‘তা সে যতই কালো হোক, দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।’ কালো মেয়ের রূপে🎀র জাদু কি আপনার চোখ টানে? আমাদের দেশে শ্যামবর্ণা মেয়ে মানেই সে কুৎসিত, তাঁর মধ্যে খুঁত রয়েছে। কালো মেয়ের রূপে মুগ্ধ ভগবান শিব। অথচ গায়ের রং ফর্সা না হলে সমাজের ঠিক করে দেওয়া সৌন্দর্যের মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হয় না নারীরা। ২০২২ সালে দাঁড়িয়েও এটাই ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থার কঠোর বাস্তব ছবি। বাড়ির বউ হোক আর রুপোলি পর্দার নায়িকা- ফর্সা মেয়েদের কদর সবর্ত্র বেশি। বিবাহ সম্পর্কিত কাগজের বিজ্ঞাপন হোক কিংবা ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইট, ‘ফর্সা এবং সুন্দরী’ কথাটি চোখে পড়বেই। সেইজন্যই তো আমাদের দেশে ফেয়ারনেস ক্রিমের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। অথচ কালীপুজোর দিন চরম ভক্তিভরে মা কালীর আরাধনায় মেতে ওঠে সকলে। অথচ মা কালী মানেই বাঁধনছাড়া, সমাজের তথাকথিত নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ ‘লক্ষ্মী’ নন। আর তাঁর গায়ের রং কালো। এই বিপরীতধর্মিতাই উঠে এসেছে স্বস্তিকার সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে। নারীদের ফেয়ারনেস ক্রিমের দরকার নেই, এমন ঝাঁঝালো বার্তাই দিতে চাইলেন অভিনেত্রী।
স্বস্তিকা মানেই সোজাসাপটা। স্পষ্ট কথা বলতে ভয় পান না অভিনেত্রী। এর জন্য বিতর্কেও জড়ান, কিন্তু সেই নিয়ে চিন্তিন নন তিনি। সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়ালে স্বস্তিকা শেয়ার করে নেন একটি পোস্ট। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মা কালীর পায়ের নীচে দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে ফেয়ারনেস ক্রিমের একটি টিউব। ক্যাপশনে অভিনেত্রী লেখেন-‘আমার শꦚ্রদ্ধা আর ভালবাসা। কালোকে সঙ্গে নিয়েই কালী পুজোর শুভেচ্ছা জানালাম।’
এই ভাবনা ‘UltiMad Media’ নামের একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার। শুধু স্বস্তিক🍒াই নন, এই পোস্ট শেয়ার করেছেন অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তীও। তাঁর কথায় 🌌এটি, ‘ফেসবুক ভান্ডারে তব বিবিধ রতন’। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ‘আল্টি ম্যাড মিডিয়া’র এই সৃষ্টি। সকলেই বলছেন, এটি দীপাবলির যথাযথ ছবি।
মা কালী শক্তির প্রতীক। মা কালী ফর্সা নন। অথচ তাঁর সেই গায়ের রং তাঁকে দমিয়ে দেয়নি, পিছিয়ে দেয়নি। এখনও পুরোপুরি না বদলাতেও একটু হলেও পালটেছে সমাজের দৃষ্টিকোণ। বছর কয়েক আগে সৌন্দর্য্যের ধারণায় ‘ফেয়ারনেস’ শব্দকে জড়িয়ে না রাখতে একটি নামী ব্র্যান্ড ‘ফ🍬েয়ার’ শব্দটি মুছে ফেলেছিল তাঁদের ক্রিম থেকে। ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপন নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়, সাই পল্লবী-সহ বহু অভিনেত্রী ফেয়ারনেস ক্রিমের কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপনের প্রস্তাব ফিরিয়েছেন। কারণ গায়ের রঙের সঙ্গে শ্রেষ্ঠত্বের কোনও সম্পর্ক নেই। এই ধারণাতেই বিশ্বাসী স্বস্তিকাও।