সুশান্ত সিং রাজপুতের ফরেনসিক রিপোর্ট সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছেন এইএমসের চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল। এই হাই প্রোফাইল মামলার রহস্য জট খুলতে অগস্ট মাসে এইএমএসের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের স্মরণাপন্ন হয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অবশেষে জমা পড়েছে রিপোর্ট। সুশান্তের ময়না তদন্তের রিপোর্ট খতিয়ে দেখা এবং নতুন করে ভিসেরা রিপোর্ট তৈরির কাজও করেছে এইএমসের চার সদস্যের এক বিশেষজ্ঞ টিম। টাইমস নাওয়ের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে এইএমস টিমের তৈরি সুশান্তের ভিসেরা রিপোর্টে প্রয়াত তারকার শরীরে কোনও অর্গানিক বিষের নমুনা মেলেনি। তবে সুশান্তের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বিস্তর গাফিলতি রয়েছে তা জানিয়েছেন এইএমসের বিশেষজ্ঞরা। এইএমসের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ টিমের নেতৃত্বে ছিলেন সংস্থার ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডঃ সুধীর গুপ্তা। সোমবার নয়া দিল্লিতে সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দলের সঙ্গে ম্যারাথন বৈঠক হয় এইএমসের ফরেনসিক এক্সপার্টদের।টাইমস নাও নিজেদের সূত্র মারফত জানতে পেরেছে, এইএমসের ফরেনসিক টিম জানিয়েছে ভিসেরাতে কোনওরকম অর্গানিক (জৈব) বিষ মেলেনি। তাই আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার ধারাতেই (৩০৬) সুশান্ত মামলার তদন্তকে এগিয়ে নিয়ে যাবে সিবিআই। তবে সুশান্তের ময়না তদন্ত কী কারণে রাতের অন্ধকারে কম আলোতে করা হয়েছে তা নিয়ে হয়রান এইএমসের টিম। কেন এই রিপোর্টে উল্লেখ নেই সুশান্তের মৃত্যুর সময় তাও পরিষ্কার নয়। ১৪ জুন মুম্বইয়ের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হয় সুশান্তের দেহ। ঘটনার পর ১০৪ দিন অতিক্রান্ত। তবে ‘জাস্টিট ফর সুশান্ত’ আন্দোলন এখনও থামছে না সোশ্যাল মিডিয়ায়। শুরুতেই মুম্বই পুলিশ এই মামলাকে আত্মহত্যা বলে দাবি করেছিল। তবে অনুরাগীদের দাবি এই মৃত্যুর পিছনে রয়েছে অপর কোনও রহস্য। পরে পরিবারের তরফেও সুশান্তের আত্মহত্যার তত্ত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। গত ৪২ দিন ধরে সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দল এই মামলার তদন্ত চালাচ্ছে। সোমবার সিবিআইয়ের তরফে চাপের মুখে পড়ে দ্বিতীয়বার প্রেস বিবৃতি দেওয়া হয়। ৩৮ শব্দের সেই বিবৃতি সিবিআই জানায়- পেশাদার ভাবে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)। এই মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকটি বিষয় খতিয়ে দেখাচ্ছে, এবং কোনওরকম সম্ভাবনাই আমাদের তরফে উড়িয়ে দেওয়া হয়নি আজকের তারিখ পর্যন্ত। তদন্ত জারি রয়েছে….'এই মামলার তদন্ত নিয়ে ডঃ গুপ্তা সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানান- সুশান্ত মামলার কিছু লিগ্যাল বিষয় এখনও খতিয়ে দেখতে তবে একটা লজিক্যাল পরিসমাপ্তিতে পৌঁছানোর জন্য। এই মামলায় এইএমস টিম এবং সিবিআইয়ের ধারণা এখনও পর্যন্ত আলাদা নয়। তিন আশ্বাস দেন- ‘এই রিপোর্ট এক্কেবারে নিশ্চিত হবে’। অর্থাত্ এই রিপোর্ট স্পষ্টতই বলে দেবে এই মামলা সুইসাইড নাকি হোমিসাইড (খুন)।জানা যাচ্ছে শীঘ্রই তদন্তের দ্বিতীয় দফায় ফের দিল্লি থেকে মুম্বই পৌঁছাবে সিবিআইয়ের টিম। এইএমসের তরফে জমা দেওয়া ফরেনসিক রিপোর্টের ভিত্তিতে তদন্তের পরবর্তী পর্যায়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। আপতত বাইকুল্লা জেলে বন্দি এই মামলার মূল অভিযুক্ত রিয়া চক্রবর্তী। সুশান্তের মৃত্যু মামলার সঙ্গে জড়িত মাদককাণ্ডে এনসিবির হাতে গত ৮ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হন রিয়া।