বিজেপি প্রার্থী লোকনাথ চট্টোপাধ্যায় এবং সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী ডাক্তার ফুয়াদ হালিমকে একেবারে পিছনে ফেলে রেকর্ড ৭৫ হাজার ৩৫৯ ভোটে জিতে গেলেন তৃণমূলের সুব্রত মুখোপাধ্যায়।এই কেন্দ্রে এবারের তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এই আসনে বিজেপির তরফে দাঁড়াচ্ছেন আইনজীবী লোকনাথ চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে, বাম-কংগ্রেস-ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) তরফে এই কেন্দ্রে দাঁড়াচ্ছেন সিপিআইএমের ফুয়াদ হালিম।কলকাতা হল পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। এই শহরটি হুগলি নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। জনসংখ্যার হিসেবে বৃহত্তর কলকাতা ভারতের তৃতীয় সর্বাধিক জনবহুল মহানগর। সুতানুটি, ডিহি কলকাতা ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে মূল কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। সপ্তদশ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত এই গ্রামগুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা। ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের কাছ থেকে বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করেছিল। এরপর কোম্পানি কলকাতায় একটি দুর্গবেষ্টিত বাণিজ্যকুঠি গড়ে তোলে। ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজদ্দৌলা কলকাতা জয় করেছিলেন। কিন্তু পরের বছরই কোম্পানি আবার শহরটি দখল করে নিয়েছিলেন। এর কয়েক দশকের মধ্যেই কোম্পানি বাংলায় যথেষ্ট প্রতিপত্তি অর্জন করেছিল। ১৭৯৩ সালে ‘নিজামৎ’ বা স্থানীয় শাসনের অবলুপ্তি ঘটিয়ে এই অঞ্চলে পূর্ণ সার্বভৌমত্ব কায়েম করেছিল।বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র কলকাতা জেলার একটি বিধানসভা কেন্দ্র। এই কেন্দ্র কলকাতা পৌরসংস্থার ৬০, ৬১, ৬৪, ৬৫, ৬৮, ৬৯ ও ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডগুলি নিয়ে গঠিত। এই কেন্দ্রটি কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জয়ী হয়েছিলেন৷ তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৭০ হাজার ৮৩৷ দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী কৃষ্ণা দেবনাথ। তাঁর প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ছিল ৫৪ হাজার ৮৫৮৷ তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায় তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি কংগ্রেস প্রার্থী কৃষ্ণা দেবনাথকে ১৫ হাজার ২২৫ ভোটে পরাজিত করেছিলেন।২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের আহমেদ জাভেদ খান বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইএমের রবীন দেবকে পরাজিত করেছিলেন। ২০০১ সালে সিপিআইএমের রবীন দেব তৃণমূল কংগ্রেসের কাকলি ঘোষদস্তিদার, ১৯৯৬ সালে কংগ্রেসের দিব্যেন্দু বিশ্বাস ও ১৯৯১ সালে কংগ্রেসের সুশোভন বসুকে পরাজিত করেছিলেন। ১৯৮৭ সালে সিপিআইএমের শচীন সেন কংগ্রেসের সুশোভন বসু, ১৯৮২ সালে কংগ্রেসের রথীন তালুকদার ও ১৯৭৭ সালে কংগ্রেসের সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে এই আসনে পরাজিত করেছিলেন। ১৯৭২ ও ১৯৭১ সালে কংগ্রেসের সুব্রত মুখোপাধ্যায় এই কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন। ১৯৬৯ ও ১৯৬৭ সালে ডব্লিউপিআই-এর জ্যোতিভূষণ ভট্টাচার্য এই কেন্দ্র থেকে জেতেন। তার আগে ১৯৬২ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের অনিল মৈত্র এই কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেছিলেন। ১৯৫৭ সালের নির্বাচনে সিপিআইয়ের জ্ঞানেন্দ্র মজুমদার এই কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন। ১৯৫১ সালে দেশের প্রথম নির্বাচনের সময় বানিয়াপুকুর-বালিগঞ্জ একটি যুগ্ম আসন ছিল। সেবারে কংগ্রেসের পুলিনবিহারী খাটিয়া ও যোগেশচন্দ্র গুপ্ত এই যুগ্ম কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন।