জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রটি দক্ষিণ ২৪ পরগনা😼 জেলায় অবস্থিত। ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতܫা আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল এই মফঃস্বল শহর জয়নগর। এই অঞ্চলটি আরএসপি এবং এসইউসিআই(সি)-এর দীর্ঘদিনের শক্ত ঘাঁটি হিসেবেও পরিচিত। তবে বর্তমানে এই অঞ্চলে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাব অনস্বীকার্য। বহুক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সক্রিয়তাও চোখে পড়ার মত। ১৯৬২ সালে জয়নগর কেন্দ্রের প্রথম লোকসভা নির্বাচন সম্পন্ন হয়। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে মোট ১৪ লক্ষ ৫৮ হাজার ৭২৪ জন ব্যক্তি ভো দানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রতিমা মণ্ডল বিজেপির প্রার্থীকে হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। মোট সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে জয়নগর লোকসভা কেন্দ্র গঠিত। কেন্দ্রগুলি হল গোসাবা, বাসন্তী, কুলতলি, জয়নগর, ক্যানিং পশ্চিম, ক্যানিং পূর্ব এবং মগরাহাট পূর্ব। এর মধ্যে গোসাবা বাসন্তী, কুলতলি, জয়নগর, ক্যানিং পশ্চিম এবং মগরাহাট তফশিলি জাতির প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত। এবার জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রে জয়নগরের তৃণমূল প্রার্থী হলেন প্রতিমা মণ্ডল। বামেদের প্রার্থী হলেন সমরেন্দ্রনাথ মণ্ডল। বিজেপি প্রার্থী হলেন অশোক কাণ্ডারী।
১৯৬২ সালের লোকসভা নির্বাচনে জয়নগর কেন্দ্র থেকে পরেশনাথ কয়াল জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই কেন্দ্রে জয়লাভ করেছিলেন। ১৯৬৭ সালে এসইউসিআই-এর চিত্ত♛ দত্ত এই কেন্দ্রে জয়লাভ করেছিলেন। ১৯৭১ ও ১৯৭৭ সালের লোকসভা নির্বাচনের শক্তিকুমার সরকার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের জয়ী হয়েছিলেন। ১৯৮০ লোকসভায় সনৎ কুমার মণ্ডল বিপ্লবী সমাজতন্ত্রী পার্টি (আরএসপি) -এর পক্ষ থেকে জয়ী হন। ২০০৪ সালের লোকসভা পর্যন্ত টানা ১০ বার কেন্দ্রে জয়লাভ করেন। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সনৎ কুমার মণ্ডল নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে রেকর্ড মার্জিনে ২ লক্ষ ৩০ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করেন। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ডঃতরুণ মণ্ডল এসইউসিআই(সি)-এর পক্ষ থেকে এই কেন্দ্রটি জয়লাভ করেন। ২০১৪ সালে প্রতিমা মণ্ডল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ১ লক্ষ ৮হাজারের কিছু বেশি ভোটে জয়ী হন এই কেন্দ্রে প্রথম জয়লাভ করেন। ২০১৯ সালেও তিনি এই কেন্দ্রটিতে জয়ী হয়েছিলেন। এবার ভোটের ব্যবধান বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৩ লক্ষ ১৬ হাজার ৭৭৫। ২০০৪ এবং ২০০৯ সালের লোꦡকসভা নির্বাচনে জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রে ৭১ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পড়লেও ২০১৪ এবং ২০১৯-এ যথাক্রমে ৮১ শতাংশ এবং ৭৫ শতাংশ থেকেছে ভোটদানের হার।
এবার দেখে নেওয়া যাক ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ভিত্তিতে এই অঞ্চলে কোন দল কতখানি এগিয়ে রয়েছে। গোসাবা বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ন্ত নস্কর ২৩ হাজার ৭০০ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন গত বিধানসভা নির্বাচনে। বাসন🍒্তী কুলতলি প্রত্যেকটি কেন্দ্রেই তৃণমূল কংগ্রেস জয়যুক্ত হয়েছিল বিপুল পরিমাণ ভোটে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পরেশরাম দাস ৩৫ হাজারের বে🅷শি ভোটে জয়যুক্ত হন। ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের শওকত মোল্লা ৫৩ হাজার ভোটে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়েছিলেন। মগরাহাট পূর্ব কেন্দ্রে নমিতা সাহা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ৫৪ হাজার ভোটে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। সামগ্রিকভাবে দক্ষিণবঙ্গের এই লোকসভা কেন্দ্রটিতে তৃণমূল কংগ্রেসের দাপট অব্যাহত থেকেছে বিধানসভা নির্বাচনেও৷