবলের শীর্ষস্থানের দখল তাদের হাতছাড়া হয়নি। তবে এত কিছুর পরেও ম্যাচের চেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে, সঞ্জু স্যামসনের বিতর্কিত আউট নিয়ে। মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হয়েছে, বুধবারও তার পারদ চড়েছে। সঞ্জু আদৌဣ আউট ছিলেন কিনা, ক্যাচ ধরার পর শাই হোপের পা বাউন্ডারি লাইন স্পর্শ করেছিল কিনা, তা নিয়ে রয়েছে জোর বিতর্ক। আম্পায়ারিংয়ের মান নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এই আউট নিয়ে চর্চা আর বেশি হচ্ছে, কারণ এটা মঙ্গলবারﷺের ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে যায়।
তবে ২🌌০২৪ আইপিএলের শ🤪ুরু থেকেই এবার আম্পায়িং নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। আসুন দেখে নেওয়া যাক এই মরশুমে পাঁচটি বিতর্কিত আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত:
১. সঞ্জু স্যামসনের আউ (দিল্লি বনাম রাজস্থান, ম্যাচ নং ৫৬)
সঞ্জু স্যামসনের ঘটনাটি সবচেয়ে সাম্প্রতিক। মঙ্গলবার (৭ মে) দিল্লির দেওয়া ২২২ রান তাড়া করতে নেমে, রাজস্থান ১৫.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১৬২ রান করে ফেলেছিল। কিন্তু পরের বলেই সঞ্জু আউট হয়ে যান। এতেই বদলে যায় ম্যাচের রং। আসলে ১৬তম ওভারের চতুর্থ বলে মুকেশ কুমারের ডেলিভারিতে লম্বা শট খেলেন সঞ্জু। ছক্কা মারারই চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেটা ক্যাচ ওঠে। বাউন্ডারি লাইনের সামনে ক্যাচটি নির্ভুল ভাবে 𒁏ধরেও ফেলেন শাই হোপ। কিন্তু ক্যাচ ধরার পর শরীরের ভারসাম্য রাখতে না পেরে, বাউন্ডারি লাইনের সামনে চলে গিয়েছিলেন হোপ। তাঁর পা বাউন্ডারি লাইনে লেগেছে কিনা, তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। এই সিদ্ধান্তের জন্য ফিল্ড আম্পায়ার দ্বারস্থ হন তৃতীয় আম্পায়ারের।
রিপ্লে-তে একটি অ্যাঙ্গেল থেকে মনে হয়েছে, শাই হোপের পা বাউন্ডারি লাইন স্পর্শ করেছে। কিন্তু এর পরেও টিভি আম্পায়ার মাইকেল গ꧅ফ ক্যাচটি ক্লিন ঘোষণা করেন এবং স্যামসনকে আউট দিয়ে দেন। বড় পর্দায় রিপ্লে দেখে বিভ্রান্ত এবং ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্যামসন। তিনি এই🐎 সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করেন। মাঠের আম্পায়ার কেএন অনন্তপদ্মনাভন এবং উলহাস গান্ধের সঙ্গে তাঁকে উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে দেখা গিয়েছিল। সঞ্জু স্যামসন রিভিউ নিতেও চেয়েছিলেন। ততক্ষণে অবশ্য সময় পেরিয়ে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত হতাশ হয়েই মাঠ ছাড়তে হয় সঞ্জুকে। উল্টে আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্ক করার জন্য সঞ্জুর ম্যাচ ফি-র ৩০ শতাংশ জরিমানা করা হয়।
২. বিরাট কোহলির আউট (কেকেআর বনাম আরসিবি, ম্যাচ নম্বর ৩৬)
মরসুমের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ম্যাচগুলির মধ্যে নিঃসন্দেহে একটি ছিল ইডেন গার্ডেন্সে কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ম্যাচ। তবে এই ম্যাচে বিরাট কোহলির আউট নিয়ে জোর বিতর্ক হয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছিল, আদৌ কোহলি আউট ছিলেন কিনা, তা নিয়ে! কেকেআর প্রথমে ব্যাট করে ২২৩ রানের লক্ষ্য রাখে আরসিবি-র সামনে। সেই রান তাড়া করতে নামলে কোহলি তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে আউট যান। সেই ওভারে বল করছিলেন হর্ষিত রানা। তাঁর প্রথম বলটি খেলার সময় ক্রিজের বাইরে ছিলেন বিরাট। বল সোজা ব্যাটে এসে লাগে। সেই বল সঙ্গে সঙ্গে লুফে নꩵেন বোলার হর্ষিত। কিন্তু বিরাট ক্রিজ ছাড়তে চাননি। তাঁর দাবি, বল কোমরের উপরে ছিল। তাই নো বলের দাবি করেন বিরাট। রিভিউও নেওয়ার ইঙ্গিত করেন। যদিও মাঠের আম্পায়ারেরা রিভিউ নেন নিজে থেকেই। নো বল কিনা, নিশ্চিত হতে চ🎐ান তাঁরা। তৃতীয় আম্পায়ার দেখেন বিরাটের কোমরের নিচেই রয়েছে বল। ফলে নো বল দেননি তিনি। মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। তাতেই রেগে যান বিরাট। বিরাটকে দেখা যায় বেশ আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে আম্পায়ারদের দিকে এগিয়ে যেতে। কিছুতেই মানতে চাইছিলেন না যে, তিনি আউট। বার বার মাঠের আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্ক করেন বিরাট। বেশ ক্ষোভ দেখিয়েই মাঠ ছাড়েন তিনি। ডাগআউটে গিয়েও ক্ষুব্ধ বিরাটকে দেখা যায়। ৭ বলে ১৮ করে আউট হন বিরাট। ম্যাচটি আরসিবি ১ রানে হেরে গিয়েছিল। এই ঘটনার পর কোহলিকে আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্ক জোড়ার জন্য ম্যাচ ফি-র ৫০ শতাংশ জরিমানা করা হয়।
৩. মোহিত শর্মার বিরুদ্ধে ওয়াইড কল (আরআর বনাম জিটি, ম্যাচ নম্বর ২৪)
ওয়াইড ডেলিভারির রিভিউ নিয়েও এই মরশুমে জোর বিতর্ক চলছে। ১০ এপ্রিল গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে রাজস্থান রয়্যালসে ম্যাচেও ওয়াইড নিয়েও তৈরি হয়ে বিতর্ক, যা ম্যাচের ফলাফলকেও প্রভাবিত করে। আরআর-এর ইনিংসের ১৭তম ওভারে মোহিত শর্মা বল করছিলেন এবং ওভারের শেষ বলে ঘটে ঘটনাটি। তখন স্ট্রাইকে ছিলেন আরআর অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। উইকেট থেকে বেশ বাইরে পড়লে, আম্পায়ার বিনোদ শেশান ওয়াইডের নির্দেশ দেন। এই সিদ্ধান্ত পছন্দ হয়নি গুজরাটের উইকেটরক্ষক ম্যাথু ওয়েডের। তিনি ডিআরএস নেওয়ার পরামর্শ দেন অধিনায়ক শুভমনকে। শুভমন ডিআরএস নিলে, সেই বলের রিপ্লে দেখার পর তৃতীয় আম্পায়ার কেএন অনন্তপদ্মনাভন প্রথমে জানান, বল বৈধ। মাঠে আম্পায়ারকে তিনি সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের অনুরোধ করেন। কারণ হিসাবে তিনি বলেন মোহিত হাত থেকে বল ছাড়ার আগেই সঞ্জু অফ স্টাম্পের বাইরের দিকে কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিলেন। তাতে খুশি হয় টাইটান্স শিবির। এর পরেই ঘটে বিপত্তি। দ্বিতীয় বার রিপ্লে দেখে তৃতীয় আম্পায়ার অনন্তপদ্মনাভন জানান, তাঁর প্রথম পর্যবেক্ষণ সঠিক ছিল না। মাঠের আম্পায়ার বিনোদকে ওয়াইডের সিদ্ধান্তেই অটল থাকার অনুরোধ করেন। বিনোদ দ্বিতীয় বার তৃতীয় আম🍸্পায়ারে🔯র সিদ্ধান্ত জানাতেই মেজাজ হারান গুজরাটের অধিনায়ক শুভমন গিল। হাস্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।
৪. ইশান্ত শর্মার বিরুদ্ধে ওয়াইড কল (এলএসজি বনাম ডিসি, ম্যাচ নং ২৬)
১২ এপ্রিল দিল্লি ক্যাপিটালস এবং লখনউ সুপার জায়ান্টস♉ ম্যাচে ওয়াইড নিয়েই ঘটে আরও একটি বতির্ক। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল লখনউ। তাদের ইনিংসের চতুর্থ ওভারের ঘটনা। ইশান্ত শর্মার একটি বল ‘ওয়াইড’ দেন মাঠের আম্পায়ার। ব্যাটার দেবদত্ত পাডিক্কালের পায়ের পিছনে পড়েছিল বলটি। সিদ্ধান্ত পছন্দ হয়নি দিল্লির অধিনায়ক ঋষভ পন্তের। রিভিউয়ের আবেদনের ইঙ্গিত করেন পন্ত। তা দেখে তৃতীয় আম্পায়ারকে রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত জানানোর অনুরোধ করেন মাঠের আম্পায়ার। রিভিউয়ের পর ওয়াইডের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। পরে পন্তকে উত্তেজিত হয়ে মাঠের আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। যদিও প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছিল, পন্ত কখনও-ই রিভিউ নিতে চাননি এবং ডিসি ক্যাপ্টেন অসাবধানতাবশত একটি রিভিউ হারানোয় অসন্তুষ্ট ছিলেন, পরে এটি প্রকাশ করা হয় যে, পন্ত প্রশ্ন করেছিলেন, কেন তৃতীয় আম্পায়ার আল্ট্রা এজ দেখেও পাত্তা দেননি।