নন্দীগ্রাম, জামুড়িয়ার পর ভাঙড় আসনটি আব্বাসের দলকে সিপিআইএম ছাড়তে পারে বলে সূত্রের খবর। আর তাতে অনেকে সিপিআইএমের জোটের স্বার্থে নমনীয়তা বলে মনে করলেও আসল কারণ অন্য বলে মত রাজনৈতিক মহলের মত। পর্যবেক্ষকদের মতে, এখানে লালপার্টির সংগঠন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। উলটে দাপট বেড়েছে আরাবুল ইসলামের। যেখানে সিপিআইএম প্রার্থী দিয়ে হারা ছাড়া অন্য কোনও ফল হবে না। তাই নিজেদের দখলে রাখা আসনটি সুকৌশলে আব্বাসের হাতে তুলে দিলে অন্তত জোর টক্কর দেওয়া যাবে। আবার তাতে খানিকটা সংগঠনও চাঙ্গা হবে।কংগ্রেস মালদা–মুর্শিদাবাদ জেলায় জেতা আসনগুলি ছাড়তে রাজি নয়। কিন্তু সিপিআইএম 'ভাইজান'-এর দলকে একের পর এক আসন ছেড়ে দিচ্ছে। আসলে এই সবকিছুর পিছনে রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্ক। এই ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রে আব্বাসের ভাই তথা আইএসএফ চেয়ারম্যান নৌসাদ সিদ্দিকি প্রার্থী হতে পারেন বলে সূত্রের খবর। কিন্তু এই আসনটির পিছনে রয়েছে আরও বড় অঙ্ক। আব্বাসকে এই আসনটি ছেড়ে দিয়ে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে চায় সিপিআইএম। গত বিধানসভা নির্বাচনে ভাঙড় বিধানসভা আসন থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে জয়লাভ করেছিলেন রেজ্জাক মোল্লা। এখানে ততদিনই সিপিআইএমের সংগঠন শক্তিশালী ছিল, যতদিন রেজ্জাক মোল্লা দলে ছিলেন। যার জন্য চূড়ান্ত তৃণমূলের হাওয়া যখন রাজ্য–রাজনীতিতে বইছে তখন তিনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি বলতে পেরেছিলেন, ‘কে জিতবে না জিতবে জানি না। আমি জিতব এটুকু বলতে পারি।’ তখন তিনি সিপিআইএমে ছিলেন।আর এই রেজ্জাক মোল্লা কাঁটা এখন সিপিআইএমের ভঙ্গুর সংগঠনের পক্ষে তোলা সম্ভব নয়। তাই আব্বাসকে আসনটি দিয়ে কাঁটাটি তুলতে চাইছেন আলিমুদ্দিনের কর্তারা। আর এটাকেই জোটের পক্ষ তাঁদের নমনীয়তা বলে দেখাতে চাওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা। সিপিআইএমের কফিনে বেশ কয়েকটা পেরেক পুঁতে দিয়েছিলেন এই রেজ্জাক মোল্লা। যিনি নিজেকে চাষার ব্যাটা বলতেই ভালোবাসেন। বাম জমানায় তিনিই বলেছিলেন, হেলে ধরতে পারে না কেউটে ধরতে গিয়েছে। আবার নির্বাচনে পরাজয়ের জন্য নিরুপম সেনকেই নাটের গুরু বলেছিলেন। এহেন রেজ্জাককে ঠেকাতেই এবং প্রতিশোধ নিতে আব্বাসের দলের হাতে ভাঙড় আসনটি তুলে দিতে চাইছে। এমনকী বাম–কংগ্রেস জোটে আইএসএফকে শামিল করার মূল উদ্যোগ যে বামেদের তা এবার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।জানা গিয়েছে, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেডে সমাবেশ রয়েছে বাম–কংগ্রেসের। তার আগে আসন বণ্টন চূড়ান্ত হয়ে গেলে সেই সমাবেশে আব্বাসের উপস্থিতি বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে। সূত্রের খবর, কংগ্রেস হাইকমান্ডের নির্দেশের পরই প্রদীপ ভট্টাচার্যের বাড়ি গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন আবদুল মান্নান। সেখান থেকেই দুই নেতার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। দুই বর্ষীয়ান নেতা অধীরকে ২৮ ফেব্রুয়ারির আগে জোট প্রক্রিয়া শেষ করতে অনুরোধ করেন। তাতে রাজি হয়েছেন অধীর চৌধুরী।