৪ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয়বারের জন্য রাত দখল চলে কলকাতার বুকে। আর সেদিন শ্যামবাজারে সহনাগরিকদের সঙ্গে আরজি করের নির্যাতিতা🍒র বিচার চাইতে হাজির হন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। আর তখনই তাঁকে উদ্দেশ্য করে গো ব্য▨াক স্লোগান ওঠে। কিন্তু ঠিক কী ঘটেছিল সেই সময়? কেনই বা হল এমনটা? সেটাই এবার প্রকাশ্যে আনলেন এক প্রত্যক্ষদর্শী।
কী জানা গেল?
এক প্রত্যক্ষদর্শী যিনি সেদিন শ্যামবাজারের রাত দখল কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন তিনি তাঁর কলমে সবটা তুলে ধরেন। জানান ঠিক কেন জনতা ক্ষেপে যায় ঋতুপর্ণার উপর। তাঁর কথায়, 'রাত তখন ১২ টার মতো বাজে। শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে শান্তিপূর্ণভাবে রাত দখল চলছে। অজস্র সাধারণ মানুষের ভিড়ে রয়েছেন🐷 বেশ কিছু রুপোলি পর্দার মানুষ। তাঁরা কেউ কোনও অসাধারণত্ব দাবি করেননি। রয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যম। এমন সময়ে শ্যামবাজারে পৌঁছন ঋতুপর্ণা 𝓀সেনগুপ্ত। না, তাঁকে কেউ আমন্ত্রণ জানায়নি। তাঁর মনে হয়েছে আসবেন, এসেছিলেন। সম্প্রতি শঙ্খ বাজানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় যথেষ্ট ট্রোলিংয়ের শিকার হয়েছেন। সেই সব থেকে বের হয়েই এসেছিলেন, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে, একজন নারী হিসেবে। শ্যামবাজারেই আসতে চেয়েছিলেন। এই ধরণের জমায়েতে পুলিশের পক্ষে আলাদা করে কাউকে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব না মাথায় রেখেই এসেছিলেন। কোনও নিরাপত্তা চাননিও। ওখানে উপস্থিত আমরা কয়েকজন নিজেরাই ওঁকে একটু ধাক্কাধাক্কি থেকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। আবার বলছি, তাঁর অনুরোধে নয়। নিজেরাই। এর পরের ঘটনাক্রম কিন্তু 'সাধারণ' নয়।'
তিনি আরও লেখেন, 'একটা জায়গায় মোমবাতি জ্বালানোর পরে একটু এগিয়ে ঋতুপর্ণা আরেকটি জায়গায় মোমবাতি জ্বালাতে গেলেন। হঠাৎ করেই এক দল মানুষ অধৈর্য হয়ে 'গো-ব্যাক' স্লোগান দিতে শুরু করলেন। শুরুতে ইতস্তত করেও স্লোগানের তীব্রতা বাড়তে দেখে সেখান থেকে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন ঋতুপর্ণা। ব্যাপারটা যদি এই পর্যন্ত হয়ে থেমে যেত, তাহলে কিচ্ছু বলার ছিল না। এই লেখার প্রয়োজনই হত না। কিন্তু, তার পরে কী ঘটল! গো-ব্যাক স্লোগান দিতে দিতে উত্তেজিত জনতা শ্রেণি যারা নাকি 'সুশীল নাগরিক সমাজ'-এর অংশ, তারা ঋতুপর্ণাকে শারীরিকভাবে নিগ্রহের চেষ্টা করতে থাকেন এবং মারমুখী হয়ে ওঠেন। ঘটনার আকস্মিকতায় ওইখানে উপস্থিত আমরᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚ𒀱ᩚᩚᩚা সবাই বেশ হকচকিয়ে যাই। ⛄উত্তেজিত জনতা স্লোগান দেওয়ার পরেও প্রথম যেখানে মোমবাতি জ্বালিয়েছিলেন সেইখানে এসে মাটিতে বসেন ঋতুদি।'
এমনকি ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে গাড়িতে তুলে দিতে গেলেও বাধার সামনে পড়েন তাঁরা। সেই ক🔯থা জানিয়ে তিনি লেখেন, 'ঋতুদি বসে থাকাকালীন হঠাৎ আমাকে আর রাকেশকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় বেশ কয়েকজন। আমি প্রায় হুমড়ি খেয়ে পড়ি ওঁর ঘাড়ের কাছে গিয়ে। আমি যখন উঠতে যাই, মারমুখী জনতার মধ্যে থেকে দু-তিনজন কনুই দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে বেশ কয়েকবার জোরে আঘাত করে আমার ডান দিকের চোয়ালে, যেটা এখনও রীতিমতো ফুলে আছে। রাতাশ্রী চোট পায়। স্থানীয় একজনের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক সুশ্রুষা করতে হয়। সে এখনও ট্রমায়। রাকেশের পা মাড়িয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রাখার চেষ্টা করা হয়, ফলশ্রুতি তার যথেষ্ট শক্ত জুতোর একটা অংশ ছিঁড়ে বেরিয়ে যায়। কয়েকজন ইচ্ছাকৃতভাবে জলের বোতল দিয়ে বারবার সজোরে আঘাত করতে থাকেন আমার মাথার পেছনে। একজন রীতিমত পিছন থেকে টিপে ধরেন গলাও। রাহুল, ঋষভ, রাকেশ আর আমার আমি পিঠে কত যে কিল, ঘুসি পড়েছে তার ইয়ত্তা নেই। উদ্দেশ্য ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে আঘাত করা! এরপরে কোনও রকমে ঋতুপর্ণাকে নিয়ে গিয়ে বসানো হল গাড়িতে। এবার সেই জনতার একাংশ চড়াও হল গাড়ি ভাঙচুর করার উদ্দেশ্য নিয়ে। গাড়ির কাচে অনবরত আঘাত চলতে থাকে। কয়েকজন মহিলা এসে নিজেদের ব্যাগ এবং বিভিন্ন জিনিস দিয়ে গাড়ির কাচে আঘাত করতে থাকেন। গাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়েও ঋতুপর্ণা তাদের বোঝাবার ব্যর্থ চেষ্টা করছেন যে তিনি সবার সঙ্গে একসাথে বিচারের দাবি জানাতে এসেছেন। কে শোনে কার কথা! স্লোগান এবং অসভ্যতা চলতে থাকল।'