প্রায় কাফকা দিয়ে শুরু, তারপর হোস্টেল ডেজ, নিহারিকা, এক্স=প্রেমের পর এবার অতি উত্তম। প্রতিবারই ভিন্ন ধারার প্রজেক্টে কাজ করে নজর কেড়েছেন তিনি। বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি লম্বা রেসের ঘোড়া। ইতিমধ্যেই সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দুটি ছবি𓄧 পকেটস্থ করেছেন। এখন অতি উত্তমের সাফল্য উপভোগ করার পাশাপাশি আইপিএল নিয়ে বেজায় ব্যস্ত। কার কথা বলছি নিশ্চয় বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না। অতি উত্তম ছবির ‘কৃষ্ণেন্দু’ ওরফে অনিন্দ্য সেনগুপ্তর কথা। সম্প্রতি তাঁর তুমুল ব্যস্ততার মাঝেই মুখোমুখি হয়েছিলেন হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার। দক্ষিণ কলকাতার এক ক্যাফেতে জমেছিল সেই আড্ডা, কী কথা হল? রইল এখাꦚনে...
উত্তম কুমারের সঙ্গে স্ক্রিন ভাগ। না থেকেও ছিলেন তিনি, শ্যুটিংয়ে কোনও অসুবিধা হয়েছিল? অভিজ্ঞতা কেমন?
অনিন্দ্য: অভিনয় করার সময় তো ছিলেন না। পরে যখন প্রোডাক্টটা দেখলাম তখন এক অদ্ভুত অপূর্ব অনুভূতি হয়। এই অনুভূতি বিশ্ব সিনেমায় খুব কম সংখ্যক অভিনেতারই হয়েছে। বিশ্ব সিনেমায় এমন ধরনের সিনেমা নেই বললেই চলে যেখানে প্রযুক্তির সাহায্ꦐযে ছবির অন্যতম মুখ্য চরিত্রকে তৈরি করা হয়েছে। সবটা মিলিয়েই এই প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরেই আনন্দ লেগেছে। তার উপর তিনি আবার আমাদের মহানায়ক। উত্তম কুমার নামটাই কি যথেষ্ট নয়?
ঠিকই! ২০২৪ -এর প্রথম হিট বাংলা ছবি আপনারই। এই অনুভূতিটা যদি বলেন।
অনিন্দ্য: বক্স অফিসের নম্বর দেখলে সত্যি খুশি। তবে অন্য ছবির সঙ্গে তুলনা না, আমার ছবি হিট করলেই আমি খুশি। আমি চাই সবার ছবি চলুক, সার্বিকভাবে বাংলা ছবি হিট করুক তাহলে আমাদেরই সবার কাজের পরিসর বাড়বে। সুযোগ বাড়বে। তবꦇে, এই যে লোকে আমাদের কাজের প্রশংসা করছে, উপভোগ করছে সেটা ভালো লাগছে। আসলে আমাদের পেশাটায় তো ভ্যালিডেশন খুবই জরুরি।
অতি উত্তম ছবিটা করতে রাজি হয়েছিলেন কেন?
অনিন্দ্য: না বলার কোনও কারণ ছিল না। এর আগে খালি ‘প্রায় কাফকা’ করেছিলাম, তারপর যখন সৃজিত মুখোপাধ্যায় ফোন করে বলছেন তুম𒀰ি ছবির হিরো, বাংলা ছবিতে এর থেকে ভালো লঞ্চ প্যাড আর কিছু হতে পারত? তাছাড়া আমি তখনও জানতাম না এই ছবিতে উত্তম কুমার একটা বড় অংশ জুড়ে থাকবেন। অভিনয়ে আসার জন্য আমি আমার কাজ ছেড়ে দিই। ১০ বছর বিভিন্ন কাজ ক𒁏রেছি, টিভি রেডিয়োতে শোয়ের সঞ্চালনা, ইত্যাদি। সেগুলো ছেড়ে অভিনেতা হওয়ার রিস্ক নিয়েছি। আর তাতে প্রথমে চন্দ্রিল ভট্টাচার্য তারপর সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজের সুযোগ পেলাম। তাই কখনই মনে হয়নি যে না বলার অবকাশ আছে।
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে পর পর দুটো কাজ করলেন। অভিজ্ঞতা কেমন?
অনিন্দ্য: পরপর দুটো ছবিতে কাজ করলাম যখন তখন মনে হচ্ছে সৃজিতদার আমায় কোথাও পছন্দ হয়েছে। আমি সেটার জন্য কৃতজ্ঞ। ধন্য। আসলে উনি এতটাই বুদ্ধিমান, শার্প, শিক্ষিত একজন মানুষ যে ওঁর সঙ্গে কাজ করতে ভীষণ ভালো লাগে। সিনেমা-সিরিজ হল টিম গেমের মতো। এখানে সবাই যদি নিজেদের সেরাটা না দেয় খেলা জমে না। অনেক সময় অবশ্য সেরাটা দেওয়ౠার পরও খেলাটা জমে না। তবুও ওঁর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা দুর্দান্ত।
ক্যামেরার সামনে, পিছনে দুই জায়গাতেই কাজের অভিজ্ঞতা আছে। নিজের কোনটা করতে বেশি ভালো লাগে?
অনিন্দ্য: দুটোই ভালো লাগে। নন ফিকশনে টিভি এবং রেডিয়োতে সঞ্চালক ছিলাম। প্রোগ্রাম প্রডিউসার হিসেবে কাজ করেছি। এখন স্পোর্টস ব্রডকাস্টিংয়ে সঞ্চালনা করি। অন্যদিকে ফিকশনে আমার বন্ধু স্থানীয় ধরা যাক অভ্রজিৎ সেনের কথা ওঁরা যখন ছবি বানাচ্ছেন তখন ওঁর 🔯সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে অভিনেতা হিসেবে কাজ করলেও অন্যান্য বিষয়ে ইনভলভ হতে ভালো লাগে। তবে সেখানে অবশ্যই আগে নিজের ১০০ শতাংশ দিয়ে সেরা অভিনয়টা করার চেষ্টা করি। কিন্তু এই দুটোর মধ্যে বাছতে বললে সেটা কঠিন হবে। আসলে সবটাই সুযোগের উপর নির্ভর করে। আমি ক্যামেরার সামনে বা স্টেজ (নাটক) করতে যেমন ভালোবাসি তেমন উল্টোটাও।
স্পোর্টস কমেন্ট্রিতে আসা কীভাবে?
অনিন্দ্য: ফিফা ২০২২ বিশ্বকাপের সময় আমি এখন যে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কাজ করছি তাঁরা💞 যোগাযোগ করেন। সঞ্চালক দেবী সাহার থেকে আমার নম্বর পান ওঁরা, তখন একজন পুরুষ কমেন্ট্রেটর খুঁজছিলেন। তো সেভাবেই আর কী!
নিজের কোন খেলা পছন্দের?
অনিন্দ্য: আমি সব খেলাই ভালোবাসি।𝕴 কিন্তু আমার কাছে ফুটবল মাদকের নেশার মতো। কিন্তু অন্যান্য সমস্ত খেলাই আমি খেলতে বা দেখতে ভালোবাসি।
কোন দলের সমর্থক?
অনিন্দ্য: দেশে ইস্ট বেঙ্গল, বিদেশে আর্সেনাল।
সঞ্চালনা, ইত্যাদি ফেলে হঠাৎ অভিনয় করবেন কেন স্থির করলেন?
অনিন্দ্য: পারফর্ম করতে করতেই এটা মনে হয়েছিল। আমি সঞ্চালনা, রেডিয়োতে কাজ করতে করতেই থিয়েটার করেছিলাম কিছুদিন। কিন্তু নিজেকে নাট্যকর্মী বলব না, কারণ তেমন অভিজ্ঞতা নেই যেটা তথাকথিত নাট্যকর্মীদের আছে। তবে আমার মনে হয়েছিল আমি যে﷽ বাড়িতে আছি সেটা খুব সুন্দর। আমার শোয়ার ঘরটা সুন্দর, আরামদায়ক। কিন্তু তখনই আরও একটা ঘর দেখতে পাই যেটা দেখে মনে হয়েছিল এটা আমার শোয়ার ঘর হতে পারে। আরও সুন্দর হবে ব্যাপ💎ারটা তাহলে। আর যেটা এখন আমার শোয়ার ঘর সেটা বসার ঘর হিসেবে মন্দ হবে না। তাই অভিনয়ে আসার সিদ্ধান্ত এখন তারপর যে সুযোগগুলো পেয়েছি সেগুলোর কৃতিত্ব আমার নয়। কিন্তু সেই সুযোগ যদি কাজে লাগিয়ে থাকতে পারি তাহলে সেটার অল্প কৃতিত্ব আমার।
আগামীতে কী কী কাজ আসছে?
অনিন্দ্য: সুদীপ্ত লাহার ‘কারণ গ্রিস আমাদের দেশ না’ ছবিতে দেখা যাবে। এছাড়া অভ্রজিৎ সেনের সঙ্গে একটি প্রজেক্টে কাজ করেছি, সেটা সিরিজ না সিনেমা হবে জানি না এখনই। এছাড়া অরুণাভ এবং রজতের পরিচাল🌸নায় ‘গিফট’ আসছে। আর যেগুলো নিয়ে কথা চলছে সেগুলো এখনই বলতে পারব না।
সুহত্র, রোহন, বা আপনার যাঁরা সমসাময়িক তাঁদের সঙ্গে কোনও প্রতিযোগিতা চলে?
অনিন্দ্য: দেখুন, আমি বরাবরই সুস্থ প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসী। কিন্তু আমরা তো কেউ কোনও দৌড়ে নামিনি। নম্বর, কমার্স সব জড়িত আছে ঠিকই কিন্তু যদি সবার কাজই চলে,ཧ সবাই যদি তাঁদের সেই কাঙ্খিত নম্বর পেয়ে যান সে ৫ কোটি হোক বা ৩.৫ কোটি সেটাই তো ভালো। আসল জিনিস হল বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থান। আমি যখন দেখি আমার উল্টো দিকে শ্রুতি (দাস) বা সুহত্র (মুখোপাধ্যায়) ভালো অভিনয় করছে, ১০০ শতাংশ দিচ্ছে তখন আমারও মনে হয় এর থেকে ভালো আমায় করতে হবে। আমাকেও এমন ভালো পারফর্ম করতে হবে বা উল্টোটা। আগেই বললাম এটা টিম গেম। সবাইকে সঠিক ভাবে সবার কাজ করতে হবে।
সামনেই লোকসভা নির্বাচন, তাই এখন তো একটা রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন করতেই হবে। কোন দলের সমর্থক?
অনিন্দ্য: কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থক নই। আবার অরাজনৈতিক নই। সমাজে কেউ সেটা হতে পারে না। আমার রাজনীতি আমার জীবন যাপন। আমার যা মতাদর্শ সেটা ভারত কেন বিশ্বের কোনও দলের সঙ্গে মেলে না। অনন্ত ম্যানিফেস্টো অনুযায়ী। তবে যখন ভোট দিই তখন আমার মতাদর্শ অনুযায়ী বিবেচনা করে দেখি যে খাতায় কলমে কে কতটা সেই কাজ পূরণ করতে পারবে। অলীক🍰 কল্পনা করে তো লাভ নেই। তবে আলাদা করে কাউকে সমর্থন করি না।
আরও পড়ুন: বাইকে বসেই সলমনের বাড়িকে তাক করে গুলি বিষ্ণোই গ্যাংয়🐼ের! প্রকাশ্যে সেই হাড়হিম করা সিসিটিভি ফুটেজ
আরও পড়ুন: 📖'কর্মফল...' সর্বজিৎ হত্যাকারীকে গুলি করে খুন, কী প্রতিক্রিয়া দিলেন রণদীপ?
শেষ প্রশ্ন, ছবিতে তো উত্তম কুমার অনুঘটক হয়ে প্রেমে সাহায্য করল। বাস্তবে এমন কেউ সাহায্য করেছে নাকি?
অনিন্দ্য: (হেসে নিয়ে) না না। বর🐠ং𝓰 আমিই অনেকের প্রেমে অনুঘটক হয়ে কাজ করেছি।