রণবীর ভট্টাচার্য
আরজি কর কান্ডের প্রতিবাদে এবার সামিল হল সুদূর ব্র্যাডম্যানের দেশ অস্ট্রেলিয়াও! #ReclaimTheNight যা শুরু হয়েছিল ১৪ অগস্টের রাতে, তা আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহাদেশে। সকলেরই এক দাবি, 'বিচার চাই'। মেলবোর্ন শহরের ফেডারেশন স্কোয়ারে আজ বড় জমায়েত হয়েছিল। শুধুমাত্র বাঙালি বা ভারতের বিভিন্ন প্রꦅদেশের মানুষ নন, তার সাথে যোগদান করেছিলেন সাধারণ অস্ট্রেলিয়ান মানুষও। কাঁটাতার, ভাষা আর সমস্ত বিভেদ পেরিয়ে সোচ্চার হলেন আরজি করের নারকীয় ঘটনার বিরুদ্ধে যেখানে সম্ভাবনাময়ী তরুণী চিকিৎসক ধর্ষিতা ও খুন হয়েছেন এবং স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে বারংবার বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে তদন্তের ক্ষেত্রে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বর্তমানে সিবিআই এই কেসের তদন্ত করছে। সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই কেস শুনবে জানিয়েছে।
এই শান্তিপূর্ণ জমায়েতের প্রধান তিন আয়োজক ছিলেন তিলোত্তমা গুহ, ঋজুতা দে এবং স্বস্তিকা গাঙ্গুলি। তারা একে একে প𒁃ুরো পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং তারপর উপস্থিত সকলে নিজেদের ক্ষোভের দিকটি তুলে ধরেন। সকলে সমব🦋েত হয়ে গান করেন এবং আরজি করের নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের আত্মার শান্তি কামনা করেন।
তিলোত্তমা গুহ, এই অনুষ্ঠানের অন্যতম কান্ডারী অকপটে বলেন," আমার জন্ম কলকাতায়। বারো বছর আগে চাকরির খাতিরে আমি অস্ট্রেলিয়া এসেছি। বর্তমানে বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে একটি বহুজাতিক সংস্থায় রয়েছি। আমি ধীরে ধীরে অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতির সাথে মানিয়ে নিয়েছি। এখানে দেখেছি স্কুলগুলোতে একদম তৃণমূল স্তর থেকেই বাচ্চাদে🥀র শেখানো হয় কি উচিৎ, কি অনুচিত। গুড টাচ আর ব্যাড টাচের ফারাক বোঝানো হয়। বলতে দ্বিধা নেই যে অস্ট্রেলিয়ায় আমি অনেক নিরাপদ বোধ করি। আমাদের এই প্রয়াস শুধু একদিনের বা দুই ঘণ্টার মধ্যে সীমাবদ্ধ এমন নয়। এটি একটি নিরন্তর প্রক্রিয়া। নারী পুরুষের সমানাধিকার চাই, সমান রোজগার চাই, সুরক্ষা চাই, সার্বিক নিরাপত্তা চাই। আমরা চাই রাষ্ট্র এগিয়ে আসুꦑক আর মানুষের মধ্যে গণচেতনা তৈরি হোক এই নিয়ে।"
ঋজুতা দে, অন্যতম আয়োজক এবং বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাংকিং সেক্টরে কর্মরত বলেন, ‘আরজি কর হাসপাতালে যা হয়েছে তা কোনও ভাবে মেনে নেওয়া যায় না। মহিলাদের নিরাপত্তা সবার আগে সুরক্ষিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রের মধ্যেও। আমাদের এই জমায়েত এই ভয়ানক ঘটনার বিরুদ্ধে। অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি রাখছি ไআমরা।’
এই জমায়েতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত স্বস্তিকা গাঙ্গুলি বলেন, ‘আমি মনে করি ধর্ষণ সন্ত্রাসের মতোই। কোন সন্ত্রাসবাদী আক্রম♓ণ যতটা ভয়ংকর, কোন ধর্ষণ তার চেয়ে কম নয়, বরং আরো বেশি ভয়াবহ। যখন নির্ভয়া কান্ড হয়েছিল, তখন দেশ বিদেশ জুড়ে প্রতিবাদ হয়েছিল, মানুষ সোচ্চার হয়েছিলেন। কিন্তু তারপর যেই কি সেই! তারপর মনিপুর, হাতরাস, হায়দরাবাদের জুবিলি হিলসের ঘটনা... সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী শিকার হয়েছে ভয়াবহ ধর্ষণ বা সন্ত্রাসের। আমরা চাই এর একটা শেষ হোক। এরকম𒊎 চলতে দেওয়া যাবে না কোন ভাবেই।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী শৌভিক লাল চক্রবর্তী যিনি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে কর্মরত, এই অনুষ্ঠানে যোগদান করেছিলেন, জানান😼, ‘আমরা বিচার চাই নিরপরাধ, নিষ্পাপ মেয়েটির জন্য। আমরা চাই শিক্ষাব্যবসꦑ্থার আমূল পরিবর্তন হোক, যেখানে মূল্যবোধের শিক্ষা থাকে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় এর অভাব সত্যিই প্রকট।’
এই জমায়েতে💦র শেষ হয় মো꧒মবাতি মিছিলের মাধ্যমে। জমায়েত থেকেই ভারতীয়, অস্ট্রেলিয়ান নির্বিশেষে ডাক ওঠে দ্রুত বিচারের, কোন ভাবেই অপরাধীরা যেন ছাড়া না পায়!