পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হতে শুরু করে মঙ্গলবার। তখন থেকেই সকলের চোখ ছিল নন্দীগ্রামের দিকে। কারণ এখানে তৃণমূল কংগ্রেস কুণাল ঘোষকে ফেলে রেখেছিল। যিনি সরাসরি টক্কর দিচ্ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। এরপর ফল আসতে শুরু করে। নন্দীগ্রামের দুটি ব্লকে ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ফলাফল প্রকাশ হতেই শুভেন্দু অধিকারী সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, এখানে বিজেপি ছিলই না। নন্দীগ্রামে পদ্ম ফুটেছে। গ্রাম পঞ্চায়েতে ৯টি আসনে জিতেছে বিজেপি। আর বাকি ৮টিতে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারপর পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষ♊দের ভোট গণনা শুরু হতেই দেখা গেল শুভেন্দুর হাঁকডাকই সার।
তারপর গণনা যতই এগিয়েছে তত🧸ই বিজেপির পক্ষে হতাশা তৈরি করেছে। চুপ করে গিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। এমনকী তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘আমি এই ভোট মানি না। এতে মানুষের রায়ের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটেনি।’ এবার আজ, বুধবার সকাল থেকে একের পর এক টুইট করে শুভেন্দুকে নিশানা করে চলেছেন কুণাল ঘোষ। তিনি সকালে লিখলেন, ‘লোডশেডিং বিধায়ক শুভেন্দু তো ‘ব্লক স্তরের নেতা’ হয়ে গেলেন! নন্দীগ্রাম সহ পূর্ব মেদিনীপুরে বেইমান বিধ্বস্ত। সুতরাং ১৯৫৬ ভোটে ভেসে ওঠা লোডশেডিং বিধায়ককে আবর্জনায় ফেলে দেওয়া উচিত।’ নন্দীগ্রামে পঞ্চায়েত সমিতির দুটি আসনের মধ্যে একটিতে জিতেছে বিজেপি এবং তৃণমূল জিতেছে একটি। কিন্তু জেলা পরিষদের ৫টি আসনের লড়াইয়ে তৃণমূলই এগিয়ে। নন্দীগ্রামের ১ নম্বর ব্লকে জেলা পরিষদে তিনটি আসনের মধ্যে তিনটিতেই জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর ২ নম্বর ব্লকের দুটি জেলা পরিষদ আসন বিজেপি জিতেছে।
তারপর ঠিক কী ঘটল? একু✤শের নির্বাচনে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ১৯৫৬ ভোটে হারিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এই জয় নিয়ে শুভেন্দু খোঁচা দেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তার পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেস বলে, লোডশেডিংয়ের ১৯৫৬। সেদিন গণনার সময় লোডশেডিং করে ১৯৫৬ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন শুভেন্দু বলে তাঁদের দাবি। তবে এবার তৃণমূল কংগ্রেস ব্যাপক অক্সিজেন পেল। জেলা পরিষদের ৫টি আসনের মোট ফলাফল বিচার করে দেখা যাচ্ছে, নন্দীগ্রাম বিধানসভায় ১০,৪৫৭ ভোটে পিছিয়ে পড়েছে বিজেপি। ব্যস, এটা নিয়ে আর একটা টুইট। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘ಞলোডশেডিং চক্রান্তের জবাব, নন্দীগ্রামে তৃণমূলের লিড ১০ হাজার ৪৫৭। দেখ কেমন লাগে।’
আরও পড়ুন: ফেরা✱নো হল নন্দীগ্রাম থানার আইসি–কে, পঞ্চায়েত নির্൩বাচনে ছুটিতে পাঠানো হয়
আর কী জানা যাচ্ছে? নন্দীগ্রামের গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি অন্তত ১৩টি আসন জিতবে বলে দাবি করেছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু সেﷺটা হয়নি। তার মধ্যে জেলা পরিষদের ফল বাড়তি অক্সিজেন দিয়েছে। এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘এই ফলাফলেও আমার আফশোস রয়েছে। আমাদের কিছু কর্মী ভোটে অন্তর্ঘাত করেছে। সিপিএম ভোট কাটুয়ার কাজ করেছে। জেলা পরিষদে ভোট দেওয়ার সময়ে মানুষ শুধু প্রতীক দেখেছে। তাই তৃণমূল আর বিজেপির প্রতীকের মধ্যে বেশি সংখ্যক মানুষ জোড়াফুলকেই বেছে নিয়েছেন।’ নন্দীগ্রামে বিধানসভা নির্বাচনে শুধু ভেকুটিয়াতে শুভেন্দু তথা বিজেপি ৪৮০০ ভোটের লিড পেয়েছিল। এবার জেলা পরিষদের ফলাফলে দেখা গিয়েছে ঘাটতি ৭১৮ ভোট। পূর্ব মেদিনীপুরে জেলা পরিষদের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে ৫৬টি আসন জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি জিতেছে ১৪টি আসনে।