নমস্কার, আমি সুপর্ণা (নাম পরিবর্তিত)। বয়স ২৯। একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরতা। বাড়ি কলকাতাতেই। এবার আসি যে কারণে এই চিঠি। আমার সঙ্গে একজনের আলাপ হয়েছিল ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট থেকে। অল্প দিনের আলাপেই ভীষণ ভালো বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল আমাদের। আস❀লে দুজনের ভাবাদর্শ, পছন্দ, অপছন্দ বেশ মিলেছিল। সেই কারণেই হয়তো দ্রুত একে অন্যকে ভালো লেগে যায়। মানে অন্তত আমার তরফে ভালো লাগাটা এসেছিল। আমরা প্রায় মাস তিনেক কথা বলি। দু-তিনবার দেখাও করি। একটা অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করত। মনে হতো যাক আমারও নিজের একটা মানুষ হল তবে। যার সঙ্গে সবটা বলা যায়, ভাগ করা যায়। কিন্তু মোহ ভাঙে কিছুদিনেই। সে আমায় জানায় আমায় নাকি সে বিয়ে করতে পারবে না। তার প্রাক্তন তার কাছে ফিরে এসেছে। যেহেতু মনে মনে ভালো লাগলেও কোনও দিন মুখে বলিনি বা সেই জোরের জায়গা ছিল না তাই কিছু বলিনি। কেবল কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। আমি মিস করতাম যদিও।
এরপর প্রায় বছর খানেক কাটে। আমার এক বন্ধুর বিয়ে ছিল।✨ এসে হোয়াটসঅ্যাপে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। অনাহুতের মতো আচমকাই আবার ওর থেকে একটা মেসেজ আসে। প্রথম উত্তর না দিলেও পরে মনে কাছে হেরে গিয়ে উত্তর দিই। আবার কথা শুরু হয়। সে ꧋জানায় আগেরবার আমায় মিথ্যে বলেছিল আসলে এখন সে বিয়ে করতে প্রস্তুত নয়। কেবল মায়ের কথায় ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। যাই হোক, আমাদের আবার কথা হতে থাকে। না, আর দেখা করিনি। কিন্তু কথা হয়।
আজ আমাদের বন্ধুত্ব বলুন, সম্পর্ক বলুন, বা পরিচিতি যাই বলুন না কেন তার আড়াই বছর পূর্ণ হল। বাড়ি থেকে চাইছে এবার যাতে বিয়েটা করি (বাড়ির কেউ জানে না যে ওর সঙ্গে এখনও কথা হয়)। কিন্তু আমি না অন্য সম্পর্কে ঠিক মন দিতে পারছি না। আবার এও জানি সেই ছেলেটির সঙ্গেও আমার ভবিষৎ নেই। ইতিমধ্🐓যেই সে আমায় জানিয়েছে বিয়ে ইনস্টিটিউশনে সে বিশ্বাস করে না। আমি চাইলে সে লিভ ইন করতে রাজি। আমার মনে হয় সে আমার প্রতি দুর্বল কিন্তু, মুখে সেভাবে কিছু বলে না। আমার এখন কী করা উচিত? বাড়ির কথা মতো বিয়ে করে নেব? নাকি লিভ ইন করব ওর সঙ্গে?
বিশেষজ্ঞের কী মত এই বিষয়ে?
সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ, পূর্ব🦂াশা মুখোপাধ্যায় এই�� প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। তাঁর কথায়:
দেখুন, প্রথম কথা কে কী ভাবছে আপনাকে নিয়ে সেটা ধরে নিতে যাবেন না। তিনি আদৌ আপনার উপর দুর্বল না কꦐেবল আপনাকে পেতে চাইছে সেটা আগে জানুন। খোলাখুলি আলোচনা করুন তাঁর সঙ্গে। স্পষ্ট ভাবেই জবাব চান যে তিনি আপনাকে নিয়ে কী ভাবেন, বা আপনি তাঁর কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ? যদি উত্তর দেন তো ভালো। আর যদি যথাযথ উত্তর না দেন, বা কথা কাটিয়ে দেন তাহলে বুঝবেন এটা কিন্তু একটা রেড ফ্ল্যাগ। সতর্ক হন।
দ্বিতীয়ত, আপনি খোঁজ নিয়েছিলেন যে কেন উনি মাঝে সরে গিয়েছিলেন? প্রথমে যে কারণটা বলেছিলেন সেটা সত্য না পরেরটা জানার চেষ্টা 𝐆করেছিলেন? যদি না করে থাকেন করুন। মনে রাখবেন আমাদের চারপাশে অনেক ধরনের মানুষ থাকে সবাইকে অন্ধ ভাবে বিশ্বাস করা উচিত নয়। বিশেষ করে যে মানুষটির সঙ্গে আপনার অনলাইনে আলাপ।
তৃতীয়ত, এবং সব শেষে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে আসি যে কী করবেন আপনি। আপনি আগে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন আপনি কি লিভ ইনের জন্য প্রস্তুত? আজকাল অনেকেই এই সম্পর্কে থাকেন, সেটা ভুল বা খারাপඣ একদমই নয়। কিন্তু সঠিক মানুষের সঙ্গে থাকা জরুরি। এবং নিজে কী চাইছেন সেটাও জানা এবং বোঝা জরুরি। আপনি যদি লিভ ইনে থাকতে মন থেকে রাজি না হন ওঁর চাওয়া অনুযায়ী যাবেন না। দ্বিতীয় যদি রাজি থাকেন তাহলে তার আগে উপরের উত্তরগুলো পাওয়ার চেষ্টা করুন তারপর সিদ্ধান্ত নিন।
এবার রইল বাকি অন্যত্র বিয়ে। উপরের উত্তরগুলো সঠিকভাবে না পেলে নিজে ঠাণ্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিন কী করা উচিত, আপনার জন্য কোনটা ঠিক। যদি মনে করবেন বাবা মায়ের দেখা অন্য কাউকে বিয়ে করবেন করুন। কিন্তু সেক্ষেত্রে আগে নিজেকে একটু সময় দিন। একটা সম্পর্ক থেকে বেরিয়েই অন্য সম্পর্কে যাবেন না। অন্তত কিছু মাস নিজেকে সময় দি🐓ন। তারপর নতুন আলাপ সারুন, তাঁকে চিনে বুঝে এগোন।