দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থতা আর অর্থাভাবে জেরবার একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে সম্মানিত চলচ্চিত্র পরিচালক উৎপলেন্দু চক্রবর্তী। আশির দশকে ‘ময়নাতদন্ত’, ‘চোখ’, ‘দেবশিশু’র মতো চর্চিত ছবি পরিচালনা করেছেন ৭৬ বছর বয়সী এই গুণী ব্যক্তিত্ব। কিন্তু এখন আর সেভাবে খোঁজ রাখে ꦓনা টলিউড।
দিন তিনেক আগে রিজেন্ট পার্কের বাড়িতে খাট থেকে পড়ে যান বর্ষীয়ান পরিচালক। ভেঙেছে কোমরের হাড়, বুকে ও ফুসফুসে রয়েছে সংক্রমণ। আপতত এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। গত দেড় বছর ধরে রাজ্য় সরকারের তরফে দেওয়া ফ্ল্যাটে একাই থাকেন পরিচালক উৎপলেন্দু চক্রবর্ꦦতী। দীর্ঘদিন ধরে তাঁর দেখাশোনার জিম্মা নিজের কাঁধে নিয়েছেন অর্ঘ্য মুখোপাধ্য়ায়। তাঁর উদ্যোগ এবং উৎপলেন্দু বাবুর কিছু শুভানুধ্যায়ীর চেষ্টায় পরিচালককে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। রাজ্য সরকারই তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় ব্যায়ভার বহন করছে।
শরীর শুকিয়ে কাঠ। ঠিকভাবে হাঁটাচলার ক্ষমতাও নেই। তার উপর আচমকা বিপত্তি! অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি জানান, ‘অনেকদিন ধরেই ওঁনার প্রস্টেটের সমস্যা। ক্যাথিডার লাগানো ছিল, বৃহস্পতিবারই সেটি𒅌 খোলা হয়। গত পরশুদিন ফোন মারফত জানান, তিনি পড়ে গিয়েছেন। আমি গিয়ে কোনওরকমে তাঁকে উদ্ধার করি। পাঁজাকোলা করে খাটে শোওয়ানোর পর দেখি যথেষ্ট শ্বাসকষ্ট রয়েছে। দ্রুত জিয়াউল হকের সঙ্গ যোগাযোগ করা করি। দীর্ঘদিন ওঁনার চিকিৎসা করছেন ডঃ দীপ্তেন্দ্র সরকার, তাঁকেও জানানো হয়। জিয়াউল হক (ডেপুটি সুপার, এসএসকেএম) দ্রুত ওঁনাকে ভর্তির ব্যবস্থা করেন।’&nbs♊p;
ডিজিট্যাল এক্স রে ও একাধিক পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর জানা গিয়েছে, প্রবীণ পরিচালক ফিমার বোনে চিড় রয়েছে। আগামিকাল (বুধবার) অর্থোপেডিক সার্জেনদে একটি দল তাঁকে দেখতে আসবে। তবে অস্ত্রোপাচার ছাড়া গতি নেই, স্পষ্ট জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু কবে অপারেশন হবে, সে✅ই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বুধবার।
পরিবারকে কী পরিচালকের অসুস্থতার খবর জানানো হয়েছে? অর্ঘ্যবাবু স্পষ্ট বলেন, ‘না কেউ তো খোঁজ রাখে না। পরিবারকে কিছু জানানো হয়নি। তবে ওঁনার বৌদি নীলাঞ্জনা চক্রবর্তীকে আমরা জানিয়েছি। ঋতাভরী বা চিত্রাঙ্গদা কিংবা শতরূপা স্যানালকে জানানোর প্রশ্ন আসে না, বা আমার কাছে তাঁদের নম্বরও নেই। আমার মনে না উৎপলেন্দু বাবু ওঁদের জানাতে🦩 চায়। গতবার অসুস্থতার খবর নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছিল। উনি আমাকে ছেলে বলে মানেন। আমাকে বহুবার বলেছেন, আমি ওটা ভুলে যেতে চাই। পিতৃত্ব তো ভোলা যায় না। তবে উনি ওই ট্রমায় আর ফিরতে চান না’।
জ্ঞ🌜ান রয়েছে, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে পুরোনো দিনের স্মৃতি হাতড়াচ্ছেন উৎপলেন্দু চক্রবর্তী। বছর ৬ আগে পরিচালকের অসুস্থতা ও অর্থাভাবের খবর সংবাদমাধ্যমে শিরোনামে উঠে এলে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন তাঁর দুই কন্যা ঋতাভরী চক্রবর্তী ও চিত্রাঙ্গদা শতরূপা। ঋতাভরী স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, উৎপলেন্দু চক্রবর্তী কেবল তাঁর বায়োলজিক্যাল বাবা। দীর্ঘদিন উনি শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার করেছেন শতরূপা সান্যালের উপর। সেই 👍কারণেই ২০০০ সালে বিচ্ছেদ হয় তাঁদের। মায়ের যন্ত্রণার কথা ভুলে উৎপলেন্দু চক্রবর্তীকে তিনি কোনওদিন বাবা বলে কাছে টানতে পারবেন না।