এয়ার ইন্ডিয়া আর কয়েকদিন পর থেকেই নতুন রূপে ধরা দিতে চলেছে। ভারতের অন্যতম নামী অসামরিক বিমান পরিষেবা সংস্থা ইতিমধ্যেই টাটা গোষ্ঠীর মালিকানা ফের ফিরে পেয়েছে। তবে মালিকানা বদল হলেও, খুব একটা স্বস্তিতে নেই এয়ার ইন্ডিয়ার কিছু পাইলট। এয়ার ইন্ডিয়ার এক সূত্রের দাবি, বহু পাইলট বিদেশী বিমান পরিষেবা সংস্থার দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছেন। মালিকানা বদল হলে, চাকরি থাকবে কি না, সেই উদ্বেগের বশেই এমন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলটদের মধ্যে।যে সমস্ত পাইলটরা বড়সড় এয়ারবাস (বোয়েইং ৭৮৭ ও ৭৭৭)কে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন এতদিন এয়ার ইন্ডিয়ার হয়ে, তাঁদের অনেকেই এবার বিদেশী বিমান পরিবহন সংস্থা কাতার এয়ারওয়েজের চাকরির আবেদন করেছেন। উপসাগরীয় দেশগুলির মধ্যে 'এমিরেটস এয়ারলাইন্স' সবচেয়ে বেশি কর্মী নিয়োগ করে থাকে বলে এর সুনাম রয়েছে। এরপরই রয়েছে 'কাতার এয়ারওয়েজ'। তারপরই আসে 'সৌদি অ্যান্ড এতিহাদ'। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই কাতার এয়ারওয়েজ ২,২০০ জন পাইলটকে চাকরি দিয়েছে। সৌদি ও এতিহাদ কর্মী নিয়োগ করেছে, ১,৪০০ জন। সুনাম রয়েছে 'ফ্লাই দুবাই' ও 'এয়ার আরবিয়া'র । আর এই সংস্থাগুলিতে এয়ার ইন্ডিয়ার বহু পাইলট আবেদন করেছেন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, সরকারের কাছ থেকে ইতিমধ্যেই এয়ার ইন্ডিয়াকে কিনে নিয়েছে টাটা গোষ্ঠী। চুক্তি অনুযায়ী, সংস্থার কর্মীদের অন্তত এক বছরের জন্য কাজে বহাল রাখতে হবে টাটা গোষ্ঠীকে। তবে তাঁদের চাকরি থাকবে কি না তা নিয়ে খুব একটা ওয়াকিবহাল নন এয়ার ইন্ডিয়ার বহু পাইলট। আর সেই অনিশ্চয়তার জায়গা থেকেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন তাঁরা।এই এয়ারলাইন্সে ৮২ জন পাইলট রয়েছেন যাঁদের বয়স ৫৬ বছরের বেশি। ২১৫ জন এমন পাইলট রয়েছেন , যাঁদের বয়স ৫০ বছরের বেশি। এই সমস্ত পাইলটদের বক্তব্য, 'কোন শর্ত বা নিয়ম নতুন মালিক আমাদের ওপর আরোপিত করবে, তা আমরা বুঝতে পারছিনা।' তাঁরা জানাচ্ছেন, এখনও বকেয়া এরিয়ার নিয়ে তাঁরা চিন্তিত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাইলট জানিয়েছেন,'আমরা বকেয়া টাকা পাব কি না, তা নিয়ে রয়েছে দুশ্চিন্তা।' উল্লেখ্য, কোভিডের প্রকোপে বহু দেশের বিমান পরিষেবায় ধাক্কা লাগে। সেই ছবি ধরা পড়ে উপসাগরীয় দেশগুলির অসামরিক বিমান পরিষেবাতেও। কোভিডের জেরে কাতার এয়ারওয়েজ তার এক তৃতীয়াংশ কর্মীকে ছাঁটাই করে। যদিও পরিস্থিতি খানিকটা ঠিক হলে, ফের তাঁরা বহু পাইলটকে কাজে ফিরিয়ে নেয়। এই ঘটনায় সংস্থার ওপর অনেকেরই আস্থা বেড়েছে কর্মীদের। ফলে এই সংস্থায় বাড়ছে চাকরির আবেদনও। আর সেই জায়গা থেকে বহু এয়ার ইন্ডিয়া পাইলট কাতার এয়ার ওয়েজের দিকে ঝুঁকছেন বলে দেখা যাচ্ছে।