আবারও মৃত্যুশোক ঘিরে ধরল বলিউডকে! ২০২০ সালে বিনোদন জগতে মৃত্যুমিছিল যেন কিছুতেই থামছে না। চলে গেলে বর্ষীয়ান অভিনেতা বিশ্ব মোহন বদোলা। কয়েক দশক বিস্তৃত এই প্রবীণ শিল্পীর অভিনয় জীবন, রঙ্গমঞ্চ থেকে শুরু করে টেলিভিশন ও বলিউড- সব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে নিজের অভিনয় প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটিয়েছেন তিনি। স্বদেশ,যোধা-আকবর, লগে রহো মুন্নাভাইয়ের মতো ছবিতে তাঁর অভিনয় আজও গেঁথে রয়েছে হিন্দি সিনেমাপ্রেমীদের মনে। শেষবার বিশ্ব মোহন বদোলাকে পর্দায় দেখা গিয়েছে তাবু অভিনীত মিসিং ছবিতে। জলি এএএলবি ২ এবং জলপরি : দ্য ডেসার্ট মারমেড ছবিতে তাঁর অভিনয় বিশেষ প্রশংসিত হয়। বার্ধক্যজনিত সমস্যায় বেশ কিছুদিন ধরেই ভুগছিলেন বিশ্ব মোহনবাবু। জানা গিয়েছে সোমবার গভীর রাতে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। ইনস্টাগ্রামে বাবাকে স্মরণ করে একটি আবেগঘন বার্তা লেখেন তাঁর পুত্র বরুণ বদোলা। বরুণ নিজও টেলিভিশন দুনিয়ার নামী অভিনেতা। বরুণ লেখেন-' আমার বাবা কোনওদিনও আমাকে ধরে বসিয়ে বা জোর করে কিছু শেখাননি। শিক্ষাটা জীবনের একটা অংশ এটা উনি উপলব্ধি করতে শিখিয়েছিলেন। উনি নিজে এমন উদাহরণ তুলে ধরতেন যে আমি না চাইলেও সেটা অনুসরণ করতে বাধ্য হতাম। যদি তোমরা মনে কর আমি ভালো অভিনেতা তাহলে ওঁনাকে দোষারোপ করো, যদি ভাবেন আমি ওঁনার গায়েকির ১/১০ ভাগও আমি পেতাম… তাহলে ভালো গায়ক হতে পারতাম'। নিজের ছায়া থেকে বেরিয়ে স্বকীয়তা তৈরি করতে সময়সময় বরুণকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন তাঁর প্রয়াত বাবা, জানান তিনি। লেখেন- ‘আমি দিল্লি ছেড়ে চলে আসি কারণ ওই শহরে ওঁনার নামকে ছাপিয়ে যাওয়া কঠিন কাজ ছিল। আমি অভিযোগ করতাম মানুষজন অকারণে আমাকে বিচার করে (তুলনা করে). অথবা আমাকে সাহায্য করে কারণ আমি বিশ্ব মোহন বদলোর পুত্র। এ কথা শুনে বাবা আমাকে সঙ্গে সঙ্গে বলেছিল- যাও নিজের পরিচয় খুঁজে নাও। নিজের পছন্দের জায়গা, চেনা ছক থেকে বেরিয়ে নতুন কিছু করতে উনি সবসময় অনুপ্রাণিত করেছেন’। বরুণের কথায় তাঁর বাবা একজন কিংবদন্তি শিল্পী। এবং তাঁর উত্তরাধিকার নানান মাধ্যমে রয়ে যাবে আগামী কয়েক শতক। বরুণ আরও জানান অল ইন্ডিয়া রেডিওর হয়ে প্রায় ৪০০-র বেশি নাটকে কাজ করেছেন বিশ্ব মোহন বদোলা। পেশায় একজন সাংবাদিক ছিলেন তিনি। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া নিজে ছিল তাঁর বিস্তর পড়াশোনা। দু-বার বিশ্ব ভ্রমণ পর্য়ন্ত করেছেন তিনি। বাবার মৃত্যুতে শোকের সাগরে ডুব দিয়েছেন বরুণ, তবে একসঙ্গে বাবাকে নিয়ে গর্বিত তিনি।