পুরুলিয়ার সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছৌ নাচ। বাংলার সংস্কৃতির শিকড় জড়িয়ে রয়েছে ছৌ নাচের সঙ্গে। জেলার চড়িদা গ্রাম পরিচিত𓃲 ছৌ মুখোশ গ্রাম হিসাবে, আর এই গ্রামের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র ছিলেন নেপালচন্দ্র সূত্রধর। তাঁর বিশ্বাস ছিল পদ্ম-সম্মান তিনি পাবেনই। জীবদ্দশায় সেই সম্মান হাতে না এলেও মৃত্যুর তিন মাসের মধ্যেই কেন্দ্রের তরফে ঘোষিত পদ্মশ্🐼রীপ্রাপকের তালিকায় জ্বলজ্বল করছে তাঁর নাম।
সাধারণতন্ত্র দিবসে মরণোত্তর পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছেন নেপালচন্দ্র সূত্রধর। ছৌ নাচ তথা ছৌ মুখোশ তৈরিতেও তাঁর জুড়ি মেলা ভার। পুরুলিয়ার ছৌ নৃত্যের প্রবাদ এই প্রতীম ওস্তাদকে এইবার পদ্ম-সম্মানে ভূষিত করেছে মোদী সরকার। স্বীকৃতি আসায় খুশি নেপালবাবুর পরিবার, তবে আক্ষেপ একটাই! জীবদ্দশায় এই সম্মান, এই স্বীকৃতি তিনি দেখে যেতে পারলেন না।&nbs𒁏p;
বাবার এই সম্মানে গর্বিত মেয়ে কল্যাণী সূত্রধর। টিভি নাইন বাংলাকে তিনি জানান, বাবা এই সম্মান দেখে যেতে পারলেন না, সেই আক্ষেপ রয়েছে। বাবার ছবি বুকে আগলে বলেন, ‘বাবার এই স্বীকৃতিতে আমার খুব খুশি আজ। বাবা যদি দু’মাস আগে মারা না যেতেন, তাহলে আরও বেশি খুশি লাগত। সেই ছোট থেকে দেখছি, বাবা মܫুখোশের কাজ করে আসছেন। বিদেশেও যেত তাঁর কাজ।’
নিজের গোটা জীবনটাই ছৌ শিল্পকে সঁপে দিয়েছিলেন নেলাপচন্দ্র। তাঁর তৈরি মুখোশ চ🔥োখ ধাঁধিয়ে দিত। প্রায় ৫০ বছর ধরে ছৌ নৃত্যকলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। স্পেন, আমেরিকা, নিউজিল্যান্ড, স্কটল্যান্ডের মতো দেশে গিয়ে ছৌ নৃত্যকে তুলে ধরেছেন। ক্লাস ফোর পর্যন্ত পড়াশোনা, তবে মাত্র ৮ বছর বয়স থেকেই বাবা, জগিন্দর সূত্রধর কাছে মুখোশ বানানোর প্রশিক্ষণ শুরু করেছিলেন তিনি। আর মা সুচিত্রা দেবী ছিলেন ছৌ ওস্তাদ। ছৌ শিল্প তাঁর শিরায়।
নেপালচন্দ্রের হাত ধরে ৪১ বছর পর পুরুলিয়ায় পদ্ম-সম্মান এল। ১৯৮১ সালে এই বাঘমুন্ডির অযোধ্যা পাহাড়তলির চড়িদার গম্ভীর সিং মুড়া এবং ১৯৮৩-তে বরাবাজারের আদাবনা গ্রা🌜মের নেপাল মাহাতো ছৌ শিল্পের জন্যই পদ্মশ্রী সম্মান পেয়েছিলেন।
গত বছর নভেম্বর মাসের প্রথম দিন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শিল্পী। কিছুদিন ধরেই হাঁপানিতে ভুগছিলেন। কিন্তু শেষজীবন পর্যন্ত ছৌ শিল্প অন্ত প্রাণ ছিলেন তিনি। বছর নয়েক আগে নিউজিল্যান্ডে গিয়ে মাত্র ১৮ ঘন্টায় তৈরি করেছিলেন ২৫ ফুটের রাবণ, আজও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিউজিয়াম জুড়ে রয়েছে তাঁর হাতে তৈরি রাম-লক্ষণ-সীতার ২২ ফুটের ♚মূর্তি।